ফকির আলমগীর বাংলাদেশের গণসংগীতের কিংবদন্তি শিল্পী । ষাটের দশক থেকে তিনি গান করছেন। দেশের সব ঐতিহাসিক আন্দোলনে গান দিয়ে মানুষকে উজ্জীবিত করার চেষ্টা করেছেন। ৬৯ এর গণ অভ্যুথান, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ ও ৯০ এর সামরিক শাসন বিরোধী গণ আন্দোলনে তিনি সামিল হয়েছিলেন নিজের গান দিয়ে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলা পপ গানের বিকাশেও তার রয়েছে বিশেষ অবদান। আজ ১৬ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। এ দিবসে একজন শিল্পী হিসেবে আপনার প্রত্যাশা কি?উত্তরে এই শিল্পী বলেন, আমাদের বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন ও ষাটের দশকের আন্দোলনের পূর্ণ পরিণত রূপ হচ্ছে মহান মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সুরক্ষা করার জন্য মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ ও স্বাধীনতা বিরোধীদের প্রতিহত করার শপথ নিয়ে প্রতিটি বিজয় দিবস পালন হোক।

এটাই আমার প্রত্যাশা। মুক্তিযুদ্ধে শিল্পীদের সংগ্রাম ও অবদান কতটুকু বা কেমন ছিল? ফকির আলমগীর বলেন, এক সাগর রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা এসেছে। যারা আমাদের পথ দেখাতো সেসব বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছে। আমাদের বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চের ভাষণে বলেছিলেন এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। সেই ভাষণে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমরা তরুণরা তখন যুদ্ধের প্রস্তুতি নিই। ২১ বছর বয়সে যুদ্ধে গিয়েছি। আমি তখন ছিলাম ঢাকার খিলগাঁও এলাকায়। যখন অপারেশন সার্চলাইট হয়েছিল তখন কত  আহত অবস্থায় থাকা পুলিশকে সেবা করেছি তার হিসেব নেই। তখন কারফিউ ছিল, কারফিউ ওঠানোর পর আমার গ্রামের বাড়ি ফরিদপুর থানার কালামের্দা গ্রামে যাই। সেখানে গ্রামের তরুণ ও শহর থেকে যারা শরনার্থী গেছে তাদের সংগঠিত করেছি। সাহায্য করেছি সাধ্য মতো। রাজাকার আলবদর যারা মানুষকে অত্যাচার করেছে তাদের প্রতিহত করেছি। গানেও তো আপনার একটা অবদান ছিল। সে প্রসঙ্গে জানতে চাই। ফকির আলমগীর বলেন, অস্ত্র হাতে যেমন যুদ্ধ করেছি তেমনি গান করেও অবদান রাখার চেষ্টা করেছি। বিভিন্ন জায়গায় গান করে টাকা তুলেছিলাম। বিশেষ করে জর্জ হ্যারিসন, রবি শংকররা কনসার্ট ফর বাংলাদেশ করেছিল, সেখান থেকে টাকা তুলে তারা শরনার্থিদের দিয়েছিলো। সেটা আমাদের অনুপ্রাণিত করেছিলো। এখন গানের কি অবস্থা? ফকির আলমগীর বলেন, এখনও গান করে যাচ্ছি। করোনার এই সময়ে অনুষ্ঠানে গাইছি কম। আর গান প্রকাশও নিয়মিত চলছে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031