রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখছে বলে জানিয়েছেন প্। রোববার প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে অভিবাসন বিষয়ক জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটির প্রথম সভায় তিনি একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছু কিছু দালাল শ্রেণির লোক সোনার হরিণের স্বপ্ন দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা নিয়ে মানুষকে দেশের বাইরে পাঠায়। মানুষ যাতে ওদের মুখরোচক কথার ধোঁকাবাজিতে না পড়ে, সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে। সতর্ক থাকতে হবে। এভাবে কোথায়ও গিয়ে কেউ যেন অকালে হারিয়ে না যায়।

তিনি বলেন, কর্মসংস্থানের জন্য আমাদের দেশের মানুষ যখন বিদেশে যায়, আমরা সরকার গঠনের পর থেকে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তাদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করার কাজ করে আসছি। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক করে দিয়েছি, যাতে ব্যাংকের মাধ্যমে প্রয়োজনে বিনা জামানতে ঋণ নিয়ে মানুষ বিদেশ যেতে পারে।

‘আর তারা কোথায় কী কাজ করতে যাচ্ছেন, তার একটা খবর নেওয়া, যেন সঠিক কাজটা পায় সেদিকে লক্ষ্য রাখা, যেখানে যে কাজে যাবে সেভাবে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া, সে দেশের আইন-কানুন সম্পর্কে জানানো, এসব করার চেষ্টা আমরা করছি।’

সরকারের ব্যবস্থা সত্ত্বেও মানুষ অসচেতনার কারণে দালালের খপ্পরে পড়ে, এমন কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তবু আমি একটা জিনিস দেখি, কিছু কিছু দালাল শ্রেণির লোক থাকে, যারা গ্রামে-গঞ্জে ঘুরে মানুষকে বড় বড় স্বপ্ন দেখায়। সোনার হরিণের স্বপ্ন দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে বাইরে (বিদেশ) পাঠায়। তারা শুধু বাইরেই পাঠিয়ে দিচ্ছে। এরপরে কে বাইরে কোথায় গেছে, সেই খবর কেউ জানেনা। মানুষ জমিজমা বিক্রি করে, সবকিছু বন্ধক রেখে দালালকে টাকা দিয়ে বাইরে যায়। কিন্তু যাওয়ার পর সেখানে তাদের কোনো খবর থাকে না। অনেক সময় তাদের কোনো কাজের ঠিকানাও থাকে না।

‘তখন আবার এদের আত্মীয়-স্বজনকে চাপ দেয় এবং তাদের কাছ থেকে আবারও টাকা নেয়। এই ধরনের অনিয়ম সারা বাংলাদেশে আছে। আমরা এ ব্যাপারে অনেক চেষ্টা করছি জনগণকে বোঝাতে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আবার অনেক দেশে আমাদের মেয়েরা যায়। কিন্তু তারা কোন ধরনের কাজ করতে পারবে, সেসব তথ্য নেওয়া হয় না; কী ধরনের কাজ করতে পারবে বা করবে এর জন্য ট্রেনিংও দেওয়া হয় না। ফলে যে নারীরা যাচ্ছে, তারা কোনো কাজ করতে পারেনা এবং সেখানে অত্যাচারেরও শিকার হয়।

‘এগুলো বন্ধ করতে আমরা ইতোমধ্যে তাদের স্মার্টকার্ড করে দেওয়া, প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, কে কোথায় কাজ নিয়ে যাচ্ছে সেগুলোর খবর রাখার কাজ করছি। সারা বাংলাদেশে ডিজিটাল সেন্টার করে দিয়েছি। এই সেন্টারের মাধ্যমে তাদের রেজিস্ট্রেশন করা, এই রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে তাদেরকে পাঠানো, সব ধরনের ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি।’

তিনি বলেন, এসব সুযোগ-সুবিধা থাকা সত্বেও কিন্তু আমাদের অনেকেই এই দালালের খপ্পরে পড়ে। যার ফলে বাইরে গিয়ে তারা বিপদে পড়ে যায়। মানুষ যাতে ধোঁকাবাজিতে না পড়ে সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে, সতর্ক থাকতে হবে। এভাবে কোথাও কেউ যেন অকালে হারিয়ে না যায়। আমাদের নাগরিকদের নিরাপত্তা, তাদের ভালো-মন্দ দেখার দায়িত্ব আমাদেরই।

এছাড়া বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে দালালের বিষয়ে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বানও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031