ঢাকা : হঠাৎ করেই মধ্য আকাশে যাত্রীবাহী বিমানে যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দেয়। অবস্থা বেগতিক দেখে বিমানের ক্যাপ্টেন যোগাযোগ করেন এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে। জানিয়ে দেন, জরুরি অবতরণ করতে হবে। বিমানটি অবতরণে তখনও কয়েক মুহূর্ত বাকি। জরুরি নির্দেশনা পেয়ে বিমানবন্দরে প্রস্তুত অ্যাম্বুলেন্স, দমকল বাহিনী। সবার মধ্যে উত্তেজনা-আতঙ্ক। শেষ পর্যন্ত ঠিকঠাক ভাবে অবতরণ করতে পারবে তো বিমানটি?

এ রকমই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল বুধবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। শেষ পর্যন্ত এমিরেটস এয়ারলাইনসের যাত্রীবাহী বিমানটি জরুরি অবতরণ করতে সক্ষম হলেও তাতে আগুন ধরে যায়। সময়মতো চাকা না খোলায় বিমানটি ‘বেলি ল্যান্ডিং’ করতে বাধ্য হয়।

তবে এই উদ্বেগ-আতঙ্কের মধ্যেও বিমানযাত্রীদের লাগেজ নিয়ে ব্যস্ততার বিষয়টি অনেকেরই দৃষ্টি কেড়েছে। ভাবখানা এমন ছিল যে, আমার লাগেজটি আগে চাই! তখন বিমানের মধ্য জরুরি অবতরণের ঘোষণা চলছিল বার বার। ক্রুদের এই ঘোষণার পরও যাত্রীরা তাদের লাগেজ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। বিমানযাত্রীরা প্রায় সবাই বিমানের ওভারহেডে রাখা ব্যাগ, ল্যাপটপ নিজের কাছে নিতে হুড়োহুড়ি করতে থাকেন।

এক যাত্রী চিৎকার করে বলছেন, ‘আমার ল্যাপটপ, আমার ল্যাপটপ।’ অন্য যাত্রীরা ব্যস্ত তাদের লাগেজ গোছাতে। অধিকাংশ যাত্রী জরুরি নির্দেশনার দিকে যেন তোয়াক্কাই করছিল না। এ সময় একটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
বিমানের ভেতর চরম বিশৃঙ্খলা। বিমানের ক্রু’রা চিৎকার করে জরুরি সিঁড়ি ব্যবহার করে যাত্রীদের নামার জন্য অনুরোধ করছিলেন। কিছুক্ষণ করেই বিমানটির পিছনের অংশে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে স্থানীয় দমকল বাহিনীর এক কর্মী মারা যান।

বিমানটিতে ৩০০ জন যাত্রী ও ক্রু ছিলেন। অধিকাংশই যাত্রী ভারতের কেরালার।

এ সময় একজন বিমান বালাকে চিৎকার করে বলতে শোনা যায়, আপনার জরুরি সিঁড়ি দিয়ে লাফ দিন। লাফ দিন। নিজেদের ব্যাগ-লাগেজের বিষয়টি আপাতত ভুলে যান।

ইকে ৫২১ ফ্লাইট নম্বরের বোয়িং ৭৭৭ বিমানটির দুর্ঘটনার কারণে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ত বিমানবন্দরটিতে চার ঘণ্টার জন্য বন্ধ রাখা হয়। তবে এই দুর্ঘটনায় বিমানের যাত্রী ও ক্রুরা হতাহত হয়নি।

এমিরেটস এয়ারলাইন্সের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।

বিমান চলাচলবিষয়ক বিশেষজ্ঞ একটি ওয়েবসাইট জানিয়েছে, দুর্ঘটনার সময় দুবাই বিমান বন্দরের তাপমাত্রা ছিল ৪৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিমানটি অবতরণের সময় আকস্মিকভাবে সেখানে বাতাসের গতি ও চাপের পরিবর্তন ঘটেছিল। যার কারণে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সূত্র: এনডিটিভি।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031