সড়ক পরিবহনের শ্রমিকরা নিয়োগপত্র পেতে যাচ্ছেন । বিশেষ করে চালক ও হেলপারদের দেয়া হবে ওই পরিচয়পত্র। এ বিষয়ে শ্রম বিভাগকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তারা মালিক ও শ্রমিক দুই পক্ষকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেবে। সংসদীয় কমিটি শ্রম বিভাগকে এ বিষয়টি নিবিড়ভাবে তদারকি করতে বলেছে। গতকাল সংসদ সচিবালয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে এ তথ্য জানানো হয়। সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খান, সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খোন্দকার এনায়েত উল্ল্যাহসহ মালিক-শ্রমিক প্রতিনিধিরাও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। কমিটি জানিয়েছে, বৈঠকে মালিক পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে সড়ক পরিবহন শ্রমিকদের (ড্রাইভার ও শ্রমিক) নিয়োগপত্র দেয়া হবে। এ বিষয়টি বাস্তবায়ন করার নিমিত্তে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের পত্র দেয়ার জন্য কমিটি সুপারিশ করে। মুজিবুল হক এর সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান,শাজাহান খান,মোঃ ইসরাফিল আলম এবং শামসুন নাহার অংশগ্রহণ করেন। সংসদীয় কমিটির বৈঠকে উপস্থিত হয়ে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের নিয়োগপত্র দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। পাশাপাশি শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধিও এই নিয়োগপত্র গ্রহণে রাজি হয়েছে। পরিবহন শ্রমিকদের নিয়োগপত্র প্রদান ও ব্যক্তি মালিকানাধীন সড়ক পরিবহন শ্রমিক কল্যাণ তহবিল বোর্ডের কার্যক্রমের বিষয়ে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের ডাকা হয়। বৈঠকে নিয়োগপত্র দেয়া-নেয়া নিয়ে মালিক ও শ্রমিক দুই পক্ষই একে অন্যকে দোষারোপ করে। শ্রমিকপক্ষ অভিযোগ করে, মালিকরা তাদের নিয়োগপত্র দিতে অনীহা প্রকাশ করে। কারণ, মালিকপক্ষ মনে করে, দুর্ঘটনা বা অন্য কোনও সমস্যা হলে, তার দায় তাদের ওপর বর্তাবে। বিপরীতে মালিক প্রতিনিধিও পাল্টা অভিযোগ তুলে বলেন, শ্রমিকরা সাধারণত ঘন ঘন কোম্পানি বা পরিবহন পরিবর্তন করেন, যে কারণে তারা নিয়োগপত্র নিতে চান না। এ প্রসঙ্গে কমিটির সভাপতি মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, পরিবহন শ্রমিকদের নিয়োগপত্র প্রদান ও সড়ক পরিবহন শ্রমিক কল্যাণ তহবিল বোর্ডের কার্যক্রম নিয়ে আলোচনার জন্য বৈঠকে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের ডাকা হয়েছিল।

আইনেই নিয়োগপত্র দেয়ার কথা রয়েছে। পরিবহনের রুট পারমিটের জন্য আবেদনের সঙ্গে চালকের নিয়োগপত্র যুক্ত করতে হয়। কিন্তু মালিক ও শ্রমিক দুই পক্ষের অনীহার কারণেই এটার বাস্তবায়ন হচ্ছে না। তিনি বলেন, আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে দুইপক্ষই একমত হয়েছে। এখন থেকে মালিকরা নিয়োগপত্র দেবেন এবং শ্রমিকরা নেবেন। সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বৈঠকে ব্যক্তি মালিকানাধীন সড়ক পরিবহন শ্রমিক কল্যাণ তহবিল বোর্ডকে আরও যুগোপযোগী ও বাস্তবসম্মত করার লক্ষ্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবকে আহ্বায়ক করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং বিআরটিএ’র প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন এবং এই কমিটির সুপারিশ পরবর্তীতে সংসদীয় কমিটিতে উপস্থাপন করার জন্য সুপারিশ করা হয়। এতে আরও জানানো হয়, শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডে সংঘটিত দুর্ঘটনায় ২০১৯ সালে নিহত ১৯ জন শ্রমিকের পরিবারকে মালিক পক্ষ থেকে এক কোটি ১৪ লাখ টাকা,২০১৮ সালে ১৭ জন শ্রমিকের পরিবারকে ৮৫ লাখ টাকা এবং ২০১৭ সালে ১৬ জন শ্রমিকের পরিবারকে ৮০ কোটি ২৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়েছে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031