ভর্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছে নগরীর ৯ সরকারি স্কুলের । প্রথম দফায় গতকাল (১৯ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘ক’ গ্রুপভুক্ত তিনটি স্কুলের (কলজিয়েট স্কুল, বাকলিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বালক শাখা ও ডা. খাস্তগীর সরকার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের) ভর্তি পরীক্ষা। এদিন সকাল দশটায় ৫ম ও ৮ম শ্রেণির এবং দুপুর ২টায় ৬ষ্ঠ শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তিনটি কেন্দ্রের মোট ৭টি ভেন্যুতে ১১ হাজার ৮০৫ জন ভর্তিচ্ছু প্রথম দফায় এ ভর্তিযুদ্ধে অংশ নেয়। তবে আবেদন করেও ৪৩৫ জন শিক্ষার্থী গতকালের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। সবকয়টি ভেন্যুতে সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন হলেও বাকলিয়া সরকারি স্কুল কেন্দ্রে দুপুরে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয় একটু বিলম্বে। অভিভাবকরা জানিয়েছেন- নির্ধারিত সময়ের প্রায় এক ঘন্টা পর এ পরীক্ষা শুরু হয়। বিলম্বের বিষয়টি স্বীকার করে ভর্তি পরীক্ষা তদারকির দায়িত্বে থাকা চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আবু হাসান সিদ্দিক আজাদীকে বলেন, ভেন্যুটির প্রশ্নপত্রের এক পৃষ্ঠায় প্রিন্টজনিত ক্রুটি ধরা পড়ে। পরীক্ষার আগমুহূর্তে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলা হলে বিষয়টি নজরে আসে। প্রশ্নের এক পৃষ্ঠা ভালো মতো দেখা যাচ্ছিল না। অস্পষ্ট প্রশ্নপত্র দিয়ে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা গ্রহণ উচিত হতোনা। তাই তাৎক্ষণিক প্রশ্নপত্র পুনরায় প্রিন্ট করতে একটু সময় লাগে। সবমিলিয়ে ৫০ মিনিট পর্যন্ত সময় লেগেছে। এরপরই কেন্দ্রটিতে পরীক্ষা শুরু করা হয়। একটু বিলম্ব হলেও কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা ছাড়াই প্রথম দিনের ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানান অতিরিক্ত জেলাপ্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি)। প্রসঙ্গত, বাকলিয়া সরকারি স্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে বালকদের একশটি শূন্য আসনের বিপরীতে ২ হাজার ৩১১টি আবেদন পড়ে। এর মধ্যে ৮২ জন ছাত্র অনুপস্থিত ছিল গতকাল।
পরীক্ষা শেষে নিয়ে নেয়া হয়েছে প্রশ্নপত্র :
প্রতি বছর ভর্তি পরীক্ষা শেষে প্রশ্নপত্র সাথে নিয়ে আসার সুযোগ পেলেও এবার সে সুযোগ পায়নি শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানিয়েছেন- পরীক্ষা শেষ হওয়া মাত্র শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রশ্নপত্র নিয়ে নেওয়া হয়। এ নিয়ে অনেক অভিভাবক অসস্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তবে মাউশি (মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর)’র সিদ্ধান্ত মেনেই পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে এবার প্রশ্নপত্র নিয়ে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলাপ্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আবু হাসান সিদ্দিক। তিনি বলেন, এবার সরকারি স্কুল ভর্তি সংক্রান্ত মাউশির (ঢাকায়) সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে মাউশির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সাথে আমি কথাও বলেছিলাম। তিনি নতুন এ সিদ্ধান্তের কথা নিশ্চিত করেন। আর এক্ষেত্রে মাউশির নির্দেশনার বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।
প্রশ্নপত্র কঠিন হয়েছে, দাবি অভিভাবকদের :
