বিশিষ্ট আইনজীবী এম আমীর উল ইসলাম অধস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা ও আচরণ বিধিমালা তৈরি করতে আইন মন্ত্রণালয়ের দরকার নেই বলে মনে করেন । সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগ কেবল রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে এটা করতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

মাসদার হোসেন মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগেরর ছয় বিচারপতির বেঞ্চে আবেদন আকারে এটি উপস্থাপন করেন এই আইনজীবী। এ মামলায় রিট আবেদনকারীদের পক্ষে তিনি এটি উপস্থাপন করেন। আগামী ২০ আগস্ট মামলাটি শুনানির জন্য পরবর্তী দিন নির্ধারণ করেছে আপিল বিভাগ।

আমীর-উল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘১৭ বছর আগে একই আবেদন করেছিলাম। তখন প্রধান বিচারপতি মোস্তফা কামাল রায়ে বলেছিলেন, রুলস প্রণয়নে একটি আইনি বাতাবরণ থাকা দরকার। ১৭ বছর পরেও এসে আবেদন করে বলেছি বিচারপতি মোস্তফা কামালের ওই রায়ের অংশ রিভিউ করতে হবে। কারণ ১১৬ অনুচ্ছেদ মতে বিচারবিভাগীয় দায়িত্বপালনে রত ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ ও শৃংখলাবিধান রাষ্ট্রপতির উপর ন্যস্ত থাকবে। এই জন্য সুপ্রিম কোর্ট এ রুলস প্রণয়ন করে শুধু রাষ্ট্রপতির কাছে নিয়ে দেখিয়ে আসলেই হয়। এখানে মন্ত্রী বা মন্ত্রণালয়ের দরকার নেই।’

১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর মাসদার হোসেন মামলায় ১২দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেয়া হয়। ওই রায়ের আলোকে নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা ছিল। আপিল বিভাগের নির্দেশনার পর গত বছরের ৭ মে আইন মন্ত্রণালয় একটি খসড়া শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধি প্রস্তুত করে সুপ্রিমকোর্টে পাঠায়।

ওই বছরের ২৮ আগষ্ট এই মামলার শুনানিতে আপিল বিভাগ জানান, শৃঙ্খলা বিধিমালা সংক্রান্ত সরকারের খসড়াটি ছিল ১৯৮৫ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার হুবহু অনুরূপ। যা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থী। এরপরই সুপ্রিম কোর্ট একটি খসড়া বিধিমালা করে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। একইসঙ্গে ৬ নভেম্বরের মধ্যে তা প্রণয়ন করে প্রতিবেদন আকারে আদালতকে অবহিত করতে আইন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেয়।

২০ বারেরও বেশি সময় নেয়ার পর সম্প্রতি এই খসড়া আপিল বিভাগে জমা দেয়। কিন্তু প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন, তারা যে নির্দেশনা দিয়েছিলেন, সরকার কাজ করেছে উল্টো। পরে সে বিধিমালা ফেরত পাঠানো হয়েছে এবং আইমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল প্রধান বিচারপতির।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031