রাজধানীর হেয়ার রোডের ২০ নম্বর বাড়ি এটি। সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী থাকতেন যেখানে। প্রায় দুই বছর আগে মন্ত্রিত্ব হারিয়ে বাড়িটি ছেড়েছিলেন তিনি। তারপর দু-একজন মন্ত্রী বাড়িটি দেখে গেছেন। কিন্তু কেউ ওঠেননি। সেই থেকে শূন্যতা ধলেশ্বরীতে।

তবে এবার শূন্যতা কাটছে। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বাড়িটিতে উঠছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র ঢাকাটাইমসকে এ তথ্য জানিয়েছে।

বাড়িটি দেখভালের দায়িত্বে আছেন জামাল। সপরিবার থাকেন মূল বাড়ির পেছনের আধাপাকা ঘরে। তিনি জানালেন, মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর পরিবার নিয়ে বাড়িটি দেখে গেছেন কদিন আগে। বাড়ি পছন্দ হয়েছে। এখন চলছে ঝাড়পোছ। চটে যাওয়া দেয়ালে পড়ছে রঙের ছোঁয়া। পুরোদস্তুর তৈরি হলে মন্ত্রী উঠবেন সেখানে। এখন পর্যন্ত এমনটাই ঠিক হয়ে আছে।

জামাল আরও জানান, গেল বছর বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী ইমাজউদ্দিন প্রামাণিক বাড়িটি ঘুরে গিয়েছিলেন। কিন্তু উঠবেন বলেও শেষে আর ওঠেননি। এসেছিলেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের স্ত্রীও। তিনি দেখে প্রথমে পছন্দ করলেও পরে  না করে দেন। এরপর দীর্ঘদিন কেউ বাড়িটিতে ওঠার আগ্রহ দেখাননি। এ বছরের মার্চে কামরুল ইসলাম মেয়েকে নিয়ে আবার এসেছিলেন বাড়িটি দেখতে। কিন্তু মেয়ের আপত্তি। বললেন, ‘বাবা, বাড়িটি অনেক দিন খালি। এখানে আসব না।’

হেয়ার রোডের শেষ দিকটায় বাড়িটির নিরিবিলি পরিবেশ ভেদ করে মাঝেমধ্যে ডেকে উঠছে ইষ্টিকুটুম, দোয়েল। বাড়ির ভেতরে দুপাশে বাগান। নানা রঙের ফুল। আছে রসালো ফলের গাছও।

২০০৯ সালে পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী থাকাকালে বাড়িটি বরাদ্দ পেয়েছিলেন লতিফ সিদ্দিকী। দশম সংসদ নির্বাচনের পর নতুন সরকার গঠনের পর মন্ত্রণালয় বদল হয়েছে। মন্ত্রী হয়েছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের। কিন্তু বাসা বদল করেননি। কাণ্ডটা ঘটলো গেল ২০১৪ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর। নিউ ইয়র্কে এক সভায় পবিত্র হজ ও তাবলীগ জামায়াত নিয়ে কটূক্তি করে বসলেন লতিফ সিদ্দিকী। প্রধানমন্ত্রীপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়েও আপত্তিকর কথা বলেন তিনি। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানায় লতিফ সিদ্দিকীর শাস্তির দাবি উঠলো। তার এই কাণ্ডে বিব্রত সরকার ২০১৪ সালের ১২ অক্টোবর তাকে সরিয়ে দিল মন্ত্রিসভা থেকে। হারালেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যপদও। পরে তিনি ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর সংসদ সদস্য পদও ছেড়ে দেন।

এরপর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের মামলায় কারাগারে যান লতিফ সিদ্দিকী। বেশ কয়েক মাস কারাগারে থাকার পর ২০১৫ সালের ২৯ জুন মুক্তি পান তিনি।

২০০৯ সালে মন্ত্রিত্ব পাওয়ার আগে লতিফ সিদ্দিকী থাকতেন ধানমন্ডির ১২/এ রোডের ৬৮ নম্বর বাসায়। তার দুই মেয়ে ও এক ছেলে। ছোট মেয়ে হেয়ার রোডের বাসায় থাকতেন। আরেক মেয়ে থাকেন কানাডায়। একমাত্র ছেলে থাকেন বনানীতে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031