বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) জুলাই মাস থেকেই বাসাবাড়ির রুফটপ, কর্পোরেট হেলিপ্যাড, আবাসিক হোটেল ও হাসপাতালের ছাদে হেলিকপ্টার অবতরণের অনুমতি দিচ্ছে ।

বেবিচক সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালা তৈরি করছে সংস্থাটি। এতে সম্মতিও দিয়েছেন বেবিচক চেয়ারম্যান। জুলাই মাসের মধ্যই সিদ্ধান্তটি সার্কুলার আকারে জারি করে কার্যকর করা হতে পারে।

নতুন করে আবার অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন, রুফটপে হেলিকপ্টার অবতরণের অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এটি জুলাই মাসেই সার্কুলার আকারে জারি করা হবে। আশা করছি জুলাই থেকেই হেলিকপ্টার ল্যান্ড করতে পারবে।

বেবিচক সূত্র জানায়, যেসব ভবনে হেলিকপ্টার নামবে সেটি অবশ্যই অবতরণের জন্য উপযোগী হতে হবে। এজন্য বুয়েট থেকে প্রয়োজনীয় সার্টিফিকেট নিতে হবে। সার্টিফিকেট ছাড়া হেলিপ্যাড স্থাপনের অনুমতি দেওয়া হবে না। এছাড়া দেশের যেকোনো খোলা জায়গা হেলিপ্যাড হিসেবে ব্যবহার করার অনুমতিও দেয়া হচ্ছে।

কয়েক বছর ধরে ঢাকায় হেলিপ্যাডে হেলিকপ্টার অবতরণের অনুমতি দেওয়া বন্ধ ছিল। এর কারণ হিসেবে বেবিচক জানিয়েছিল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এমন অনুমতি দিতে মৌখিকভাবে নিষেধ করা হয়েছিল। এর কারণ হিসেবে তারা নিরাপত্তার ঝুঁকি এবং মাদক পাচারের আশঙ্কার কথা উল্লেখ করেছিল। তাই এতদিন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকেই হেলিকপ্টার উড্ডয়ন ও অবতরণ করত।

তবে মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘদিন ধরে এই অনুমতির দাবি করে আসছিল। প্রতিষ্ঠানগুলো জানায়, নিরাপত্তার কথা বলে ঢাকায় কোনো হোটেল, হাসপাতাল বা কারো ছাদের হেলিপ্যাডে অবতরণের অনুমতি দেওয়া হয় না। একজন মুমূর্ষু রোগীকে রংপুর থেকে জরুরিভাবে স্কয়ার হাসপাতালে আনার প্রয়োজন হলে ১ ঘণ্টার মধ্যে হেলিকপ্টার গিয়ে তাকে আনতে পারবে। তবে ওই রোগীকে নিয়ে হেলিকপ্টার অবতরণ করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। রোগীদের ১ ঘণ্টায় হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনা গেলেও যানজটের কারণে বিমানবন্দর থেকে হাসপাতালে যেতে ২/৩ ঘণ্টা লেগে যায়।

দেশে ১৯৯৯ সালে প্রথম বেসরকারি উদ্যোগে বাণিজ্যিকভাবে হেলিকপ্টার সেবা চালু করে সাউথ এশিয়ান এয়ারলাইনস। এখন যে কেউ চাইলে হেলিকপ্টার ভাড়া নিতে পারেন।

এভিয়েশন অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এওএবি) তথ্যমতে, দেশে ১০টি বেসরকারি কোম্পানির ৩২টি হেলিকপ্টার আছে। কোম্পানিগুলো হলো- বিসিএল এভিয়েশন, ইমপ্রেস এভিয়েশন, আর অ্যান্ড আর এভিয়েশন, স্কয়ার এয়ার লি., মেঘনা এভিয়েশন, বসুন্ধরা এয়ারওয়েজ, বিআরবি এয়ার, এরো টেকনলজিস, সাউথ এশিয়ান এয়ারলাইনস ও বাংলা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন।

সাধারণত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, বিত্তবানদের বরযাত্রা ও ভিআইপি যাত্রী বহনে হেলিকপ্টারের ব্যবহার বেশি হয়। এছাড়া জরুরি মিটিং, দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ানো, লিফলেট বিতরণ, রোগী বহন, শুটিং ও মরদেহ বহনসহ বিভিন্ন কাজেও এখন হেলিকপ্টার ব্যবহার হচ্ছে।

যানজটের ঝামেলা এড়াতে ও ঢাকার বাইরে মিটিংয়ে যেতে অনেক ব্যবসায়ী এখন নিয়মিত হেলিকপ্টার ব্যবহার করছেন। গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা ঢাকার বাইরে গাজীপুর ও চট্টগ্রামে বিদেশি ক্রেতাদের নিয়ে কারখানা পরিদর্শনে হেলিকপ্টারের ওপর নির্ভর করছেন। প্রতিদিনই হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জেনারেল এভিয়েশন হ্যাঙ্গার থেকে যাত্রীরা হেলিকপ্টারে ওঠেন এবং এখানেই অবতরণ করেন।

A

Share Now
November 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930