বাংলাদেশের ব্যাট হাতে বড় পুঁজি না গড়তে পারলেও সিলেট টেস্টের চতুর্থ দিনটি স্বপ্নের মতো কেটেছে । ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চতুর্থ দিন শেষে জয়ের দ্বারপ্রান্তে টাইগাররা।

শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) ৩৩২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে চতুর্থ দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে কিউইদের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ১১৩ রান। জয়ের জন্য ব্ল্যাক-ক্যাপসদের প্রয়োজন আরও ২১৯ রান। আর বাংলাদেশের প্রয়োজন মাত্র ৩ উইকেট।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড। প্রথম ইনিংসে স্বাগতিকদের ৩১০ রানের জবাবে ৩১৭ রান করে সফরকারীরা। দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৩৮ রান করেছে বাংলাদেশ। ৩৩২ রানের বিশাল রান তাড়ায় নেমে ৭ উইকেটে ১১৩ রান করেছে নিউজিল্যান্ড।

৩ উইকেটে ২১২ রান নিয়ে চতুর্থ দিন শুরু করে বাংলাদেশ। দিনের প্রথম ওভারে কোনো উইকেট হারায়নি তারা। কিন্তু সাউদির করা দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ১৯৮ বলে ১০৫ রানের দুর্দান্ত একটি ইনিংসের ইতি হয় তাতে।

তিন অঙ্ক ছোঁয়া এই ইনিংসে রেকর্ড বুকের পাতায়ও নাম তোলেন শান্ত। ১৩তম বাংলাদেশি টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে এই ম্যাচে টস করতে নামেন তিনি। প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে তিনি নেতৃত্বের অভিষেকে ছুঁয়েছেন সেঞ্চুরি।

শান্ত ফেরার পরে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গী হয়েছিলেন শাহাদাৎ হোসেন দীপু। কিন্তু তিনি বেশিক্ষণ উইকেটে টিকে থাকতে পারেননি। অভিষেক টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ১৯ বলে ১৮ রান করে এলবিডব্লিউ হয়েছেন দীপু।

মুশফিকুরও হন একই রকম আউট। ১১৬ বলে ৬৭ রান করার পর এজাজ প্যাটেলকে সামনে এসে খেলতে গিয়ে হন এলবিডবিøউ। পরে রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি তিনি। তিন স্বীকৃত ব্যাটারকে হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় বাংলাদেশ।

এরপর হাল ধরেন মেহেদী হাসান মিরাজ। কিন্তু তিনি হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিলেও অপর পাশের ব্যাটাররা লম্বা সময় সঙ্গ দিতে পারেননি। ২৭ বলে ১০ রান করেন নুরুল হাসান সোহান, ৭ বলে ১০ রান আসে শরিফুলের ব্যাট থেকে। ৭৬ বলে ৫০ রান করে অপরাজিত থাকেন মিরাজ।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৩২ রানের বড় লক্ষ্য দেয় বাংলাদেশ। এই রান তাড়া করে জেতার জন্য রেকর্ড করতে হতো কিউইদের। কারণ এর আগে ৩২৪ রানের বেশি তাড়া করে জেতেনি তারা। ১৯৯৪ সালে পাকিস্তানকে এই রান তাড়া করে হারিয়েছিল তারা, সেটিই তাদের সর্বোচ্চ। দ্বিতীয়টি ছিল বাংলাদেশের বিপক্ষেই, ২০০৮ সালে তারা ৩১৭ রান তাড়া করে হারায় তিন উইকেটে।

এই রান তাড়া করা এমনিতেও নিউজিল্যান্ডের জন্য কঠিনই ছিল। ইনিংস যত এগিয়েছে, তত বেশি স্পষ্ট হয়েছে সেটি। বাংলাদেশের হয়ে প্রথম উইকেট নেন এই টেস্টের একাদশে থাকা একমাত্র পেসার শরিফুল ইসলাম। সেটিও ইনিংসের প্রথম ওভারেই।

তার করা ওভারের শেষ বলে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। পরের উইকেটটির জন্য বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয় আরও নয় ওভার। এবার তাইজুল ইসলামের বলে সামনে এসে ডিফেন্স করতে গিয়ে এলবিডবিøউ হন কেইন উইলিয়ামসন। তাইজুলের সঙ্গে উল্লাসে ফেটে পড়ে পুরো দল। আগের ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ানই বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হতে পারতেন। রিভিউ নিয়েও পরে বাঁচতে পারেননি তিনি।

পরের ব্যাটারদের প্রায় কেউই ভিত শক্ত করে দাঁড়াতে পারেননি। ৮ বলে ২ রান করে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে নাঈম হাসানের হাতে ক্যাচ দেন হেনরি নিকোলস। ৩০ রানে ৩ উইকেট হারানো দলের বিপদ আরও বাড়ে সেট হওয়ার আভাস দেওয়া ডেভন কনওয়ে আউট হলে। ৭৬ বলে ২২ রান করা এই ব্যাটারকে শাহাদাৎ হোসেনের ক্যাচ বানান তাইজুল।

এরপর নিউজিল্যান্ডের হয়ে একাই লড়ছেন ড্যারল মিচেল। ৮৬ বলে ৪৪ রান করে অপরাজিত আছেন তিনি। তার সঙ্গী ইশ সোধি ২৪ বলে করেছেন ৭ রান।

Share Now
November 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930