শ্বশুরবাড়ি ছাড়লেন সদ্য বিবাহিতা তরুণী মাঠে যেতে হবে শুনেই ফুলশয্যার দিন সকালে । জানিয়ে গেলেন, বাড়িতে শৌচালয় হলেই ফিরবেন। নইলে থাকবেন বাপের বাড়িতেই।

ভারতের বিহার রাজ্যের ভাগলপুরের নৌগাছিয়া মহকুমায়, কোশি নদীর ধারে প্রত্যন্ত গ্রাম ডোলবাজার। সেখানকারই ঘটনা।

গত বুধবার পূর্ণিয়া জেলার ডোভা গ্রামের কাঞ্চন কুমারীর সঙ্গে বিয়ে হয় ডোলবাজারের যোগেন্দ্র মিস্ত্রির ছেলে, রুধাল মিস্ত্রির। পর দিন শ্বশুরবাড়ি আসেন নববধূ। বিপত্তির শুরু শুক্রবার, ফুলশয্যার দিন ভোরে শাশুড়ি নববধূকে বলেন, আলো ফোটার আগেই মাঠে শৌচকর্ম সেরে আসতে। তীব্র আপত্তি জানান কাঞ্চন। রীতিমতো রেগেমেগেই শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে বাপের বাড়ি রওনা দেন মাধ্যমিক পাশ কাঞ্চন।

শ্বশুরবাড়ির লোকেদের জানিয়ে যান, ‘শৌচাগার না হলে আর ফিরবই না।’ জানান, শুধু শ্বশুর-স্বামীর আশ্বাস নয়, পঞ্চায়েতকে আশ্বাস দিতে হবে।

গোটা বিষয়টি নৌগাছিয়ার বিডিও রাজিব রঞ্জনকে জানান গ্রামের ‘স্বচ্ছতা কর্মী’ বিকাশ রজক। সঙ্গে সঙ্গেই বিডিও পঞ্চায়েতকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন।

গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য সঞ্জয় রজক বলেন, ‘বিডিওর নির্দেশ পেয়েছি। আগামী তিন-চার দিনের মধ্যেই ওই বাড়িতে শৌচাগার তৈরির কাজ শেষ হবে।’

কাঞ্চনার শ্বশুর যোগেন্দ্র মিস্ত্রি বলেন, ‘বাড়ির বৌ এভাবে চলে গেলে কার আর ভালো লাগে বলুন। তবে ও তো অন্যায় কিছু করেনি।’

তিনি জানান, তিনি গরিব মানুষ। এক সঙ্গে ১২ হাজার টাকা জোগাড় করার সম্ভব নয়। তবে পঞ্চায়েত তাকে  কাজ শুরু করতে নির্দেশ দিয়েছে। ব্যাংকে টাকা পাঠিয়ে দেবে পঞ্চায়েত। আর সেই ভরসায় শৌচালয় তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছেন যোগেন্দ্র।

এই ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়তেই জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ডোলবাজায় হাজির হন। গ্রামের সব বাড়িতে এখন শৌচালয় তৈরির কাজ শুরু হচ্ছে। ১০০ শতাংশ ‘নির্মল’ গ্রাম হতে চলেছে ডোলবাজার। আর সকলেই ধন্যবাদ দিচ্ছেন ‘বিদ্রোহী’ বধূকে।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031