সামাজিক বাধা ও আর্থিক সংকটের কারণে করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃত আরাফাত হোসেনের (১৭) লাশ দাফন করতে নিতে রাজি হয়নি তার পিতা করোনা আতংক। অবশেষে ময়মনসিংহের এপেক্স ক্লাব অব ব্রহ্মপুত্র ও হেল্প প্লাস এর আর্থিক এবং সার্বিক সহযোগিতায় ও আজ বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে মৃত্যুর ৪২ দিন পর ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিম ঘরে থেকে আরাফাতের লাশ তার দরিদ্র পিতা মজনু মিয়া গ্রামের বাড়ি ত্রিশাল নিয়ে গেছেন। এতথ্য নিশ্চিত করেছেন এপেক্স ক্লাব অব ব্রহ্মপুত্র এর সভাপতি ও সুজন মহানগরের সাধারণ সম্পাদক কবি আলী ইউসুফ ও সাফরান আহমেদ । ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমঘরে ৪২ দিন আরাফাতের লাশ রাখার পর ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার চড়ুইতলা গ্রামের মৃতের বাবা মজনু মিয়া বুধবার ৩ জুন পুলিশকে লিখিতভাবে জানান, ছেলের লাশ গ্রহন করবেন না। আবেদনে মৃতের বাবা উল্লেখ করেন পরিবার এবং এলাকাবাসীর নিরাপত্তার কথা ভেবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কোতোয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ফিরোজ তালুকদার জানান ধর্মীয় নিয়মানুযায়ী বৃহস্পতিবার নগরীর ভাটিকাশর গোরস্থানে লাশ দাফন করার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়। এ খবরে পেয়ে ময়মনসিংহ সামাজিক সংগঠন এপেক্স ক্লাব অব ব্রহ্মপুত্র ও হেল্প প্লাস নেতৃবৃন্দ এগিয়ে আসে । মৃত আরাফাতের বাবার সাথে ফোনে কথা বললে সে জানান, আর্থিক ও সামাজিক কারণে সন্তানের লাশ নিতে রাজি হয়নি।

আলী ইউসুফ এব্যাপারে ত্রিশাল পৌরসভার মেয়র আনিসুর রহমানের সাথে কথা বলে সামাজিক আতংক দুর করতে তার সহযোগিতা কামনা করেন। এক পর্যায়ে মেয়র দাফন কাফনের সহয়োগিতা করতে রাজি হন এবং সংগঠন ২টি আর্থিকভাবে সহযোগিতার আশ্বাস দিলে আরাফাতের দরিদ্র বাবা লাশ নিতে রাজি হয়। কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি ফিরোজ তালুকদার ও দাফন কাফনের দায়িত্বপ্রাপ্ত এস আই আনোয়ার হোসেন সার্বিক সহযোগিতায় লাশ বাবা হাতে হস্তান্তর করা হয়। লাশ বহনকারী গাড়ির ভাড়া ও দাফন কাফনের খরচ বহন করে উল্লেখিত ২টি সংগঠন । ময়মনসিংহ সিভিল সার্জন একেএম মশিউল আলম জানান, গত ২০ এপ্রিল ময়মনসিংহ নগরীর এস কে (সূর্য্য কান্ত) হাসপাতালে করোনার উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়ে দুই দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় আরাফাত হোসেন (১৭) নামের ঐ কিশোর। মৃত্যুর পর নমুনা পরীক্ষায় আরাফাতের শরীরে কোভিড-১৯ ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি। কিন্ত তার পরিবারের লোকজন লাশ নিতে আসেনি।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031