দুই নিরাপত্তা কর্মী নিজেদের সংসারের অভাব ঘোচাতে চীনা নাগরিক গাঁওকে বাসায় ঢুকে হত্যা করেন । পানি খেতে চাওয়ার ছলে বাসায় ঢুকে তারা গাঁওকে হত্যা করেন। এরপর বাসায় থাকা নগদ সাড়ে তিন লাখ টাকা ও দামি জিনিস লুট করে নিয়ে যায় দুজন।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুই নিরাপত্তাকর্মী রউফ ও এনামুলকে গ্রেপ্তারের পর তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এসব তথ্য জানান।

বুধবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) আব্দুল বাতেন।

গত ১০ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানীর ২৩ নম্বর সড়কের ৮২ নম্বর বাসায় চীনা নাগরিক গাঁওকে হত্যা করে দুই নিরাপত্তাকর্মী। এরপর সেদিন রাতেই গাঁওয়ের মরদেহ বাসার পেছনে মাটি চাপা দিয়ে রাখা হয়।

বিষয়টি জানাজানি হলে পরদিন পুলিশ মাটিচাপা দেওয়া অবস্থায় গাঁওয়ের মরদেহ উদ্ধার করে। গাঁওয়ে বাংলাদেশে পদ্মা সেতুতে পাথর সাপ্লাই এবং কাপড়ের ব্যবসা করতেন। এরপর পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুই নিরাপত্তা কর্মী রউফ ও এনামুলকে গ্রেপ্তার করে।

ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল বাতেন। বলন, ‘ওই বাসার দুই সিকিউরিটি গার্ড নিজের অভাব দৈন্যদশা কাটাতে বিভিন্ন পরিকল্পনা করত। একদিন দুজন সিদ্ধান্ত নেন চীনা নাগরিক গাঁও অনেক বড় ব্যবসায়ী। বাসায় কেউ থাকেও না। তাকে হত্যা করতে পারলে দুজন দ্রুতই ধনী হতে পারবেন। এই পরিকল্পনা থেকে ঘটনার দিন সন্ধ্যায় দুজন গাঁওয়ের বাসায় কলিংবেল দেন। গাঁওয়ের বাসার দরজা খুললে তারা পানি খেতে চান।’

‘গাঁওয়ের রুমে ভেতরে প্রবেশ করতেই তাদের একজন গামছা গলায় পেঁচিয়ে ধরেন, আরেকজন জাপটে ধরেন। এক পর্যায়ে গাঁওয়ের গলা দিয়ে রক্ত বের হলে তারা দুজন মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হন। পরে বাসায় থাকা নগদ সাড়ে তিন লাখ টাকা, মোবাইল, ল্যাপটপ নিয়ে ছাদে চলে যান। দুজন টাকা ভাগাভাগি করে আলাদা হয়ে যান।’

বাতেন আরও জানান, ‘রাত সাড়ে এগারোটার দিকে সিকিউরিটি গার্ড রউফ ডিউটি করতে ওই বাসায় আসেন। পরে গাঁওয়ের ফ্লাটে প্রবেশ করে মরদেহ নিয়ে লিফটে নামেন এবং বাসার পেছনে পরিত্যক্ত জায়গায় কাটের টুকরো দিয়ে গর্ত করেন। এরপর মাটিচাপা দিয়ে আবারো ডিউটিতে চলে যান। ১১ ডিসেম্বর সকালে গাঁওয়ের কাজের মহিলা বাসায় এসে দেখেন কেউ বাসায় নেই এবং সব কিছু তছনছ। তিনি সঙ্গে সঙ্গে নিচে থাকা নিরাপত্তা কর্মীকে বিষয়টি জানান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মাটি খুঁড়ে চীনা এই নাগরিকের মরদেহ উদ্ধার করে।’

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031