উন্নয়ন কাজের ব্যবহার নামে এই সব বোল্ডার পাথর মেশিনে ভেঙে কংক্রিট করে ট্রাকযোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার হয়ে যাচ্ছে।বান্দরবান জেলা সদরসহ সাতটি উপজেলায় বিভিন্ন খাল ও ঝিরি-ঝর্ণা থেকে আড়ালে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করে পাচার করা হচ্ছে অবাধে । পাথর আহরণ অব্যাহত থাকায় পাহাড়ি এলাকায় ছড়া-ঝিরিগুলোতে পানি প্রবাহের উৎস বন্ধ হয়ে যাবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় একটি সিন্ডিকেট চক্র সরকারি দলের নাম ভাঙিয়ে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করে পাচার করে যাচ্ছেন।

বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাইতং,আজিজনগর,ফাসিয়াখালীসহ রুমা, থানছি, রোয়াংছড়ি, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি এবং সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে পাথর উত্তোলন করে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার অব্যাহত রয়েছে।

এলাকাবাসীর সূত্র মতে, এলাকায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অতিমাত্রায় পাহাড় কেটে, মাটি খুঁড়ে, ঝিড়ি ঝর্ণা থেকে পাথর আহরণ করায় পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। পাশাপাশি অত্র অঞ্চলে মানুষের বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। ঝিরি ও পাহাড় খুঁড়ে পাথর উত্তোলনের ফলে এলাকায় দেখা দিয়েছে চরম পানির অভাব। শুষ্ক মৌসুম আসতেই নলকূপ ও রিংওয়েলে পানি উঠা বন্ধ হয়ে যায়।

তাদের মতে, বিভিন্ন খাল ও ঝিরি-ঝর্ণা থেকে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে পাথর উত্তোলন চলছে। পাহারে বিতরে প্রশাসনের কর্মকর্তারা না আসায় পাথর উত্তোলনের একটি সুবিধা স্থান বলে মনে করছেন ঠিকাদার কাজে নিয়োজিত শ্রমিক ও পাচারকারীরা।

রোয়াংছড়ি উপজেলার বাসিন্দা অংশৈমং মারমা অভিযোগ করে বলেন, সরকারিভাবে খাল-ঝিড়ি থেকে পাথর উত্তোলনের অনুমতি যদি দিয়ে থাকে- তাহলে তার কতখানি তা প্রশাসনের তদারকির দরকার রয়েছে। তবে অনুমতি প্রদানের মেয়াদ, পরিমাণের অধিক যদি উত্তোলন করা হয়, তাহলে তা অবশ্যই প্রাকৃতিক সম্পদের উপর প্রভাব এবং এলাকায় পানি সংকটসহ নানামুখী সমস্যা দেখা দিতে পারে।

এ বিষয়ে পার্বত্য ভূমি বন সংরক্ষণ কমিটির বান্দরবানের চ্যাপ্টারের নেতা জুয়ামলিয়ান অম্লাই জানান, প্রাকৃতিকসম্পদ সংরক্ষণ বিষয়ে সরকারের স্বাদিচ্ছা কম। যদি জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশসন, স্থানীয় প্রশাসনও ঐতিহ্যতগত সামাজিক নেতৃবৃন্দরা সচেতন হন- তাহলে এসব সম্ভবনাও নেই। কারণ তারা যদি চাই এসব বন্ধ হবে।

পাহাড়ে পাথর উত্তোলন বন্ধ না করলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ব্যাপক ক্ষতির আশংকা রয়েছে।

এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সোহরাব হোসেন জানান, প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হওয়া ছাড়াও আশে-পাশে পাহাড়গুলোতে পানি সংকটসহ বনের জীববৈচিত্র্য হুমকি মুখে পড়েছে। পাহাড় খুঁড়ে পাথর উত্তোলন বন্ধ না হলে অচিরেই পাহাড়ি এলাকা পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।

পাথর উত্তোলনের বিষয়ে জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বনিক বলেন, পাথর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক সম্পদ এবং এইটি আমাদের জনজীবনে প্রয়োজনও আছে। তবে যদি অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন হয়ে থাকে, তাহলে শিগগির ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সমাধান কার হবে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031