পানির ট্যাংকে চট্টগ্রামে অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা মেয়ে ও তার বৃদ্ধা মায়ের লাশ পাওয়া গেছে । আজ রোববার বিকেলে খবর পেয়ে মা-মেয়ের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
চট্টগ্রামের খুলশী থানার আমবাগান ফ্লোরাপাস সড়কের আটার মিল এলাকায় নির্মাণাধীন একটি ভবনের পানির ট্যাংক থেকে মা-মেয়ের মরদেহ থাকার খবর পায় পুলিশ। এর মধ্যে নিহত মেয়ের নাম মেহেরুন নেছা (৬৭) ও তার মায়ের নাম মনোয়ারা বেগম (৯৪) বলে জানিয়েছেন খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন।
তিনি জানান, তাদের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর জেলার মতলব থানার নায়েরগাঁও গ্রামের পুরানবাজার এলাকায়। মেয়ে মেহরেুন নেছা রুপালী ব্যাংকের সাবেক প্রিন্সিপ্যাল কর্মকর্তা। তিনি অবিবাহিত ছিলেন।
ওসি নাসির উদ্দিন বলেন, দুই বৃদ্ধা যে বাড়িতে বাস করতেন তার মালিক ছিলেন মেহেরুন নেছা। মাকে নিয়ে তিনি ওই বাড়িতে থাকতেন।
বাড়িতে কোনো পুরুষ মানুষ থাকতেন না। ভবনটি উপরে চারতলা পর্যন্ত কাঠামো দাঁড় হলেও বসবাসের উপযোগী ছিল নিচের তলায়। সেখানে থাকতেন বৃদ্ধা মা-মেয়ে।
তিনি বলেন, বৃদ্ধা মা-মেয়ের মাথায় বড় ধরণের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাদের ঘরের মেঝেতে রক্তের দাগ পাওয়া গেছে। ঘরের ভেতরে আলমারি খোলা ছিল, বিভিন্ন জিনিসপত্র এলোমেলো করা ছিল। যেহেতু কেবল দুই নারীই ওই বাসায় বাস করতেন তাই প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে কেউ পরিকল্পিতভাবে তাদের আঘাত ও শ^াসরোধে হত্যা করে তাদের মরদেহ পানির ট্যাংকে ফেলে গেছে।
সুরতহাল হাল রিপোর্ট ও ময়নাতদন্তের জন্য তাদের লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হচ্ছে। রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর তাদের মৃত্যু কিভাবে হল তা নিশ্চিত হওয়া যাবে। আর কেনই বা তাদের হত্যা করা হল তা এখনই বলতে পারছি না-বললেন ওসি।
ওসি নাসির উদ্দিন বলেন, মেহেরুন নেছার ছোট ভাই মাসুদ আজ রোববার দুপুরে আমেরিকা থেকে ফোনে না পেয়ে প্রতিবেশী মাকসুদুর রহমানকে দেখতে যেতে বলেন। মাকসুদুর রহমান গিয়ে বাড়ির দরজা বন্ধ দেখতে পান। দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে আলমিরা ও মালামাল তছনছ দেখে এবং বৃদ্ধা মা-মেয়েকে খুঁজতে গিয়ে পানির ট্যাংকে দেখতে পেয়ে থানায় খবর দেন। ফলে পুলিশ এসে তাদের লাশ উদ্ধার করে।
এদিকে খালা ও নানীর মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন মনোয়ারা বেগমের নাতি বেলাল উদ্দিন (৫০)। তিনি সাংবাদিকদের জানান, ২০০৬ সালে এই ভবনটি তৈরি হয়। তখন থেকেই এলাকার একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর এই জায়গার প্রতি লোভ ছিল। সেই লোভেই মনোয়ারা ও মেহেরুন নেছাকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি বেলাল উদ্দিনের।
খবর পেয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), নগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেছেন বলে জানান বেলাল উদ্দিন।
