গোটা বিশ্ব করোনা আতঙ্কে বিধ্বস্ত। সব প্রান্তের মানুষই চাতক পাখির মতো ভ্যাকসিনের আশায় বসে রয়েছে। আশামূলক ফল মিললেও যতক্ষণ না হাতের মুঠোয় ভ্যাকসিন আসছে শান্তি নেই আম জনতার। করোনার ভ্যাকসিন তৈরি করতে ইঁদুর দৌড়ে নেমেছে বিশ্বের তাবড়-তাবড় সংস্থা। ব্যতিক্রম নয়, জনসন অ্যান্ড জনসন -ও। করোনা প্রতিষেধকের হিউম্যান ট্র্যায়াল শুরু করেছে Johnson & Johnson। জুলাই থেকেই শুরু হয়েছে Johnson & Johnson-এর করোনা টিকার হিউম্যান ট্রায়াল। সংস্থা জানিয়েছে, ২০২১ সালের মধ্যেই ১০০ কোটি ডোজ তৈরির প্রস্তুতিও শুরু করে দেয়া হয়েছে।

তাদের তৈরি এক ডোজের কোভিড ভ্যাকসিনের প্রথম ট্রায়ালে ইতিবাচক ফল মিলেছে বলে খবর। সম্প্রতি প্রকাশিত ট্রায়ালের একটি রেজাল্টে জানানো হয়, এই ভ্যাকসিনের প্রয়োগে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ছে। তবে বেশকিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও দেখা দিচ্ছে। প্রকাশিত রেজাল্ট অনুযায়ী, জনসন অ্যান্ড জনসন AD26.COV2.S ভ্যাকসিনের ট্রায়াল চালাচ্ছে। ভ্যাকসিনটির দুটি ডোজ ও একটি ডোজের মধ্যে কী পার্থক্য রয়েছে, তা দেখতে আলাদা আলাদাভাবে পরীক্ষা করে দেখছে মডার্না ও ফাইজার নামের দু’টি সংস্থা। তবে সব বয়সের মানুষের দেহে এই ভ্যাকসিন সমানভাবে কার্যকর হবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। প্রসঙ্গত, জুলাই মাসে এই ভ্যাকসিন আবিষ্কার করে জনসন অ্যান্ড জনসন। প্রথা মেনে প্রথমে বাঁদরদের শরীরে তা প্রয়োগ করা হয়। সেই পরীক্ষায় ইতিবাচক ফল মিলতে আমেরিকার হাজার-হাজার তরুণ-তরুণীর উপর এই ভ্যাকসিন পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হয়। তাতেও ভালই ফল মিলেছে বলে দাবি সংস্থার। সেই ফলের উপর নির্ভর করে তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু করেছে জনসন অ্যান্ড জনসন। জানা গিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং বেলজিয়ামে চলছে করোনা প্রতিষেধকের এই ট্রায়াল। টিকার হিউম্যান ট্রায়ালের আগে ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজ’-এর সঙ্গেও আলোচনা চালিয়েছে Johnson & Johnson। প্রতিষেধকের পরীক্ষার ফলাফল আর নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনের পর জোর কদমে উৎপাদনের কাজ শুরু করতে চায় এই মার্কিন সংস্থা। এই পর্যায়ে ৬০ হাজার তরুণ-তরুণীর উপর ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়েছে। যার ফল চলতি বছরের শেষে অথবা আগামী বছরের প্রথমেই পাওয়া যাবে বলে সংস্থা সূত্রে খবর। মেডিকেল ওয়েবসাইট medRxiv -এ ট্রায়ালের সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী এই রিপোর্ট তৈরী করেছে রয়টার্স। জনসন অ্যান্ড জনসন সূত্রে খবর, ৯৮ শতাংশ স্বেচ্ছাসেবকের শরীরে করোনার বিরুদ্ধে মোকাবিলা করতে সক্ষম এমন এন্টিবডি তৈরি হয়েছে। ভ্যাকসিন দেয়ার ২৯ দিন পরে এই এন্টিবডি তৈরি হচ্ছে। অবশ্য ৬৫ বছরের বেশি বয়স্ক মানুষদের মধ্যে মাত্র ১৫ জনের শরীরে এন্টিবডি তৈরি হয়েছে বলে জানা গেছে। আবার অল্পবয়সীদের শরীর এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও দেখা দিয়েছে। যা চিন্তায় রাখছে গবেষকদের। দেখা গেছে, ৬৫ বছরের বেশি বয়স্কদের ৩৬ শতাংশ ভলান্টিয়ারদের মধ্যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যেমন মাথা ধরা ও পেশিতে ব্যথা দেখা দিচ্ছে। অথচ অল্পবয়স্ক ভলান্টিয়ারদের মধ্যে সেটা ৬৪ শতাংশের শরীরে দেখা যাচ্ছে। এই দিকটাই এখন ভাবাচ্ছে গবেষকদের।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031