রোহিঙ্গা মুসলিমদের পালিয়ে আসার ঘটনা অব্যাহত রয়েছে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষীদের নজরদারি এড়িয়ে মিয়ানমারের।এক হিসাবে গত কয়েক সপ্তাহে ১৫,০০০ রোহিঙ্গা ঢুকেছে, এবং বাংলাদেশের টেকনাফ অঞ্চলে ঢোকার পর তাদের আশ্রয় মিলছে মূলত আগে থেকে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়িতে।মিয়ানমারের রাখাইন স্টেটে সহিংসতার কারণে গত প্রায় দেড় মাস ধরে কয়েক হাজার মানুষ নাইক্ষ্যংখালী, মৌলভী বাজার, চৌধুরিপাড়া, রংগীখালী, আলীখালী ও লেদা এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন।মিয়ানমার থেকে আসার সময় শুধু প্রাণ বাঁচানোটাই তাদের কাছে মুখ্য ছিল। নাফ নদী পাড়ি দিয়ে সীমান্ত বাহিনী চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা এসে উঠেছেন টেকনাফের বিভিন্ন এলাকায়।আশ্রয় নিয়েছেন এখানেই কয়েক বছর ধরে যেসব রোহিঙ্গারা স্থায়ী, অস্থায়ী ক্যাম্পে রয়েছে তাদের কাছে।মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসার সময় প্রাণ বাঁচানো উদ্দেশ্য থাকলেও এখন সামনে নতুন সঙ্কট। থাকা, খাওয়া, নিত্য-প্রয়োজনীয় জিনিসের অভাব রয়েছে।

জোবায়দা ১৫ দিন আগে পরিবারের ছয়জন সদস্য নিয়ে পালিয়ে আসে। এখানে এসে শুধু থাকার আশ্রয় পেয়েছে একটি পরিবারে।কিন্তু প্রতিদিনের খাবারের জোগাড় করা তার জন্য অসম্ভব হয়ে পরেছে। “জান বাঁচানোর জন্য এখানে আসলাম কিন্তু এখানে এসে সেই জান বাঁচানোই আরেক দায় হয়েছে,” চোখে পানি নিয়ে কম্পিত কণ্ঠে বলছিলেন তিনি।

আমেনার কোলে ছোট শিশু। তিনি বলছিলেন “এক সপ্তাহ হল আসছি, খাওয়া-দাওয়া কিছু নেই। নিজে খাইতে পাই না, তাই বাচ্চাকে বুকের দুধও দিতে পারতেছি না।”এদের মত আর সবার অবস্থা প্রায় একই রকম।অবৈধভাবে আসার কারণে বাইরে বেরিয়ে অর্থ উপার্জনে কোন কাজ করতে পারছেন না তারা।এছাড়া সরকারি-বেসরকারি কোন পক্ষ থেকেই কোন প্রকার খাদ্য সাহায্য তাদেরকে এ পর্যন্ত করা হয়নি।হ্নীলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এইচ. কে. আনোয়ার আমাকে বলছিলেন, “সরকার থেকে আমাদের ক্লিয়ার মানা করা হচ্ছে কোন রকম সহযোগিতা না করার জন্য পারলে পুশব্যাক করার জন্য।””যারা আসছে তাদের লোকালি কিছু সাহায্য দিয়েছে কিন্তু সরকারি ভাবে কোন চিন্তাভাবনা নেই,” বলছিলেন তিনি।এদিকে যারা নতুন করা আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছেন তারাও আর তাদের অন্নের সংস্থান করতে পারছেন না।মোহাম্মদ কবির মিয়ানমার থেকে এসে টেকনাফে বাস করছেন প্রায় পাঁচ বছর। লেদা এলাকার অস্থায়ী ক্যাম্পে বসবাস করার কারণে বাইরে বেরিয়ে কাজ করার সমস্যা রয়েছে তার। ক্যাম্পের ভেতরেই তিনি ছোট মুদি দোকান চালান। তিনি বলছিলেন “আমার পরিবারের ১১ জন, আর আশ্রয় দিছি ১০ জনকে। এখন এই ২১ জনের খাওয়া আমি কেমনে জোগাই?”

সুত্র-বিবিসি বাংলা

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031