প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা নেপালে বাংলাদেশি বিমান বিধ্বস্তে হতাহত পরিবারের পাশে দাঁড়াতে দলীয় সংসদ সদস্য নেতাকর্মীদেরও নির্দেশ দিয়েছেন ।

বুধবার সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের এক জরুরি যৌথসভায় সূচনা বক্তব্যে শেখ হাসিনা এই নির্দেশ দেন।

১২ মার্চ নেপালের ত্রিভূবন বিমানবন্দরে অবতরণের সময় বেসরকারি এয়ারলাইন্স ইউএস বাংলার একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে ৫১ জন নিহত হয়েছে, যাদের ২৬ জনই বাংলাদেশি। হাসসপাতালে আছেন আরও ১০ বালাদেশি।

এই দুর্ঘটনার দিন প্রধানমন্ত্রী চার দিনের সফরে ছিলেন সিঙ্গাপুরে। সেদিনই তিনি সফর একদিন সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন আর মঙ্গলবার তিনি দেশে পৌঁছেন।

বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক জরুরি বৈঠকে বৃহস্পতিবার দেশে রাষ্ট্রীয় শোক পালনের সিদ্ধঅন্ত হয। শুক্রবার সারাদেশের সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে হবে মোনাজাত ও প্রার্থনা।

দলীয় বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিমান দুর্ঘটনার পরই আমি সিঙ্গাপুর সফর বাতিল করে দেশে ফিরে আসি। আমার মনে হয়েছিল, এই সময় আমার দেশে থাকা প্রয়োজন। কারণ বহু বছর আমাদের দেশে এররম ঘটনা ঘটেনি। বিমান দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেনি।’

সকালের বৈঠকের সিদ্ধান্ত তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নেপালে একটি মেডিকেল টিম এবং ডিএনএ সংগ্রহের জন্য একটি বিশেষজ্ঞ টিম পাঠানো হচ্ছে। কারণ, আগুনে পোড়া কিছু লাশ ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়া শনাক্ত করা কঠিন। তাছাড়া আমরা নেপালে খুব বেশি লোক পাঠাতে পারব না। কারণ তাদের ওপর চাপ পড়ে যাবে। তবে যা যা লাগবে তার সহায়তা আমরা দেবো।’

দুর্ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যের বিষয়’ আখ্যা দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা নিহত হয়েছে তাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করার জন্য আমি ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট এলাকার আমাদের দলের এমপি এবং নেতাদের নিদের্শ দিয়েছি। তাদের কী প্রয়োজন, কী সহায়তা করা যেতে পারে সে ব্যাপারে দেখা করে খোজ নিতে বলেছি।’

আাওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিআরআই এর এক কর্মকর্তা, তার স্ত্রী ও শিশু সন্তান মারা গেছে বলে জানান শেখ হাসিনা। বলেন, ‘আহতদের অবস্থা খুবই খারাপ। অনেকের অবস্থা এমন যে ওখান থেকে নিয়ে আসারও উপায় নেই। ইতিমধ্যে আমাদের বিমানমন্ত্রী নেপালে গেছেন। নেপালের প্রধামন্ত্রীর সাথে তিনি দেখা করেছেন। করণীয় বিষয়ে আলোচনা করছেন তিনি।’

বাংলাদেশিদের পাশাপাশি বাংলাদেশে পড়তে আসা নেপালি ছাত্রদের মৃত্যুতেও শোক জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘তারা আমাদের দেশে মেডিকেল পড়ে ডাক্তার হতে এসেছিল। এমবিবিএস পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি যাচ্ছিল। আজকে তারাও নেই। ফুল না ফুটতেই ঝরে গেল।’

বৈঠকে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের মধ্যে এইচ টি ইমাম, ওবায়দুল কাদের, মতিয়া চৌধুরী, সাহারা খাতুন, রাশিদুল আলম, মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, খালিদ মাহমদু চৌধুরী, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ফরিদুন্নাহার লাইলী, দেলোয়ার হোসোন, এস এম কামাল হোসেন, ওমর ফারুক চৌধুরী, মোল্লা আবু কাওছার, অপু উকিল, ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, এস এম জাকির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে যথাসম্ভব আড়ম্বর এড়ানোর চেষ্টা করা হয়। চেয়ার টেবিল ছাড়াই কয়েকটি সোফা এবং প্লাস্টিকের চেয়ারে বসে বৈঠক করেন নেতারা। প্রধানমন্ত্রী ও ওবায়দুল কাদের বসে ছিলেন অন্যান্য নেতাদের সমান্তরাল ছোট্ট একটি টেবিলসদৃশ মঞ্চে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031