ঢাকা : রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) আগে থেকে ঘোষণাও দিয়েছিল।কথা ছিল আজ থেকে আবাসিক এলাকার অনাবাসিক স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান হবে।  কিন্তু রাজউক জানিয়েছে, তারা আজ অভিযানে নামতে পারছে না। অভিযান দলে নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ সদস্য থাকার কথা ছিল। পুলিশ চেয়ে সংশ্লিষ্টদপ্তরে আবেদন করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি। যে কারণে, পূর্বঘোষিত অভিযান স্থগিত করা হয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, তারা রাজউকের কোনো চিঠি পায়নি।

আবাসিক এলাকা থেকে অনাবাসিক স্থাপনা উচ্ছেদের বিষয়ে অনেক আগে থেকেই বলা হচ্ছিল। গত ১ জুলাই গুলশানের হোলি আর্টিজান রেস্তোরায় জঙ্গি হামলার পর ঘোষণা আসে যতদ্রুত সম্ভব অভিযান শুরু হবে। রাজউক জানিয়েছিল, ২৪ জুলাই উত্তরা এবং ধানমন্ডি থেকে তারা এই কার্যক্রম শুরু করবে এবং পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন এলাকায় এই উচ্ছেদ অভিযান চলবে।

আবাসিক এলাকা থেকে যেসব প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদের কথা বলা হচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে রেস্তোরাঁ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ক্লিনিক, হাসপাতালসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান।

জানতে চাইলে রাজউকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আতিকুর রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘অভিযানে নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ সদস্য চেয়ে চিঠি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু পাওয়া যায়নি। এমনকি কী কারণে দেরি হচ্ছে তাও জানানো হয়নি। যে কারণে আজকের অভিযান আর হচ্ছে না।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পুলিশ সদরপ্তরের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুক্তা ধর ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ঢাকায় যেকোনো অভিযানে নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ প্রয়োজন হলে নিয়ম হচ্ছে কমিশমনার দপ্তরে আবেদন করা। তারা পুলিশের সংশ্লিষ্ট জোনে কিংবা থানায় চিঠি দিয়ে বিষয়টি অবগত করবে।’

তবে পুলিশের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তারা রাজউকের চিঠির ব্যাপারে কিছু জানেন না। এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম শাখার অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মুহাম্মদ ইউসূফ আলী বলেন, ‘রাজউক কাকে কীভাবে চিঠি দিয়েছে আমি তা জানি না। খোঁজ নিয়ে জানাতে হবে।’

পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মো. মারুফ হোসেন সর্দার ঢাকাটাইমসকে বলেন, রাজউক থেকে তিনি কোনো চিঠি পাননি। কিংবা তার দপ্তরে এ ধরনের আবেদন আসলে তিনি জানতেন।

পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার বিধান চন্দ্র ত্রিপুরাকে ফোন করা হলে তিনি খুদেবার্তার মাধ্যমে জানান, তিনি মিটিংয়ে আছেন।

এর আগে রাজউক চেয়ারম্যান বজলুল করিম চৌধুরী বলেন, ঢাকার বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় তারা এক হাজার ৬০০ অনাবাসিক স্থাপনা চিহ্নিত করেছেন এবং এই তালিকা তৈরির কাজ এখনো চলছে। তিনি বলেন, আমাদের আবাসিক এলাকায় কোনো অনাবাসিক স্থাপনা করা যাবে না এবং সময়ে সময়ে রাজউক তার পরিকল্পিত আবাসিক এলাকাগুলোতে অভিযান পরিচালনা করে আসছে।

অনাবাসিক প্রতিষ্ঠান সরিয়ে দিলে সেটি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় কী ধরনের ভূমিকা রাখবে এ বিষয়ে বজলুল করিম চৌধুরী বলেন, বিষয়টি নিয়ে পুলিশও কাজ করছে। তারা এটা নিয়ে ভালো বলতে পারবে।

এর আগে আবাসিক এলাকা থেকে বাণিজ্যিক স্থাপনা সরানোর বিষয়ে একটি নোটিশ দেয় রাজউক। রাজউকের তালিকায় যেসব প্রতিষ্ঠানের নাম উঠে এসেছে তার অনেকগুলো বহু বছর যাবত ব্যবসা করে আসছে।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের নভেম্বরে এ ধরনের স্থাপনা উচ্ছেদে একটি টাস্কফোর্স গঠিত হয়। টাস্কফোর্সের আওতায় এর আগে কিছু উচ্ছেদ কার্যক্রম চালানো হয়। কদিন যেতে না যেতেই তা বন্ধ হয়ে যায়।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031