portcity

গত ১৩ মে শুক্রবার নগরীর পোর্ট সিটি ইন্টারনাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ক্লাস করতে এসে নিখোঁজ পটিয়ার আবুল কালাম আজাদের মেয়ে মুন্নি আক্তার (২৪)। পরদিন শনিবার দুপুরে নগরীর খুলশী থানায় একটি নিখোজ ডায়েরী করেন মুন্নির মা হোসনে আরা। এ সময় তার সাথে ছিলেন মুন্নির বন্ধু টিটুল, মারুফ, জ্যোতি ও প্রেমিক মাহবুব মাওলা।

বাবা-মা, প্রতিবেশী, গ্রামের মানুষের কাছে অত্যন্ত শালিন ও ভদ্র স্বভাবের মেয়ে হিসেবে পরিচিত নগরীর পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী মুন্নি আক্তার খুন হয়েছেন একাধিক প্রেমের সম্পর্কের কারণে। তবে পাশাপাশি পারিবারিক কলহের বিষয়টিকে মাথায় রেখেছেন – এমনটাই জানালেন সীতাকুণ্ড মডেল থানার উপপরিদর্শক ও মুন্নি হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন।

তিনি বলেন, নিহত মুন্নির সাথে একাধিক ছেলের প্রেমঘটিত সম্পর্ক ছিলো। প্রেমঘটিত বিষয়ে প্রতিশোধ নিতে মুন্নিকে হত্যা করা হতে পারে। এছাড়া মুন্নিদের গ্রামের বাড়িতে জায়গা-সম্পত্তি নিয়েও কিছু ঝামেলা রয়েছে সে কারণে মুন্নিকে হত্যা করা হয়েছে কিনা সে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

ঐদিন বিকেলে সীতাকুণ্ড ইকোপার্ক ও বোটানিক্যাল গার্ডেনের খাদ থেকে অজ্ঞাত নামা এক তরুণীর মৃতদেহ উদ্ধার করে সীতাকুণ্ড থানা পুলিশ। এলোপাতাড়ি ছুরির আঘাতে হত্যা করা হয় তরুনীকে। সীতাকুণ্ড থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারীরা মুন্নিকে হত্যা করে পার্কের খাদে ফেলে যায়।

portcity3

অনলাইনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদটি প্রচার হলে পরদিন রোববার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে গিয়ে লাশটি মুন্নির বলে সনাক্ত করে পরিবার। নিহত মুন্নি নগরীর পোর্ট সিটি ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ১৩ মে শুক্রবার নগরীর মিয়াখান নগর এলাকা খালার বাসা থেকে পোর্ট সিটি ইউনিভার্সিটিতে ক্লাস করতে আসেন মুন্নি। সকাল নয়টার দিকে সহপাঠিদের সাথে এক সঙ্গে ক্লাসে ঢুকেন মুন্নি। বেলা সাড়ে ১০টার দিকে ক্লাস থেকে বেড় হয়ে দুপুর বারটা পর্যন্ত ইউনির্ভাসিটির সামনেই বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয় সে। এ সময় মুন্নির সাথে ছিলো বর্তমান প্রেমিক একই ইউনিভার্সিটির ছাত্র মাহবুবুল মওলা।

সিটিজি নিউজকে মওলা জানান, সকাল সাড়ে দশটার দিকে মুন্নি আমাকে জানায় সে তার বান্ধবীর সাথে মেলাতে ঘুরতে যাবে। সেকারণে মুন্নিকে ভার্সিটিতে রেখেই আমি বাসায় চলে আসি। মুন্নি কোন মেলাতে যাবে বলেছে এমন প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যান মাওলা।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পোর্ট ইউনির্ভাসিটির এক ছাত্র সিটিজি নিউজকে জানান, দূপুর সাড়ে ১২ দিকে মাওলা ও মুন্নি এক সাথেই ইউনিভার্সিটি থেকে বেড় হয়েছে।

তবে বিষয়টি অস্বীকার করে মাহবুব মওলা সিটিজি নিউজকে জানান, আমি সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ইউনিভার্সিটি থেকে বাসায় চলে আসছি।

এদিকে নিখোঁজ ডায়েরী করতে খুলশি থানায় গিয়ে ভুল তথ্য দিয়েছে নিহত মুন্নির প্রেমিক মাওলা ও তার বন্ধুরা।

জিডি’র তদন্তকারী কর্মকর্তা খুলশী থানার উপ-পরিদর্শক নুর উদ্দিন সিটিজি নিউজকে বলেন, মুন্নির প্রেমিক মাওলা ও বন্ধুরা জানান, মুন্নির সাথে তাদের শেষ দেখা হয়েছিলো শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে ক্লাস শুরু হওয়ার আগে। খুলশী থানা ও এ প্রতিবেদকের কাছে মাওলার দেয়া তথ্যে ব্যপক গরমিল খুঁজে পায় সিটিজি নিউজ।

মাওলার সাথে মুন্নির প্রেমের সম্পর্কেও কথা জেনেও তা অস্বীকার করেন মুন্নির মা হোসনে আরা। তিনি বলেন, মাওলার সাথে মুন্নির কোনো সম্পর্ক ছিলোনা। আমার মেয়ে খুব শান্তিশিষ্ট ছিলো-কারো সাথে তার কোনো সম্পর্ক ছিলোনা।

তবে মুন্নির মা আরও জানান, শুক্রবার দুপুরে তিনজন ছেলে ও একজন মেয়ের সাথে মুন্নি ইকো পার্কে গিয়েছে বলে তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছেন। তবে তারা কারা সে বিষয়ে কিছুই বলতে পারেননি তিনি। তিনি বলেন, আমার মেয়েকে ইউনিভার্সিটির বন্ধুরাই মেরেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার হাফিজ আক্তার বলেন, মুন্নি হত্যাকাণ্ডটি একাধীক প্রেমঘটিত। তবে কারা মুন্নিকে হত্যা করেছে এ বিষয়টি নিশ্চিত হতে আরও কিছু সময় লাগবে।

তবে অনুসন্ধানে জানা গেছে, মাহবুব মাওলা ছাড়াও ৩ থেকে ৪ যুবকের সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো মুন্নির। তাদের মধ্যে কেউ প্রতিশোধ নিতেই এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটিয়েছে।

একাধিক জনের সাথে মুন্নির প্রেমের সম্পর্ক ছিলো জানিয়ে বর্তমান প্রেমিক মাহবুব মাওলা বলেন, আমার আগে মুন্নির সাথে আরও কয়েকজনের সম্পর্ক ছিলো।portcity portcity3

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031