চপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ট্টগ্রামের বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুতে সমবেদনা জানিয়ে পরিবারের সদস্যদের সান্তনা দিলেন ।
আর মহিউদ্দিন চৌধুরীর কুলখানিতে রিমা কনভেনশন সেন্টারে মেজবান খেতে আসা লোকজনের ভিড়ে পদদলিত হয়ে নিহতদের প্রত্যেক পরিবারের জন্য আরও ৫ লাখ টাকা করে দেয়ার ঘোষনা দেন তিনি।
আজ রোববার বিকেল ৪ টা ৫ মিনেটে চট্টগ্রাম নেভাল একাডেমি থেকে রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ মিডশিপম্যান-২০১৫ পরিদর্শন শেষে নগরীর ষোলশহর দুই নম্বর গেইটের চশমা হিলে মহিউদ্দিন চৌধুরীর বাসভবনে পৌছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সেখানে মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্ত্রী ও নগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হাসিনা মহিউদ্দিন, তাদের বড় ছেলে ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক স¤পাদক মহিবুল হাসান নওফেলসহ পরিবারের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীকে বুকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন হাসিনা মহিউদ্দিন। শোকে বিহ্বল প্রধানমন্ত্রীও চোখ মুছতে থাকেন।
ফলে এ সময় শোকার্ত পরিবেশের সৃষ্টি হয়। তবে প্রধানমন্ত্রী নিজেকে সামলে নিয়ে হাসিনা মহিউদ্দিনকে শান্তনা দেন। পরে মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্ত্রী-পূত্রসহ পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
এ সময় তিনি পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। পরে তিনি কুলখানিতে মেজবান খেতে আসা সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্যদের খোঁজ খবর নেন। তাদের পারিবারিক অবস্থার কথা জানার পর প্রধানমন্ত্রী নিহতদের প্রত্যেক পরিবারের জন্য আরও ৫ লাখ টাকা করে অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দেন।
পরে তিনি বাসভবনের নিকটস্থ পারিবারিক কবরস্থানে মহিউদ্দিন চৌধুরীর কবর জেয়ারত করে আল্লাহর রহমত ও দোয়া কামনা করেন। ৪ টা ৫৫ মিনিটে তিনি মহিউদ্দিন চৌধুরীর বাসা ত্যাগ করে বিমান বন্দরের উদ্দেশ্যে চলে যান।
মহিউদ্দিন চৌধুরীর বড় ছেলে ব্যারিস্টার নওফেল, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক জিল্লুর রহমান চৌধুরী এসব তথ্য জানান।
জেলা প্রশাসক জিল্লুর রহমান চৌধুরী বলেন, শনিবার রাতেই প্রধানমন্ত্রীর চট্টগ্রাম সফরের সঙ্গে মহিউদ্দিন চৌধুরীর বাসভবনে যাওয়ার সুচি পায়। এরপর নগরজুড়ে নিরাপত্তা বলয় তৈরী করা হয়। বিশেষ করে বিমানবন্দর সড়ক থেকে মহিউদ্দিন চৌধুরীর বাসা পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নেয়। শহরের বিভিন্ন স্পটে মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ।
তিনি জানান, শনিবার রাতেই এসএসএফসহ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের চৌকস সদস্যরা মহিউদ্দিন চৌধুরীর বাসভবনের চারপাশে নিরাপত্তা বলয় সৃষ্টি করে। সেই সাথে নগরীর বিভিন্ন সড়কপথ ও মহিউদ্দিন চৌধুরীর বাসভবনের আশপাশে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন কাজ করা হয়।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নির্দেশনা পাবার পর শনিবার সন্ধ্যা থেকেই মহিউদ্দিন চৌধুরীর বাসার আশপাশ ঘিরে মহড়া দিতে শুরু করে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সদস্যরা।
তিনি বলেন, মহিউদ্দিন চৌধুরীর বাসভবনের চশমা হিলের প্রবেশপথ অত্যন্ত সরু। ফলে বাসা পর্যন্ত সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টিকে খুবই গুরুত্ব দেয়া হয়। ফলে প্রধানমন্ত্রীর আগমণের আগে দুপুর থেকে আশপাশের দোকান পাট ও যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
স্থানীয় লোকজন জানান, নগরীর আগ্রাবাদ থেকে ষোলশহর দুই নম্বার গেইট এলাকা পর্যন্ত এশিয়ান হাইওয়ে সড়কের দুইপার্শ্বে আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগ যুবলীগ ও অন্যন্য অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা দুপুর থেকে অবস্থান নেয় প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে।
এ সময় এ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে মানুষের দুর্ভোগে পড়ে। যানবাহন না পেয়ে শত শত লোকজন পায়ে হেটে যাতায়েত করতে দেখা গেছে।
দুর্ভোগে পড়া লোকজন জানান, দুপুর থেকে পুলিশ নগরীর দেওয়ান হাট থেকে মুরাদপুর পর্যন্ত সড়ক এবং টাইগারপাস আমবাগান, কদমতলী, জাকির হোসেন সড়ক, ওআর নিজাম রোড, ষোলশহর বায়োজিদ সড়কসহ আশেপাশের কোন সড়কে ছোটবড় কোন যানবাহন রাস্তায় চলাচল করতে দিচ্ছে না। এমনকি রিক্সা পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে। কোন দোকানপাট খুলতে দেয়নি।
