অন্য এক সংসার নিয়ে পালিয়ে যায় ষাটোর্ধ্ব আকলিমা বেগম দীর্ঘ দুই যুগ পূর্বে স্বামী সংসার ফেলে। আকলিমা বেগমের ওই স্বামীর সংসারে আবুল কালাম (৪৭) ও রুবি আকতার নামে দুটি সন্তান রয়েছে। মানুষের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে সন্তানগুলোকে বড় করে তোলেন তিনি। বছর কয়েক আগে কন্যার বিয়ে হয়ে যায়। চলাফেরার নির্ভর করে তার ওপর। আকলিমা বেগমের নামে নিজস্ব প্লট থাকা সত্ত্বেও মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়নি। প্লটে রয়েছে সুন্দর একটি সেসিপাকা ঘর। যদিও ঘর তৈরিতে রয়েছে আকলিমা বেগমের কন্টিবিউশন।

কিন্তু ঠাঁই হয়েছে একটি জরাজীর্ণ রান্নার ঘরের এক কোণে। দীর্ঘ কয়েক বছর এভাবেই জীবনযাপন করছে। কিন্তু তার সেই খতিয়ান ভুক্ত জায়গায় সেমিপাকা ঘর তৈরি করে পরিবার নিয়ে বসবাস করছে তার ছেলে। এতেই আকলিমা বেগম সন্তুষ্টি হয়ে জীবন পার করছে জরাজীর্ণ রান্নাঘরে। হঠাৎ সন্তানের সাথে সকালে মায়ের ঝগড়া, ক্ষিপ্ত হয়ে সেই আশ্রয়স্থল রান্নার ঘর থেকেও বের করে দেয় আদরের সন্তান আবুল কালাম ও তার স্ত্রী। অসহায় বৃদ্ধা অশ্রুসিক্ত নয়নে হাজির হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে।

এমন হৃদয় বিদারক ঘটনাটি চট্টগ্রামের হাটহাজারী পৌরসভার আদর্শগ্রামের দক্ষিণ পাহাড়ের মাছুম ফকিরের বাড়িতে ঘটে। অসহায় আকলিমা বেগমের অভিযোগ শুনে মুহূর্তেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন। ঘটনাস্থলে সত্যতা পেয়ে আকলিমা বেগমের সেই ঘরে তুলে দিয়েছেন। আনন্দে অশ্রুসিক্ত অবস্থায় বৃদ্ধা মহিলাটির মুখে হাসি ফুঁটেছে হারানো ঘর ফিরে পেয়ে।
বৃদ্ধা ওই মহিলাটি বলেন, আমি অসহায় দরিদ্র। আমার নিজস্ব জায়গা আছে, ছেলে মেয়ে থাকার পরেও জরাজীর্ণ রান্নার ঘরের এক কোণে আমার বসবাস প্রায় ৬/৭ বছর ধরে। তারপরেও আমি সন্তুষ্টি ছিলাম। শনিবার সকালে ছেলের সাথে ঝগড়া হওয়াতে সেই রান্নার ঘর থেকেও বের করে দেয়। আমার জিনিসপত্র সব বাইরে ফেলে দেয়। আমি নিরুপায় হয়ে ইউএনও স্যারের কাছে ছুটে গেলে তিনি আমার ঘরে আমাকে তুলে দেন। আমি অনেক খুশি।

হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুহুল আমিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার মানবজমিন কে জানান, গর্ভধারিণী বৃদ্ধা মাকে নিজের ঘর থেকে বের করে দেয়ার দুঃখজনক কথাগুলো শুনে দ্রুত ওই এলাকায় গিয়ে বৃদ্ধা মহিলাটিকে তার ঘরে তুলে দেই।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031