বিপর্যস্ত বিশ্ব করোনাভাইরাস মহামারিতে। এর মধ্যে কয়েকটি দেশে এর প্রকোপ ভয়ংকর রূপ নিয়েছে। শুক্রবার একদিনে বিশ্বের নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯৯ হাজার ৪০৫ জন, মৃত্যু হয়েছে ৫০৭২ জনের। এছাড়া একদিনে বিশ্বে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৫৫ হাজারের বেশি করোনা রোগী। এ তথ্য জানিয়েছে করোনাভাইরাস নিয়ে লাইভ আপডেট দেয়া ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার।

শনিবার সকাল পর্যন্ত করোনায় বিশ্বব্যাপী নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৮ হাজার ৬৪৫ জনে এবং আক্রান্তের সংখ্যা ৪৬ লাখ ২৮ হাজার ৩৫৬ জন। অপরদিকে ১৭ লাখ ৫৮ হাজার ৩৯ জন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীন থেকে এই মহামারি শুরু হলেও এখন ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রে আরও ভয়াবহ আকার নিয়েছে। আক্রান্ত ও নিহতের সংখ্যায় সবার ওপরে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ লাখ ৮৪ হাজার ২৪৫ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৮৮ হাজার ৫০৭ জনের। সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ২৬ হাজার ২৪২ জন।

আক্রান্তের দিক দিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে স্পেন। সেখানে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৭৪ হাজার ৩৬৭ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২৭ হাজার ৪৫৯ জনের।

মৃত্যুর দিক দিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ব্রিটেন। দেশটিতে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৩৩ হাজার ৯৯৮ জন, আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৩৬ হাজার ৭১১ জন। এছাড়া ইতালিতে নিহত হয়েছেন ৩১ হাজার ৬১০ জন।

হঠাৎ করে সংক্রমণ বেড়ে গিয়েছে রাশিয়ায়। আক্রান্তের দিক দিয়ে ব্রিটেন-ইতালিকে পেছনে ফেলে তৃতীয় অবস্থানে চলে এসেছে দেশটি। সেখানে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৬২ হাজার ৮৪৩ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২৪১৮ জনের।

চীনের উহান থেকে বিস্তার শুরু করে গত চার মাসে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। চীনে করোনার প্রভাব কমলেও বিশ্বের অন্য কয়েকটি দেশে মহামারি রূপ নিয়েছে।

করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নেয়া হয়েছে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ। অধিকাংশ দেশেই মানুষের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নিশ্চিত করতে মানুষের চলাফেরার ওপর বিভিন্ন মাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। কোনো কোনো দেশে আরোপ করা হয়েছে সম্পূর্ণ লকডাউন, কোথাও কোথাও আংশিকভাবে চলছে মানুষের দৈনন্দিন কার্যক্রম। এ ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন এলাকার প্রায় অর্ধেক মানুষ চলাফেরার ক্ষেত্রে কোনো না কোনো মাত্রায় নিষেধাজ্ঞার ওপর পড়েছেন।

তবে এরই মধ্যে কোনো কোনো দেশে করোনার প্রভাব কমে যাওয়া লকডাউন শিথিল ও নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শেষে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। নিউমোনিয়ার মত লক্ষণ নিয়ে নতুন এ রোগ ছড়াতে দেখে চীনা কর্তৃপক্ষ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে সতর্ক করে। এরপর ১১ জানুয়ারি প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।

করোনাভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। এর লক্ষণ শুরু হয় জ্বর দিয়ে, সঙ্গে থাকতে পারে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথা। সপ্তাহখানেকের মধ্যে দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্ট। উপসর্গগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মত। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হলে এ রোগ কিছুদিন পর এমনিতেই সেরে যেতে পারে। তবে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্র বা ফুসফুসের পুরোনো রোগীদের ক্ষেত্রে ডেকে আনতে পারে মৃত্যু।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031