প্রতিকূল সময়ে বাংলাদেশের বন্ধু ও প্রতিবেশী হিসেবে পাশে দাঁড়াতে প্রস্তুত ভারত। দিল্লি মনে করে দুই দেশের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস করোনা পরিস্থিতির উত্তরণ দ্রুততর এবং সহজ করবে। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সার্ক ইমার্জিন্সি ফান্ডের আওতায় ভারতের জনগণ ও সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে দেয়া চিকিৎসা সহায়তার দ্বিতীয় চালান হস্তান্তর বিষয়ক হাই কমিশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়। বলা হয়, ভারতের ‘প্রতিবেশী প্রথমে ’নীতির অংশ হিসেবে এবং কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধে একটি সহযোগিতামূলক আঞ্চলিক প্রচেষ্টার লক্ষ্যে ১৫ ই মার্চ  ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সার্ক নেতাদের নিয়ে একটি ভিডিও সম্মেলন করেছিলেন। বাংলাদেশের প্রতি ভারতের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে হাই কমিশনার রীভা গাঙ্গুলি দাশ এক লাখ হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ট্যাবলেট এবং ৫০ হাজার জীবাণুমুক্ত সার্জিকাল ল্যাটেক্স গ্লাভস সমন্বিত জরুরি চিকিৎসা সরবরাহের দ্বিতীয় চালানটি রোববার হস্তান্তর করেন।  স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরবরাহ, প্রতিরক্ষামূলক সরঞ্জাম এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভারতের অব্যাহত সহায়তার প্রশংসা করেন। বলেন, সঙ্কটের সময়ে প্রতিবেশী বন্ধুর সহায়তাকে আমরা স্বাগত জানাই। হাই কমিশনার কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলাদেশ সরকারকে ভারতের অব্যাহত সহায়তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
হাই কমিশনের বিজ্ঞপ্তি মতে, সার্ক কোভিড-১৯ জরুরি তহবিলের আওতায় এবং কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধে বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টায় সাহায্য করার উদ্দেশ্যে এই সহায়তা দেয়া হয়েছে। চিকিত্সা সামগ্রীগুলি বাংলাদেশ সরকারের কেন্দ্রীয় মেডিকেল স্টোর ডিপোতে প্রেরণ করা হয়েছে।

এর আগে বিমান বাংলাদেশের সহায়তায় ওষুধগুলো ভারত থেকে আনা হয়। এই সময়োপযোগী সাহায্যের জন্য হাই কমিশন বিমান সংস্থার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়-    প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘোষণায় ভারতের ১০ মিলিয়ন ডলার প্রাথমিক সহায়তা নিয়ে সার্ক কোভিড-১৯ জরুরি তহবিল গঠিত হয়। এই তহবিলের অধীনে ৩০ হাজার সার্জিক্যাল মাস্ক এবং ১৫ হাজার হেড-কভার সমন্বিত জরুরি চিকিৎসা সহায়তার প্রথম চালান আগেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ.কে. আবদুল মোমেনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ভারত মিশনের বিজ্ঞপ্তি মতে, সার্ক অঞ্চলে কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য একটি সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টার প্রতি ভারতের প্রতিশ্রুতিকে সামনে রেখে, ২৬ মার্চ ও ০৮ এপ্রিল ২০২০ সার্ক দেশসমূহের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং বাণিজ্য প্রতিনিধিদের মধ্যে সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ, বাণিজ্য সহজীকরণ এবং সেরা অনুশীলনগুলো বিনিময় বিষয়ে আলোচনার জন্য পৃথক ভিডিও সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সার্কভুক্ত দেশগুলির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা সেরা অনুশীলনগুলি বিনিময়ের জন্য এবং পারস্পরিকভাবে উপকৃত হওয়ার জন্য অবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ রক্ষা করছেন।
এছাড়াও, ভারতের স্বাস্থ্যসেবা বিশেষজ্ঞরা কোভিড-১৯ পরিচালনা কৌশল, দক্ষতা বৃদ্ধি, সেরা অনুশীলনের বিনিময় এবং এ সম্পর্কিত দিকগুলি নিয়ে সার্ক দেশগুলোর স্বাস্থ্যসেবা দানকারীদের জন্য স্বল্পদৈর্ঘ্য ওয়েবিনার আকারে ই-আইটিইসি প্রশিক্ষণ মডিউল ডিজাইন করেছেন। ১৭-২১ এপ্রিল অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস, রায়পুর এই অনলাইন কোর্সটি পরিচালনা করে যেখানে বাংলাদেশের ৯০ জন স্বাস্থ্যকর্মী অংশ নেন। ভারত সরকারের আইটিইসি উদ্যোগের আওতায় আগামী ২৭ শে এপ্রিল থেকে ৬ই মে ভারতের চন্ডীগড়ের পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল এডুকেশন এন্ড রিসার্চ কর্তৃক দ্বিতীয় অনলাইন কোর্সের আয়োজন করা হচ্ছে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031