বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার এই বক্তব্যের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, বিএনপির নির্বাচন বর্জনের আর সুযোগ নেই শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন নয়,। তাই শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচনে আসবে তারা। আর যদি তারা নাও আসে, তাও যথা সময়ে নির্বাচন হবে।

সোমবার সচিবালয়ে ঢাকায় সিঙ্গাপুরের হাইকমিশনার ডেরেক লোর সঙ্গে বৈঠক শেষে এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

তোফায়েল বলেন, ‘খালেদা জিয়া শেষ পর্যন্ত তার বক্তব্যে অটল থাকতে পারবেন না। তাকে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে। তা নাহলে তার দল অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে।’

শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে বিএনপি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন ও তা ঠেকানোর ঘোষণা দেয়। তবে তারা সফল হয়নি এবং বর্তমান সরকার প্রায় চার বছর ধরে ক্ষমতায়। আর আগাম নির্বাচনের দাবি নাকচ করে সরকার বলছে, যথাসময়ে নির্বাচন হবে এবং সংবিধান অনুযায়ী দলীয় সরকার তখন ক্ষমতায় থাকবে। আর তার প্রধানমন্ত্রী থাকবেন শেখ হাসিনাই।

গত এক বছর ধরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বদলে বিএনপি সহায়ক সরকারের দাবি করে আসছিল। কিন্তু সে সরকারের রূপরেখা কেমন হবে তা দিতে না পারার পর আবারও তত্ত্বাবধায়কের দাবি করছেন বিএনপি নেতারা। রবিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভায় খালেদা জিয়া আবারও বলেন, শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। আর এ কারণে তার অধীনে নির্বাচনে যাবে না বিএনপি।

বিএনপি নেত্রীর এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘ক্ষমতাসীন দলের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে সম্ভব না- এটার বিষয়ে খালেদা জিয়ার পূর্বঅভিজ্ঞতা আছে। কারণ জিয়াউর রহমানের অধীনে নির্বাচন হয়েছিল। সেটি সুষ্ঠু হয়নি। এটা খালেদা জিয়া প্রত্যক্ষ করেছেন। খালেদার নিজের আমলেও নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। কিন্তু আওয়ামী লীগ সুষ্ঠু নির্বাচন করবে।’

গত নির্বাচন বানচালে বিএনপির ব্যর্থ আন্দোলনের প্রতি ইঙ্গিত করে তোফায়েল বলেন, ‘বাংলাদেশে আর কোনো দিন নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকার আসবে না। বর্তমান সরকারের অধীনেই ইনক্লুসিভ (অংশগ্রহণমূলক) নির্বাচনের আয়োজন হবে। এই নির্বাচনে বিএনপি যদি না আসে তাহলে নির্বাচন তো আর থেমে থাকবে না। নির্বাচন যথা সময়ে হবে। বিএনপির কোনো দিন নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। তাদের সেই ক্ষমতা নেই।’

জাতীয় নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দেয়ার বিষয়ে খালেদা জিয়া যে দাবি করেছেন তাও নাকচ করে দিয়েছেন তোফায়েল আহমেদ। বলেন, ‘এছাড়া নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দেয়ার বিষয়টিও খালেদা জিয়ার পূর্বঅভিজ্ঞতা রয়েছে। ২০০১ সালে সেটা তিনি দেখেছেন। এটাও তার অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেছেন। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় এটা পড়ে না।’

বিএনপির সঙ্গে সংলাপের দাবিও প্রত্যাখ্যান করেন তোফায়েল। বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে আর কোনো দিন সংলাপ হবে না। কারণ তাদেরকে অনেক সুযোগ দেয়া হয়েছে তারা সেগুলো গ্রহণ করতে পারেনি। তারা আগুন সন্ত্রাস করেও দেশে অনেক মানুষ হত্যা করেছে। কিন্তু তারা বিনিময় কিছুই অর্জন করতে পারেনি।’

‘বরং তারা নিজেদের ক্ষতি করেছে। ভবিষ্যতে যদি তারা এরকম করতে চায় তাহলে তারা আরও ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হবে।’

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031