সরকার আদালতে হস্তক্ষেপ করলে এটা হতো না ফেনীতে উপজেলা চেয়ারম্যান একরামুল হক একরাম হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ৩৯ জনের প্রায় সবাই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেছেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়ার পেছনে সরকারের হস্তক্ষেপের বিষয়ে বিএনপির অভিযোগের জবাব দিতে গিয়ে এ কথা বলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় বক্তব্য রাখছিলেন ওবায়দুল কাদের।
৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন উদ্যাপন এবং ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের প্রস্তুতি হিসেবে এই বর্ধিত সভার আয়োজন করা হয়।
ক্ষমতাসীন দলের নেতা বলেন, ‘অন্যায় যে-ই করুক, সরকার কাউকে ছাড় দেয়নি। ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান একরামুল হক হত্যা মামলায় ৩৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। এই মামলার বেশির ভাগ আসামি আওয়ামী লীগ পরিচয়ের। কিন্তু আদালত এবং বিচারের কাছে এসব পরিচয়ে কাজ হয়নি।’
২০১৪ সালের ২০ মে ফেনীতে প্রকাশ্যে কুপিয়ে, গুলি করে হত্যার পর গাড়িতে আগুন ধরিয়ে মরদেহ পুড়িয়ে দেয়া হয়। এই ঘটনায় একরামের ভাই রেজাউল হক জসিম বিএনপি নেতা মিনার চৌধুরীসহ ৫৬ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
গত ১৩ মার্চ ফেনীর একটি আদালত বিএনপি নেতা মিনারকে খালাস দিয়ে ৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করে। এদের সবাই ক্ষমতাসীন দল এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী।
একরাম হত্যা মামলা এবং খালেদা জিয়ার মামলার রায়ের বিষয়টি তুলে ধরে কাদের বলেন, ‘সরকার বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ করে না। বিএনপির নেতারা আদালতের বিষয় রাজনীতির মাঠে নিয়ে এসে দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে।’
‘আদালতের বিষয় নিয়ে বিএনপি অহেতুক বিষোদগার করছে। সরকার নিজেদের লোককেও ছাড় দেয়নি।’
গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। গত ২২ ফেব্রুয়ারি এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। ২৫ ফেব্রুয়ারি হয় জামিন আবেদনের শুনানি। আর ১২ মার্চ বিএনপি নেত্রীকে চার মাসের জামিন দেয় হাইকোর্ট।
এই আদেশের বিরুদ্ধে পরদিন চেম্বার আদালতে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ এবং দুদক আর সেই আবেদনটি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন চেম্বার বিচারপতি। আর ১৪ মার্চ প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন জামিন ১৮ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করে।
বিচারিক আদালতের রায়ের পর থেকে বিএনপি নেতারা অভিযোগ করে আসছিলেন, নিম্ন আদালত সরকারের নিয়ন্ত্রণে। আর এ কারণেই খালেদা জিয়ার সাজা হয়েছে। উচ্চ আদালতে বিএনপি প্রত্যাশিত রায় না পেয়ে অভিযোগ করছে, সরকারের হস্তক্ষেপেই এমন আদেশ আসছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির মহাসচিব এবং দলের নেতারা যেসব অভিযোগ করেন, সেসব ভিত্তিহীন। সরকার খালেদা জিয়ার মামলায় কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করেনি।’
‘বিএনপি অহেতুক বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। আগামী রবিবার আপিল বিভাগে খালেদা জিয়ার মামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে, তার আগে এটা নিয়ে বিএনপি কেন অপপ্রচার চালাচ্ছে?’।
‘বিএনপির অপপ্রচারে দেশের জনগণ কখনো সাড়া দেয়নি’ মন্তব্য করে কাদের বলেন, ‘ভবিষ্যতেও জনগণ বিএনপির এসব অপপ্রচারে সাড়া দেবে না।’
