গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনাগুলো পতিতা ও মাদকের আস্তানায় পরিণত হয়েছে চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্দর টোল রোডের দু‘পাশে । এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। আর এসব আস্তানা উচ্ছেদে দীর্ঘদিন ধরে আবেদন-নিবেদন করে আসলেও তা কোনো সময় নজরে আনেনি প্রশাসন।
কিন্তু সোমবার সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন হঠাৎ এসব আস্তানা উচ্ছেদে অভিযান শুরু করে। এতে কান্নার রোল পড়ে পতিতাদের। আর মুখে হাসি ফুটে স্থানীয় লোকজনের। দুপুর ২টা পর্যন্ত টানা এই উচ্ছেদ অভিযান চলে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্টেট ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোরাদ আলী অভিযানে নেতৃত্ব দেন। তিনি জানান, স্থানীয় লোকজনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্দর সংযোগ সড়ক টোল রোড এর দুপাশে প্রায় তিনটি ভাসমান পতিতা পল্লীর তিন শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।
উচ্ছেদ অভিযান চলাকালে আস্তানার ঘরগুলোতে থাকা পতিতারা তুমুল বাক-বিতন্ডায় লিপ্ত হন। এমনকি প্রাচীর সৃষ্টি করে অভিযানে বাঁধা দেয়। বাঁধা ডিঙ্গিয়ে উচ্ছেদ শুরু করলে কান্নার রোল বসিয়ে দেয়। এরমধ্যে হিজড়াও ছিল।
তিনি বলেন, অভিযানকে প্রভাবিত করতে আস্তানার একজন হিজড়া নিজেই ইট দিয়ে নিজের মাথা ফাটিয়ে রক্তপাত করেন। এমনকি তারা পুলিশের সাথে দাঙ্গা-হাঙ্গামারও চেস্টা চালান। তবে স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় পতিতা ও মাদকের এসব আস্তানা উচ্ছেদ সম্ভব হয়।
তিনি আরও জানান, পতিতা ও মাদকের আস্তানাগুলো উচ্ছেদের সময় স্থানীয় লোকজন আনন্দ মিছিল করে। অভিযানে স্বস্তির নিশ^াস ফেলে স্থানীয় লোকজন। শত শত স্থানীয় বাসিন্দা অভিযানে সহযোগীতা করেন বলে জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোরাদ আলী।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. লেয়াকত, এমরান হোসেনসহ অনেকে জানান, টোল রোডের দুপাশে দীর্ঘদিন ধরে পতিতাখানা গড়ে উঠলেও প্রশাসন কিছুই করেনি। এসব পতিতাখানা উচ্ছেদে স্থানীয়রা গত ৫-৬ বছর ধরে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ও থানায় একাধিক অভিযোগ করে আসছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বন্দর থানার পুলিশ এসব পতিতা ও মাদকের আস্তানায় এসে মাসোহারা নিয়ে যেতেন। ফলে পতিতা ও মাদক সেবীরা নির্বিঘেœ তাদের ব্যবসা চালাচ্ছিল। তাদের উৎপাতে স্থানীয় লোকজন অতিষ্ঠ হয়ে উঠে। অভিযানে স্থানীয় কাউন্সিলর মো. শফিউল আলমও জনগণের সাথে ছিলেন।
শফিউল আলম বলেন, বন্দর শ্রমিক লীগ ও আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতা এবং তাদের সহযোগীদের ছত্রছায়ায় গত ৭-৮ বছর ধরে টোল রোডের দু‘পাশে পতিতা ও মাদকের আস্তানা গড়ে তোলা হয়। ফলে স্থানীয় লোকজন এ নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলে কিছু বলারও সাহস করত না। তাই অতিষ্ঠ জনগণ পতিতা ও মাদকের আস্তানা উচ্ছেদে একের পর এক আবেদন জমা দিয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও সংস্থার কাছে। অবশেষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন অপরাধের স্বর্গরাজ্য এসব আস্তানা উচ্ছেদ করলো। এতে খুশি স্থানীয় লোকজন।
| M | T | W | T | F | S | S |
|---|---|---|---|---|---|---|
| 1 | 2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 |
| 8 | 9 | 10 | 11 | 12 | 13 | 14 |
| 15 | 16 | 17 | 18 | 19 | 20 | 21 |
| 22 | 23 | 24 | 25 | 26 | 27 | 28 |
| 29 | 30 | 31 | ||||
