দূর্ঘটনা বেড়েই চলছে সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে।এসব দূর্ঘটনায় অকালে ঝরে যাচ্ছে অনেক তাজা প্রান। আর অঙ্গ হানি ঘটে চিরতরে পঙ্গু হয়ে যাচ্ছে মানুষ। শুধুমাত্র গত এক মাসে বেশ কয়েকটি বড় আকারের দূর্ঘটনা সংগঠিত হয় এ সড়কে। এতে নিহত হয়েছে অন্তত ২০ জন। আর আহত হয়েছে শতাধিক। আহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। লাইসেন্স বিহীন অদক্ষ চালক ও বাস চালকদের বেপরোয়া মনোভাবের কারনেই দূর্ঘটনার হার দিন দিন বাড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বেশ কয়েকজন যাত্রী, চালক ও সড়ক নিরাপত্তায় নিয়োজিত হাইওয়ে পুলিশের সাথে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। জানা যায়, চলতি মাসে চকরিয়া,লোহাগাড়া,সাতকানিয়া ও চন্দনাইশে বেশ কয়েকটি সড়ক দূর্ঘটনা সংগঠিত হয়। এর মধ্যে সর্বশেষ দূর্ঘটনাটি ঘটে গত ২৫ মে বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে তিনটার সময়। চন্দনাইশ উপজেলার হাসিমপুর ইউনিয়নের কসাই পাড়া নামক স্থানে একটি যাত্রীবাহি পিকআপ, একটি মালবাহী পিক আপ ও যাত্রীবাহী বাসের মধ্যে সংগঠিত মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলে নিহত হয়েছে অন্তত ৬ জন। গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৬ মে মারা যাওয়া আরো তিন জন মিলিয়ে মোট ৯ জন মারা গেছে। এ দূর্ঘটনায় নিহতরা হলো সাতকানিয়ার খাগরিয়া ইউনিয়নের হাজেরা বেগম (৪৫), তার মেয়ে নয়ন তারা (৯),কালিয়াইশ ইউনিয়নের ফরিদ উদ্দিন (৪৫),বাজালিয়ার জহিরুল ইসলাম (৩৩), চন্দনাইশের বাগিছার হাট এলাকার আব্দুল মতলব (৫০), চৌধুরী পাড়ার আল আমিন (৩৫), মনির আহমদ (৪০) ও তাহমিনা আক্তার কিবরিয়া (২০)। এর মধ্যে বাজালিয়ার জহিরুল ইসলাম দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার ৬ ঘন্টা পর বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টায় ও পরের দিন শুক্রবার সকাল নয়টার সময় বিজিসি ট্রাষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্রী তাহমিনা আক্তার কিবরিয়া চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।এ দূর্ঘটনায় আহত হয়ে মৃত্যু যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছেন আরো অন্তত ২০ জন। তারা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। সড়ক দূর্ঘটনার বিষযে জানতে চাইলে দোহাজারী হাইওয়ে পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মো. মিজানুর রহমান বলেন, সড়কে যান চলাচলে শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি। চালক সমিতি, মালিক সমিতির মাধ্যমে চালকদেরকে হাতে কলমে ট্রেনিং দিয়ে থাকি। তারপরেও চালকদের বেপরোয়া মনোভাব, অদক্ষতার কারনে এ সড়কে দূর্ঘটনা ঘটে থাকে। আমরা দূর্ঘটনা কমিয়ে আনার জন্য সর্বাত্মক ভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। মাঝে মধ্যে লাইসেন্স বিহীন চালক ও ফিটনেস বিহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছি।

এদিকে এক অনুসন্ধানে জানা যায়, মহাসড়ক থেকে তিন চাকার সিএনজি অটো রিক্সা তুলে দেওয়ার পর চার চাকার গাড়ি নামানো হলেও কমেনি সড়ক দূর্ঘটনা। বরঞ্চ সড়ক দূর্ঘটনায় প্রানহানীর সংখ্যা বেড়েছে। গত বৃহস্পতিবার চন্দনাইশের হাসিমপুরে সংগঠিত সড়ক দূর্ঘটনায় নিহতরা সকলেই ছিল চার চাকার পিক আপের যাত্রী। পটিয়া হয়ে, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া পর্যন্ত চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে চলাচলরত এসব যানবাহন অনেকটা রাস্তার উপর দাড়িয়ে থেকেই যাত্রী উঠা-নামা করে। দায়িত্বরত ট্রাফিকরা তাদের কাছ থেকে উৎকোচ পাওয়ায় এসব গাড়িকে সড়ক থেকে নিচে নামাতে তাদেরও কোন প্রচেষ্টা থাকেনা। মপহব গাড়িতে আবার নেওয়া হয় অতিরিক্ত যাত্রী। যার ফলে সড়ক দূর্ঘটনায় উদ্বগজনক হারে বেড়েছে মৃত্যু ঝুকিঁ। সড়কে মৃত্যুঝুকি কমাতে লাইসেন্সে বিহিীন অদক্ষ চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা, অতিরিক্ত যাত্রী বহন বন্ধ ও যত্রতত্র দাড়িয়ে যাত্রী উঠা নামা বন্ধ করা অত্যান্ত জরুরী বলে মনে করেন সচেতন মহল।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031