নারায়ণগঞ্জ করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতায় হটস্পট । ৮ এপ্রিল থেকে পুরো জেলা লকডাউন করা হয়। সড়কে অবস্থান নেয় আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা। গণপরিবহন, বিপনীবিতান সব বন্ধ থাকে। বিনা প্রয়োজনে বাইরে বের হওয়া মানুষের চলাচলে নিয়ন্ত্রণ আনা হয়। পাড়া-মহল্লার প্রবেশ পথ বাঁশ দিয়ে আটকে দেয়া হয়। লাঠি হাতে অবস্থান নেয় উঠতি বয়সী তরুণ-যুবকরা। গুমট এক পরিস্থিতি তৈরী হয় জেলাজুড়ে।

টার্গেট করোনার সংক্রামন প্রতিরোধে মানুষকে ঘরে থাকতে বাধ্য করা। কিন্তু সীমিত পরিসরে পোশাক কারখানা চালুর ঘোষনার পরই মুখ থুবড়ে পড়েছে সকল ব্যবস্থাপনা। প্রতি মুহুর্তে পাল্টে যাচ্ছে দৃশপট। রাস্তায় বাড়ছে যানবাহনের সংখ্যা। ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান খুলতে শুরু করেছে। শুরুতে ওষুধের দোকান ও কাচাবাজার খোলা থাকলেও এখন সব ধরনের দোকানই খুলে বসেছে দোকানীরা। যেন চিরচেনা সেই পুরনো চেহারায় ফিরে যাচ্ছে সব কিছু। সড়কে আইনশৃংখলাবাহিনীর তৎপরতাও কমে এসেছে। বাধাহীন যানবাহন আর মানুষের চলাচল চোখে পড়ার মতো। ফলে লকডাউনের আলামত দেখা যাচ্ছে না নারায়ণগঞ্জে। অথচ রোববার (২ মে) সকাল পর্যন্ত জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১০২৬ জন। এরমধ্যে মারা গেছেন ৪৮জন। এমন পরিস্থিতিতে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছেন সচেতন মানুষের মধ্যে।
কিন্তু রোববার সকালে শহরের প্রাণকেন্দ্র চাষাড়ায় প্রাণচাঞ্চল্য দেখা গেছে। প্রচুর মানুষের পদচারনা। বড় বড় মার্কেটগুলো বন্ধ থাকলেও খাবারের সব ধরনের দোকানসহ ছোট-খাটো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান খোলা দেখা গেছে শহরজুড়েই। যানবাহনও চলছে পাল্লা দিয়ে। ঈদকে সামনে রেখে শহরের চাষাঢ়া, ডিআইটি, কালিরবাজার ও রেলওয়ে মার্কেটের কাপড়ের দোকানিরাও খুলতে শুরু করেছে দোকান। ইতোমধ্যেই বঙ্গবন্ধু সড়ক ও হকার্স মার্কেটকে কেন্দ্র করে অল্প সংখ্যক হকাররাও দোকান খুলেছে। ভ্রাম্যমাণ হকাররাও বিভিন্ন আইটেম নিয়ে ভ্যানে করে দোকান খুলছে ফুটপাত জুড়ে। শহরের এক দোকানী বলেন, অনেকদিন বন্ধ ছিল, খুলিনি। এখন তো ইফতার বাজার, ফুটপাত সবই খুলেছে তাই আমিও আজ আসলাম। তবে ক্রেত কম। আমির হোসেন নামে একজন বলেন, ঘরে বাজার নেই তাই একটু বাজার করতে বের হয়েছিলাম। বের হয়ে অবাক হয়েছি যে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস ছাড়াও মার্কেট খুলতে শুরু করেছে। লকডাউন মনে হচ্ছে না।
ওদিকে শিল্পাঞ্চল ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জের চিত্র আরো ভয়াবহ। সেখানে লকডাউনের কোন আলামত আছে বলে মনে হয় না। পোশাক শ্রমিকদের পদচারনায় মুখরিত ওই এলাকাগুলো। তার উপর যানবাহনের চলাচল তো আছেই। এছাড়া সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী সোনামিয়াবাজারের কাচাবাজার শুরু থেকে খোলা থাকলেও এখন  সব ধরনের দোকান খুলে বসেছে দোকানীরা। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। ফতুল্লায়ও একই চিত্র। সকাল ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত এবং বিকাল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত ফতুল্লা শিল্পাঞ্চল ও আদমজী ইপিজেডের দৃশ্য ভয়াবহ আকার ধারণ করে। ওই সময়ে হাজার হাজার পোশাক কারখানার শ্রমিকদের উপস্থিতির কারণে সড়কে রীতিমত দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। স্থানীয়রা বলছে এই যদি হয় পরিস্থিতি তাহলে লকডাউন রেখে লাভ কি?

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031