ঢাকার ধানমন্ডির ২৭ নম্বর রাস্তায় তো আজ জ্যাম লেগে গিয়েছিল! গত ৮দিনে একটা মুভিও দেখিনি। ছুটি শব্দটা মনে হচ্ছে, এদেশের মানুষ ‘ঈদের ছুটি’ ধরে নিয়েছে। জেগে থাকা সবটা সময় দেশ-বিদেশের নিউজ চ্যানেল, অনলাইনে সংবাদপত্র আর স্যোশাল মিডিয়ায় কাটাচ্ছি। আর নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের বারোটা বাজাচ্ছি!

একাত্তর টিভিতেই মনে হয় নারায়নগঞ্জ শহরে মানুষ আর নানা যানবাহনের ফুটেজ দেখলাম। মনে হলো না, ঢাকার কয়েক কিলোমিটার দূরত্বের এই শহরের কেউ করোনাভাইরাসের কথা আদৌ শুনেছে। শহরে সব স্বাভাবিক। চট্টগ্রামের বন্দর থানার সামনে ত্রাণ প্রত্যাশীদের ফুটেজ দেখে মনে হয়েছে, কয়েক কেজির একটা খাদ্যের বস্তা তাদের জীবনের চেয়ে বেশি জরুরি। অথচ এদের কাউকে কয়েক দিনের ভুখা মনে হয়নি। কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামের কিছু ইউনিয়নের খবর পড়েছি। ইতালি প্রবাসী অনেকেই দেশে ফিরে ফূর্তিতে সময় কাটাচ্ছেন! ইউপি চেয়ারম্যান হতাশ হয়ে বলছেন, তিনি মাইকিং করিয়েছেন। কিন্তু কেউ কথা শুনছে না।

রাস্তার যা অবস্থা, পুলিশও সেখানে ৬/৭ ঘণ্টার আগে যায় না। ১৭ দিনের ছুটির পর দেশ সচল হলেও কাউকে কি বিশ্বাস করতে পারবো? হোক সে আমার স্বজন বা সহকর্মী। মহামারি বা অতিমারির ছুটি শুধুই যে ৬ ফুটের সামাজিক দূরত্বের জন্য তা এদেশের মানুষ বুঝলেও মানেনি। অনেকেই বলেন, কারফিউ ঘোষণা দরকার। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ যেন বাইরে বেরুতে না পারে। বের হলেও আশপাশের ১ কিলোমিটারের বাইরে যেতে পারবে না। জেলা, উপজেলা প্রশাসন স্থানীয় সরকারের সহযোগিতায় দিন আনা দিন খাওয়া মানুষের ঘরে ত্রাণ পৌঁছে দিতে পারে। কোনো কোনো জেলায় তো তা করে দেখাচ্ছে।

দেশটাকে ২ সপ্তাহের জন্য পুরো লকডাউন না করলে বিপদ বড় হয়ে যাবে। হতাশা থেকে নয়, বাস্তবতা দেখেই বলছি। এখানে এদেশে কেউ নিজেকে, তার বাবা-মা, স্বামী-স্ত্রী, সন্তান, ভাই-বোন, পাড়া-প্রতিবেশি, সহকর্মীকে ভালোবাসে না।

লেখক: সিইও, রংধনু মিডিয়া

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031