সিনিয়র নার্স মশিউর রহমানকে হত্যার হুমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের। এর প্রতিবাদে রবিবার বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত এক ঘন্টা কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করেছেন হাসপাতালের সকল নার্স। এসময় হাসপাতালে আসা শত শত রোগী চিকিৎসা সেবা না পেয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েন।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় হিসেবে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয় তৌহিদুল ইসলাম হৃদয়কে। নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে প্রায়ই সে হাসপাতালের নার্স ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করতে থাকে। টাকা না দেওয়ায় কিছুদিন আগে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের মারধর করার অভিযোগ উঠে হৃদয়ের বিরুদ্ধে। নিজেকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের আশির্বাদপুষ্ট পরিচয় দিয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠে হৃদয়। এরই মধ্যে শনিবার বিকালে হৃদয় বহিরাগত কয়েকজন সন্ত্রাসীদের নিয়ে হাসপাতালে নার্সদের রুমে গিয়ে সিনিয়র নার্স মশিউর রহমানকে তার কথামতো কাজ করার নির্দেশ দেয়। এসময় এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এর কিছুক্ষণ পর হৃদয় ওই সন্ত্রাসীদের নিয়ে হাসপাতাল ফটকের সামনে মশিউর রহমানকে বেদম মারধর করে। এসময় হৃদয় তার নির্দেশমত হাসপাতালে কাজ না করলে মশিউর রহমানকে গুলি করে হত্যার হুমকি দেয়। এ ঘটনার পর আহত মশিউর রহমান হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে টঙ্গী পূর্ব থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। বিষয়টি জানাজানির পর হাসপাতালের নার্সদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। এর প্রতিবাদে তারা এ কর্মবিরতি পালন করেন।

এদিকে হাসপাতালের সালমা আক্তার নামে এক নার্স জানান, গত ৫ মার্চ ওয়ার্ড বয় হৃদয় তাকে তার রুমে ডেকে নিয়ে ছয় ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। এসময় তার কাছে ছয় লাখ টাকা দাবি করে হৃদয়। টাকা না দিলে আপত্তিকর ছবি মোবাইল ফোনে ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করবে বলে হুমকি দেয়। পরে তার পরিবার ৯৯৯-এ ফোন করলে টঙ্গী পূর্ব থানা পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে।

হাসপাতালের নার্সেস পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা সরকারি কর্মচারী হয়েও একজন আউট সোর্সিং কর্মচারীর কাছে প্রায় সময় লাঞ্চিত হই। এর আগে হৃদয়ের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকবার অভিযোগ দেওয়া হলেও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে দিনের পর দিন হৃদয়ের অত্যাচার বেড়ে চলছে। এর সুষ্ঠু সমাধান প্রয়োজন।’

তবে ওয়ার্ড বয় তৌহিদুল ইসলাম হৃদয় তার বিরুদ্ধে উঠা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘সব অভিযোগ মিথ্যা। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’

শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘সিনিয়র স্টাফ নার্স মশিউর রহমানের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তদন্ত কমিটি দুই কর্মদিবসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেবে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তের পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031