৫ম শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বেশ কঠিন হয়েছে বলে দাবি করেছেন অভিভাবকরা। পরীক্ষা শেষে গতকাল বিকেল থেকে আজাদী অফিসে ফোন করে অনেক অভিভাবক এ অভিযোগ করেন। পাঠ্য বইয়ের বাইরে থেকেও প্রশ্ন করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন একাধিক অভিভাবক। তবে পাঠ্য বই থেকেই শতভাগ প্রশ্ন তৈরি করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন অতিরিক্ত জেলাপ্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আবু হাসান সিদ্দিক। তিনি বলেন, শতভাগ প্রশ্নই পাঠ্য বইয়ের ভিতর থেকে করা হয়েছে। আর প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র একটু কঠিন মনে হতেই পারে। একই প্রশ্নপত্রে সব পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে কারো কাছে প্রশ্নপত্র কিছুটা সহজ মনে হবে, আবার কারো কাছে কিছুটা কঠিন মনে হতে পারে। বিষয়টি অস্বাভাবিক নয় বলেও মনে করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক। একই কথা বলেছেন শিক্ষকরাও।
তিন স্কুলের ভর্তি যুদ্ধ কাল : দ্বিতীয় দফায় ২১ ডিসেম্বর (শনিবার) অনুষ্ঠিত হবে ‘খ’ গ্রুপভুক্ত তিনটি স্কুলের (নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, হাজী মুহাম্মদ মহসিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও সিটি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়) ভর্তি পরীক্ষা। ওই দিন সকাল দশটা থেকে ১২টা পর্যন্ত ৫ম ও ৮ম শ্রেণির এবং দুপুর ২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত ৬ষ্ঠ শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ‘খ’ গ্রুপভুক্ত স্কুলগুলোর ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেবে ১৭ হাজার ৬৪৬ জন ভর্তিচ্ছু। অন্যদিকে, ‘গ’ গ্রুপে থাকা সরকারি মুসলিম হাই স্কুল, চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও বাকলিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে (বালিকা শাখা) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২২ ডিসেম্বর (রোববার)। ওই দিন সকাল দশটা থেকে ১২টা পর্যন্ত ৫ম ও ৮ম শ্রেণির এবং দুপুর ২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত ৬ষ্ঠ শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। শেষ দফায় (‘গ’ গ্রুপভুক্ত) স্কুলগুলোতে ভর্তির জন্য লড়বে ১৯ হাজার ৬৯৩ জন শিক্ষার্থী।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, নগরীর ৯টি সরকারি স্কুলের ৪ হাজার ২৪০টি শূন্য আসনের বিপরীতে ৫৩ হাজার ১৫টি আবেদন পড়েছে এবার। এর মধ্যে স্কুলগুলোর ৫ম শ্রেণির ২ হাজার ৪০ আসনের বিপরীতে আবেদন পড়েছে ২৪ হাজার ২৬১টি। ৬ষ্ঠ শ্রেণির ৭৩৫টি শূন্য আসনে আবেদন পড়েছে ১৪ হাজার ২১৯টি। ৮ম শ্রেণির ৩১৫ আসনের বিপরীতে ৪ হাজার ৮৭টি এবং ৯ম শ্রেণির ১ হাজার ১৫০টি শূন্য আসনের বিপরীতে ১০ হাজার ৪৪৮ টি আবেদন পড়েছে। স্কুলগুলোর ৭ম শ্রেণিতে এবার একজন শিক্ষার্থীও ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেনা। যদিও ২০১৭ সালে দুটি স্কুলে ১৪০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পায় ৭ম শ্রেণিতে।
ইলেকট্রনিকস ডিভাইস নিষিদ্ধ : পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোন, ক্যালকুলেটর ও স্মার্ট ঘড়িসহ যাবতীয় ইলেকট্রনিকস ডিভাইসের ব্যবহার নিষিদ্ধ বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে জেলাপ্রশাসন।
| M | T | W | T | F | S | S |
|---|---|---|---|---|---|---|
| 1 | 2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 |
| 8 | 9 | 10 | 11 | 12 | 13 | 14 |
| 15 | 16 | 17 | 18 | 19 | 20 | 21 |
| 22 | 23 | 24 | 25 | 26 | 27 | 28 |
| 29 | 30 | 31 | ||||
