পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী মাত্তেও রেঞ্জির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাওলো জেন্তিলোনি স্থলাভিষিক্ত হবেন। গণভোটে পরাজয়ের পর রেঞ্জি পদত্যাগের ঘোষণা দেন। প্রেসিডেন্ট সার্জিও মাত্তারেল্লা শনিবার জানান তিনি দ্রুতই শূন্যস্থান পূরণ করবেন। এরপর রেঞ্জির ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতাদের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে ডাকেন তিনি। তিন দিন ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনায় কোন ঐক্যমত্য না আসায় প্রেসিডেন্ট এ সিদ্ধান্ত নেন। এ খবর দিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি। খবরে বলা হয়, বিরোধী দলগুলো সম্ভাব্য জাতীয় ঐক্যের সরকার গঠনের ডাক প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা অনতিবিলম্বে নতুন নির্বাচনের দাবি জানান। তবে প্রেসিডেন্ট তাদের দাবি প্রত্যাখ্যান করেন।
২ বছর ১০ মাস ধরে প্রধানমন্ত্রীর পদে ছিলেন রেঞ্জি। কয়েকটি সাংবিধানিক সংস্কার আনার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এ নিয়ে গণভোট অনুষ্ঠিত হলে মানুষ তা প্রত্যাখ্যান করে। গণভোটের আগেই রেঞ্জি ঘোষণা দিয়েছিলেন তার চাওয়া জনগণ মেনে না নিলে, তিনি পদত্যাগ করবেন। নির্বাচনের ফল আসার পর তিনি তা-ই করেন।
এদিকে প্রেসিডেন্টের কার্যালয় রবিবার স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১২টায় এক বিবৃতিতে জানায়, প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেন্তিলোনি। বিরোধী দলগুলো আগে থেকেই অনুমান করছে, জেন্তিলোনির নেতৃত্বাধীন নতুন প্রশাসনের ওপর আস্থাভোট অনুষ্ঠিত হবে বুধবার।
এদিকে পপুলিস্ট দল ফাইভ স্টার মুভমেন্ট তাৎক্ষণিক নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। এ দলটি এবারের গণভোটে ‘না’র পক্ষে প্রচার চালিয়ে জনপ্রিয়তা পায়। দলটি ঘোষণা দিয়েছে, জেন্তিলোনির প্রশাসন নিয়ে পার্লামেন্টে আস্থাভোট তারা বয়কট করবে। কারণ হিসেবে ফাইভ স্টার মুভমেন্ট জানিয়েছে, এ সরকারের কোন বৈধতা নেই। এদিকে রবিবার প্রেসিডেন্ট মাতারেল্লা বলেন, বহুবিধ সমস্যায় জর্জরিত ইতালির এখন প্রয়োজন স¤পূর্ণভাবে কার্যক্ষম একটি সরকার। দেশের ব্যাংকিং সেক্টরে সংকট আসন্ন। আগস্ট ও অক্টোবরে দুইটি ভূমিক¤প আঘাত হানে ইতালিতে। এরপর সেখানে ত্রাণ তৎপরতাও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছে।
হবু প্রধানমন্ত্রী জেন্তিলোনি ২০১৪ সালের অক্টোবর থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রীর পদে ছিলেন। ইইউর বর্তমান পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান ফ্রেডেরিক মোঘেরিনি তখন ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি ইইউর দায়িত্ব নিতে গেলে জেন্তিলোনিকে একেবারে পার্লামেন্টের পেছন কাতার থেকে উঠিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বানান বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী রেঞ্জি। তাই দৃশ্যত তারা দু’ জন ছিলেন ঘনিষ্ঠ মিত্র। তাই জেন্তিলোনিকে বিরোধীরা ‘পুতুল প্রধানমন্ত্রী’ হিসেবেই দেখবে। তার কাজ হবে মাত্তেও রেঞ্জির অবস্থান নড়বড়ে না করা। কারণ, জোর গুঞ্জন আগামী নির্বাচনে ফের লড়তে পারেন রেঞ্জি। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে ওই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু হতে পারে ১ বছর আগেই। ইতালির বৃহত্তম বিরোধী দল ফাইভ স্টার ও উগ্র দক্ষিণপন্থী নর্দার্ন লিগ যত দ্রুত সম্ভব নতুন নির্বাচন দাবি করেছে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট মাত্তারেল্লা শনিবার বলেছেন, নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে কেবলমাত্র বিদ্যমান নির্বাচনী আইন পর্যালোচনা শেষে। সংকটকালীন সময়ে আইনানুযায়ী দেশটিতে প্রেসিডেন্ট বিশেষ নির্বাহী ক্ষমতা ভোগ করে থাকেন।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031