এখনো আশংকাজনক নয় আমাদের দেশে করোনায় সংক্রমণ বৃদ্ধির হার । কিন্তু তা দেখে আমরা যেন গাছাড়া না দেই, প্রস্তুতিতে, সতর্কতায়; না ব্যক্তি পর্যায়ে, না নীতিনির্ধারক পর্যায়ে। কারণ ৫ থেকেই কিন্তু ৫শ হয়। ইউরোপ-আমেরিকার কথা বাদ দিলেও ভারতের উদাহরণটা অন্তত বিবেচনায় নিতে পারি, কারণ আমাদের ভৌগোলিক অবস্থান, জলবায়ু, তাপমাত্রা, জনঘনত্ব, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংস্কৃতি, অর্থনৈতিক কাঠামো, স্বাস্থ্যসেবার সীমাবদ্ধতা-সবই কিন্তু অভিন্ন।

ভারতে গত ৯ মার্চ করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল মাত্র ৪৩ জন। ওই সময়ে দৈনিক ৫/৬ জন করেই নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। গত ২০ মার্চ দেশটিতে নতুন করে ১১ জনের মধ্যে সংক্রমণ চিহ্নিত হয়েছিল। নতুন রোগীর সংখ্যা ১০০ হতে সময় লেগেছিল ৯দিন। কিন্তু ১০০ থেকে ২০০ হয়েছে মাত্র একদিনের ব্যবধানে, আর দুই দিনের ব্যবধানে তা ৪০০ ছাড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুনভাবে সংক্রমিত হয়েছে ৪৭৮ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪৩ জন থেকে বেড়ে এখন ২ হাজার ৫৪৭ জন।

ভারতে সবচেয়ে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে এশিয়ার বৃহত্তম বস্তি মুম্বাইয়ের ধারাভি বস্তিতে আজ টানা তৃতীয় দিনের মত নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে, যা কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের জোরালো ইঙ্গিত।

দেশের মানুষের একটি বড় অংশ এখনো সামাজিক দূরত্বকে পরোয়া করছে না, অন্যান্য স্বাস্থ্য বিধি তো মানছেই না। যারা ভাবছেন, শীতের দেশ বলে ইউরোপ-আমেরিকায় করোনা তাণ্ডব চালাচ্ছে, আমাদের মত উষ্ণদেশে কোনো ভয় নেই, অথবা সরকারি পরিসংখ্যান দেখে যারা অতি মাত্রায় আশ্বস্ত-তাদের প্রতি অনুরোধ, ভারতের উদাহরণটা অন্তত বিবেচনায় নিয়ে সতর্ক হোন।

যদি কোনো কারণে আমাদের পরিস্থিতির সামান্য অবনতিও হয় (আল্লাহ না করুন) তাহলে হয়তো সাধারণ ছুটির মেয়াদ বাড়াতে হবে অথবা লকডাউনেই যেতে হবে। তখন যাতে দেশের দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষগুলোকে অনাহারে না থাকতে হয়, তারও একটি প্রস্তুতি যেন নিয়ে রাখে সরকার। সেই সঙ্গে যেন ডাক্তার, নার্সসহ মেডিক্যাল প্রফেশনালস, পুলিশ ও জরুরি সেবায় নিয়োজিতদের পর্যাপ্ত সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়।

লেখক: সম্পাদক অর্থসূচক

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031