ভারতের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা ইঞ্জিনিয়ারিং ও আইটি সেক্টরে প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় ভারতের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা এ আগ্রহ প্রকাশ করেন।
ভারতের কলকাতাস্থ বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র ১৫ (পনের) সদস্য বিশিষ্ট বাণিজ্য প্রতিনিধিদল এবং দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র নেতৃবৃন্দ ও চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী সমাজের মধ্যে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বাণিজ্য প্রতিনিধিদল চট্টগ্রামে ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট স্থাপন ও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধিসহ যৌথ বিনিয়োগে ঐকমত্য প্রকাশ করেন। দলে কনসালটেন্সী, শিক্ষা, ইঞ্জিনিয়ারিং, ফাইন্যান্স, হেলথ, আইটি, ট্যুরিজম, শিপিং, লজিস্টিকস, স্কিলড ডেভেলাপমেন্ট ও ট্রান্সপোর্টেশন সেক্টরের প্রতিনিধিগণ অন্তর্ভূক্ত ছিলেন।
চিটাগাং চেম্বার সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ নুরুন নেওয়াজ সেলিম’র সভাপতিত্বে প্রতিনিধিদল নেতা আর. এন. লাহিরী ও রফিকুল হাসানসহ অন্যান্য সদস্য, চট্টগ্রামস্থ ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার সোমনাথ হালদার, চিটাগাং চেম্বার পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, এইচআরসি’র সিনিয়র পরিচালক কাজী রুকুনউদ্দীন আহমেদ, ব্যবসায়ী নেতা তাহের সোবহান, বাফা’র সিনিয়র সহ-সভাপতি আমিরুল ইসলাম চৌধুরী, বিশিষ্ট চিকিৎসক ড. অহিদুল আলম, বিকেএমই’র সাবেক পরিচালক শওকত ওসমান, রিহ্যাব’র ইঞ্জিনিয়ার ইফতেখার, মাস্টার আবুল কাশেম, ড. হাসান মাহমুদ, কিশোয়ান’র নাজমুল ইসলাম মানিক, বর তাকিয়ার নিয়াজ মোর্শেদ, বিকডা সচিব রুহুল আমিন সিকদার বক্তব্য রাখেন। এ সময় চেম্বার পরিচালক কামাল মোস্তফা চৌধুরী, মোঃ অহীদ সিরাজ চৌধুরী (স্বপন), এম. এ. মোতালেব, মাহবুবুল হক চৌধুরী (বাবর), সরওয়ার হাসান জামিল, অঞ্জন শেখর দাশ এবং চট্টগ্রামের বিভিন্ন সেক্টরের প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
চেম্বার সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ নুরুন নেওয়াজ সেলিম বলেন-২০১৫-১৬ অর্থবছরে ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানি ৬৮৯.৬২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং আমদানি ৫৪৫২.৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। তিনি উভয় দেশের বাণিজ্য বৃদ্ধিতে স্থল বন্দরসহ অবকাঠামো উন্নয়ন, অশুল্ক বাধা দূরীকরণ বাণিজ্য সুবিধা নিশ্চিতকরণের উপর গুরুত্বারোপ করেন। বাংলাদেশী পণ্য ভারতে রপ্তানির ক্ষেত্রে বিএসটিআই সার্টিফিকেট গ্রহণ করা এবং ভারত বিশেষকরে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশসমূহের নিকটবর্তী চট্টগ্রামের মিরসরাই ইকনোমিক জোনে বিনিয়োগের আহবান জানান চেম্বার সিনিয়র সহ-সভাপতি।
প্রতিনিধিদল নেতা আর. এন. লাহিরী মনে করেন প্রতিবেশী দু’দেশের মধ্যে পর্যটন, ইঞ্জিনিয়ারিং, স্বাস্থ্য, টেকনোলজিসহ অনেক সেক্টরেই পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে উপকৃত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। তিনি এসব সুবিধা কাজে লাগাতে নিয়মিত বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের সফর বিনিময়ের আহবান জানান। ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার সোমনাথ হালদার খাদ্য, ফ্রুটস, ফিস প্রসেসিং, সিমেন্ট ইত্যাদি সেক্টরে যৌথ বিনিয়োগের মাধ্যমে বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাস করা সম্ভব বলে মনে করেন এবং পণ্য সমাহার বহুমূখীকরণের মাধ্যমে ভারতের বিশাল বাজারে বাংলাদেশী রপ্তানি বৃদ্ধির পরামর্শ দেন। চেম্বার পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ বলেন-উভয় দেশের সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সফর বিনিয়ম এবং সম্পাদিত চুক্তিসমূহের আওতায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে। যার ফলে বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে ভারতীয় বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে।
চট্টগ্রামের বিভিন্ন সেক্টরের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে উভয় সরকারের ইতিবাচক নীতিমালা গ্রহণ, পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন, কারিগরি বিশেষজ্ঞ সহায়তা এবং বন্দর ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা বিনিময়, স্বাস্থ্য খাতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও রিসাইক্লিং এবং গাড়ী শিল্পের পশ্চাদ সংযোগ স্থাপনের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
