দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) আরিফুর রহমান সেখকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে।

মঙ্গলবার দুদকের উপপরিচালক মো. সামছুল আলম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই তলব করা হয় বলে জানিয়েছে দুদক সূত্র।

দুদকের ওই চিঠিতে বলা হয়, বিদেশে প্রশিক্ষণের নামে ‘অর্থ লোপাট’ এবং সরকারি হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজসমূহে পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দেওয়া, প্রশিক্ষণের নামে বিদেশে লোক পাঠানোর মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান চলছে। আর এসব বিষয়ে বক্তব্য দিতে আগামী ২০ জানুয়ারি দুদকের প্রধান কার্যালয়ে তাকে হাজির হতে বলা হয়।

দুদক সূত্র জানিয়েছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চিকিৎসক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিদেশে প্রশিক্ষণের নামে কোটি কোটি টাকা লোপাটের একটি অভিযোগ দুদকে অনুসন্ধান শুরু হয় গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে। উপপরিচালক মো. আলী আকবরকে অভিযোগটি অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। অনুসন্ধানে নেমেই তিনি অধিদপ্তরের পরিচালকসহ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এর কিছুদিন পর অভিযোগটি অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয় স্বাস্থ্যসম্পর্কিত বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের কাজে নিয়োজিত একটি দলকে। উপপরিচালক সামছুল আলমের নেতৃত্বাধীন ওই দল অনুসন্ধানে মাঠে নেমে এবার তলব করল মন্ত্রীর এপিএসকে।

দুদকের অভিযোগে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে বৈদেশিক প্রশিক্ষণের জন্য ৪২৬ জনের নামে সরকারি আদেশ (জিও) জারি করা মাধ্যমে প্রশিক্ষণার্থীদের সম্মানী বাবদ চার কোটি ৯৭ লাখ ৯৭ হাজার ৬৭৫ টাকা, বিমান ভাড়া দুই কোটি ২৭ লাখ ৮৬ হাজার টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে। এছাড়া প্রশিক্ষণ ও কর্মসূচি উন্নয়ন ব্যয় হিসেবে ১৪ কোটি ৩৭ লাখ ১১ হাজার ৪৭২ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। সব মিলে বিদেশে প্রশিক্ষণ বাবদ ২১ কোটি ৭২ লাখ ২৯ হাজার ১৪৭ টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা হয়।

দুদকের এই অভিযোগে বলা হয়, দেখা যায় প্রশিক্ষণার্থীদের প্রশিক্ষণের দেশগুলো ভিন্ন ভিন্ন হলেও তাদের জনপ্রতি খরচ দেখানো হয় চার হাজার ডলার অথবা তিন লাখ ৪০ হাজার টাকা। যা সবারই একই রকম। দুদক উল্লেখ করে, ব্যয়ের এই হিসাবটিও অসামঞ্জস্যপূর্ণ। এছাড়া প্রত্যেকের কর্মসূচি ও উন্নয়ন ব্যয় জনপ্রতি চার হাজার ডলার ধরা হয়েছে, যা বাস্তবসম্মত নয়। এই প্রক্রিয়ায় সাত কোটি থেকে আট কোটি টাকা অভিযুক্ত ব্যক্তিরা আত্মসাৎ করেন বলে উল্লেখ করা হয়।

অভিযোগে আরও বলা হয়, মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রশিক্ষণের জন্য নির্বাচিত প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশির ভাগই মানসম্মত নয়। শুধু তাই নয়, সরকারিভাবে যেসব ব্যাংকিং চ্যানেলে এসব টাকা লেনদেন করার হয়েছে তার কোনোটিই প্রাতিষ্ঠানিক নয়। পরবর্তী সময়ে অতিরিক্ত পাঠানো টাকা হুন্ডির মাধ্যমে দেশে ফেরত আনা হয়েছে বলে দুদক সূত্র নিশ্চিত করে। এসব বিষয়ে জিজ্ঞাসবাদ করার জন্যই তাকে তলব করা হয়েছে বলে দুদকের একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031