ঢাকা : ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। রবিবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবির কার্যালয়ে ‘দুর্নীতিবিরোধী প্রতিষ্ঠান শক্তিশালীকরণ উদ্যোগ: বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশনের ওপর পর্যালোচনা’ শীর্ষক ওই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতি সাধারণ মানুষের কোনো আস্থা নেই, তারা মনে করে এই প্রতিষ্ঠানটিকে রাজনৈতিক হয়রানির জন্য ব্যবহার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপার্সন সুলতানা কামাল, নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, উপ-নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের ও গবেষক দলের প্রধান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. সালাহউদ্দিন এম. আমিনুজ্জামানসহ অন্যান্য গবেষকবৃন্দ।

গবেষণায় ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত দুদকের কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। গবেষণায় সার্বিক বিবেচনায় দুদক মধ্যম মাত্রার স্কোর পেয়েছে। ১০০ নম্বরের মধ্যে দুদকের স্কোর ৬১ দশমিক ২২ শতাংশ। গবেষণায় ৫০টি নির্দেশকের মধ্যে ২১টিতে উচ্চ, ১৯টিতে মধ্যম ও ৯টিতে নিম্ন স্কোর পেয়েছে দুদক।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আইনি স্বাধীনতা ও অবস্থান; অর্থ ও মানবসম্পদ; অনুসন্ধান ও তদন্ত কার্যক্রম; প্রতিরোধ, শিক্ষামূলক ও আউটরিচ কার্যক্রম; অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সাথে সহযোগিতা; জবাবদিহিতা ও তদারকি; দুদকের কার্যক্রম সম্পর্কে জনমত/জনগণের ধারণা- এই পৃথক ৭টি ক্ষেত্রের অধীনে ৫০টি নির্দেশকের ভিত্তিতে এই গবেষণা পরিচালিত হয়।

গবেষণা প্রতিবেদনে দুদকের নানা দুর্বলতা কাটিয়ে দুর্নীতি দমনে সংস্থার কার্যকারিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১১ দফা সুপারিশ উত্থাপন করেছে টিআইবি। এগুলো হলো: দুদকের বাজেট বৃদ্ধি, সাংগঠনিক কাঠামো ও জনবল বৃদ্ধির বিষয়ে পুনর্বিবেচনা; চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বাড়ানো; অভিযোগ দাখিল ব্যবস্থায় আধুনিকায়ন ও তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো; দুর্নীতির মামলায় শাস্তির হার বাড়াতে ব্যবস্থা গ্রহণ (যেমন- তদন্ত ও মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে ঝুঁকি চিহ্নিত করা, মামলা দায়েরের পূর্বে প্রয়োজনবোধে আইনজীবীদের সাথে পরামর্শ করা, প্যানেলভুক্ত আইনজীবীদের সাথে নিয়মিতভাবে যোগাযোগ রক্ষা ও তদারকি করা); সম্পদ পুনরুদ্ধারের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ; দীর্ঘমেয়াদী সমন্বিত কৌশলগত পরিকল্পনা প্রণয়ন, উন্নত ওয়েবসাইট চালু করা, অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্বয় ও সহযোগিতা বাড়ানো; জনগনের প্রতিনিধিত্বকারী স্বাধীন তদারকি ব্যবস্থার উদ্যোগ গ্রহণ এবং বিভিন্ন ইতিবাচক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জনগণের আস্থা বৃদ্ধি করা।

জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করার পাশাপাশি ইতিবাচক দিকগুলো ধরে রেখে দুর্বলতাগুলো কাটিয়ে ওঠাই এখন দুদকের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ বলে সাংবাদিক সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031