ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ২০০৪ সালের একুশে আগস্ট আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলা মামলার বিচারকাজে সরকারি হস্তক্ষেপের যে অভিযোগ বিএনপি করছে তা নাকচ করে দিয়েছেন । তার দাবি, বিচারালয় সম্পূর্ণ স্বাধীন। সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করে না।

শনিবার চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় নির্মাণাধীন টানেল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী, কেন্দ্রীয় উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের জনসভায় দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে চালানো হামলায় নিহত হন মোট ২২ জন। আহত হয় কয়েকশ নেতা-কর্মী। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আগামী মাসে আলোচিত এই মামলার রায় হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা আশা করি, বাস্তবতার নিরিখেই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় হবে। ঘটনা যা ঘটেছে সেই নিরিখেই রায় হবে। বিচার বিভাগ তার স্বাধীন কার্যক্রমের আওতায় স্বাধীন সিদ্ধান্ত দেবে, রায় দেবে। এতে বিএনপির অনেক নেতারাও জড়িত হওয়ার আশঙ্কা আছে। সুতরাং তারা যদি কনভিকটেড (দণ্ডিত) হন, সামনে জাতীয় নির্বাচন, তাহলে তো বলাই যায় যে, তাদের অস্তিত্ব কিছুটা সংকটের মুখে পড়বে।’

গতকাল ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেছিলেন, একুশে আগস্টের মামলার রায়ে বিএনপি নতুন সংকটে পড়তে পারে। তার এই বক্তব্যের সমালোচনা করেন বিএনপি নেতারা। নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে কাদের বলেন, বিএনপি একটা বড় দল, তাদের অস্তিত্ব থাকবে। আমি বলছি, রাজনৈতিক অস্তিত্ব কিছুটা সংকটের মুখে পড়বে। সংকটে তো পড়তেই পারে। কারণ, বিএনপি গ্রেনেড হামলার দায় এড়াতে পারে না। ২১ আগস্টের কিলিংয়ে  শেখ হাসিনা টার্গেট ছিলেন। বিএনপি তখন ক্ষমতায়। সারা দেশ জানে, হাওয়া ভবনের পরিকল্পনার কথা। এগুলো এখন আর গোপন কোনো বিষয় নয়।’

সাম্প্রতিক আন্দোলনে বিএনপির ইন্ধন ছিল দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমি অন্ধকারে ঢিল ছুড়ি না। কোটা ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে কেউ ইন্ধন দিয়ে থাকলে সেটা আস্তে আস্তে বের হবে। তবে এসব আন্দোলনে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ইন্ধন ছিল।’তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, দুই কিশোর-কিশোরীর মৃত্যুর পর যে আন্দোলন হয়েছে সেটা একেবারে যুক্তিসংগত ছিল। কিন্তু আন্দোলন যখন একটা পর্যায়ে গেছে, তখন শেষ সময়ে এসে ইন্ধন যুক্ত হয়েছে। এটাকে রাজনৈতিক রূপ দেওয়ার চক্রান্ত হয়েছে।’

কর্ণফুলী টানেলের ২৪ ভাগ কাজ সম্পন্ন

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী জানান, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের কাজ ২৪ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।

এটি দেশের প্রথম ও একমাত্র টানেল। টানেলটির দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৪ কিলোমিটার। টানেলের পশ্চিম ও পূর্ব প্রান্তে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার অ্যাপ্রোচ রোড এবং ৭২৭ মিটার ওভারব্রিজ আনোয়ারা উপজেলাকে চট্টগ্রাম শহরের সঙ্গে সংযুক্ত করবে।

টানেল প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৫৫ দশমিক ৮৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা আট হাজার ৪৪৬ দশমিক ৬৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার ৩৫০ মিলিয়ন ডলার এবং চীন সরকার ৭০৫ দশমিক ৮০ মিলিয়ন ডলার দেবে। মূল টানেল নির্মাণব্যয় শতভাগ বহন করছে চীন সরকার। ইতিমধ্যে ৩৮৩ একর ভূমির মধ্যে ২৩২ একর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না কমিউনিকেশন অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেডকে (সিসিসিসি) হস্তান্তর করা হয়েছে। ২০১৭ সালের ৫ ডিসেম্বর থেকে প্রকল্প বাস্তবায়নের কাউন্ট ডাউন শুরু হয়েছে।পাঁচ বছরের মধ্যে কাজ শেষ হবার কথা।

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘প্রকল্পের শুরুতে আমরা অর্থায়ন নিয়ে বারবার হোঁচট খেয়েছিলাম। কিন্তু এখন সমস্যা নেই। টানেল নির্মাণের পথে।’

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031