যুক্তরাষ্ট্র প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে । সেখানে প্রতিনিয়ত বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দেড় লাখ ছুঁই ছুঁই করছে। আর মৃতের সংখ্যা দুই হাজার ছাড়িয়েছে।

বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে আছেন ১৫ জন বাংলাদেশিও। তাদের সবাই নিউইয়র্কের বাসিন্দা। সর্বশেষ গতকাল করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মির্জা হুদা নামে এক বাংলাদেশি। এছাড়া অঙ্গরাজ্যটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন আরও অনেক বাংলাদেশি।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে নিউইয়র্কে যেসব বাংলাদেশি মারা গেছেন তারা হলেন- ৬৩ বছরের ক্যাবচালক একেএম মনির উদ্দিন। একইদিন মারা যান সফিউদ্দিন বেপারী নামে ৫৮ বছরের আরেক ব্যক্তি। ২৭ মার্চ এই দুইজনের মৃত্যু হয়।

২৬ মার্চ মারা যান ৭৭ বছরের ব্রংক্স এলাকার এক ব্যক্তি। ২৫ মার্চ মারা যান ব্রুকলিন এলাকার ৪৫ বছরের মোছাম্মদ আক্তদারি।

২৪ মার্চ মারা যান চার বাংলাদেশি। তারা হলেন ৬০ বছরের আবদুল বাতেন, ৭০ বছরের নুরজাহান বেগম, ৪২ বছরের এক নারী এবং ৫৯ বছরের এ টি এম সালাম।

২৩ মার্চ মারা যান ৩৮ বছরের আমিনা ইন্দ্রালিব তৃষা এবং ৬৯ বছরের মোহাম্মদ ইসমত। তার আগের সপ্তাহে মারা যান মোতাহের হোসেন ও মোহাম্মদ আলী নামে দুজন বাংলাদেশি। সর্বশেষ গতকাল মারা যান ৪৪ বছরের মির্জা হুদা। আর দুইজনের নাম জানা যায়নি।

২০১৯ সালের শেষ দিন চীনের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। সেখানে ভয়াবহ আকার ধারণ করার পর চীনের ভূখণ্ড পেরিয়ে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে গোটা বিশ্বে। ২০০টির বেশি দেশে ছড়ায় প্রাণঘাতী ভাইরাসটি।

গত জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন আরও বেশি নমুনা পরীক্ষা ও বিশ্লেষণ না করায় আক্রান্তের সংখ্যা নাটকীয়ভাবে বাড়ছে। দেশটির প্রায় সব অঙ্গরাজ্যে ছড়িয়েছে করোনা। এর মধ্যে সবচেয়ে বাজে পরিস্থিতি নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে। যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় মারা যাওয়া ২ হাজার ৩৮৪ জনের মধ্যে শুধু নিউইয়র্কেই মারা গেছেন ৯৬৫ জন।

করোনাভাইরাস এখন নিউইয়র্কে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে রীতিমতো আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। অনেক বাংলাদেশির এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর লোকমুখে শোনা গেলেও ঠিক কতজন বাংলাদেশি আক্রান্ত হয়েছেন, সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যাচ্ছে না। এর কারণ যারা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাদের পরিবার বিষয়টি লুকিয়ে রাখতে চাইছে। আশপাশের প্রতিবেশীদের কাছ থেকে কোনো কোনো ব্যক্তির আক্রান্ত হওয়ার খবর জানা যাচ্ছে।

করোনাভাইরাসে সৃষ্ট কোভিড-১৯ রোগে মারা যাওয়া মানুষের পরিচয় খোদ যুক্তরাষ্ট্র সরকারই গোপন রাখছে।

যুক্তরাষ্ট্র সরকারসহ বিভিন্ন সূত্র শুধু আক্রান্ত ও মৃত মানুষের প্রকৃত সংখ্যা জানাচ্ছে। আক্রান্ত ও মৃত মানুষের পরিচয়ের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031