৫ম শ্রেণী পড়ুয়া এক ছাত্রীকে ধর্ষণের পর নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে খাগড়াছড়িতে। শনিবার রাত ১১ টায় বাড়ির পাশের ছরা থেকে স্থানীয়দের সহায়তায় লাশ উদ্ধার করে দীঘিনালা থানা পুলিশ। নিহতের নাম কৃত্তিকা ত্রিপুরা ওরফে পুর্না (০৯)। দীঘিনালা উপজেলার মেরং ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ৯ মাইল এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। নিহত কৃত্তিকা এই এলাকার নরোত্তম ত্রিপুরার মেয়ে। জানা যায়, কৃত্তিকার মা জুম (পাহাড়ে চাষাবাদ) থেকে বাড়িতে ফিরে এসে মেয়েকে না দেখে খুঁজতে থাকেন। পরে রাত ১১টায় বাড়ির পাশের ছরা থেকে রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। ধর্ষণকারীরা মেয়েটির দুই হাত কনুই বরাবর ভেঙে দিয়েছে। এছাড়া মেয়েটির যৌনাঙ্গসহ একাধিক স্থানে জখমের চিহ্ন পাওয়া যায়। কৃত্তিকা নয় মইল ত্রিপুরা পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী। দুপুরে স্কুল বিরতিতে সে বাড়িতে আসে। এরপর থেকে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। এই ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল রোববার সকাল থেকে খাগড়াছড়ি–দীঘিনালা সড়কের বিভিন্ন স্থানে গাছের গুড়ি ফেলে অবরোধ করে বিক্ষুদ্ধ জনতা। ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে প্রশাসনের এমন আশ্বাসের প্রেক্ষিতে বেলা ১ টায় অবরোধ তুলে নেয়। এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে পৃথকভাবে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস–এমএন লারমা), পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), ইউপিডিএফ (প্রসীত) সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, ইউপিডিএফ সমর্থিত হিল উইমেন্স ফেডারেশন, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম খাগড়াছড়ি জেলা শাখা।
মেরুং ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দা ঘনশ্যাম ত্রিপুরা জানান, ‘দুপুরের পর থেকে মেয়েটি নিখোঁজ। রাত সাড়ে দশটায় বিষয়টি দীঘিনালা থানা পুলিশকে জানানো হয়। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। কৃত্তিকা ত্রিপুরাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। দীঘিনালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.আব্দুস সামাদ বলেন,‘ স্থানীয় ইউপি সদস্য শনিবার রাত সাড়ে দশটায় মেয়েটি নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি জানান। পরে ভিকটিমের বাড়ির ১৫০ ফুট নীচে একটি ছরা থেকে রাত ১১ টা ১৫ মিনিটের দিকে লাশ উদ্ধার করা হয়। মেয়েটির কনুই বরাবর হাত ভাঙা পাওয়া যায়। এছাড়া তার পাজরেও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ধর্ষণের পর শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে। ময়না তদন্তের জন্য লাশ খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্ত শেষে লাশ নিহতের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। হত্যা মামলা দায়ের প্রস্তুতি চলছে।’
খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. নয়নময় ত্রিপুরা বলেন, ‘নিহতের শরীরের একাধিকস্থানে জখমের চিহ্ন রয়েছে।’
