বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মওদুদ আহমদ নাইকো দুর্নীতি মামলায় নিজেকে সম্পূর্ণ নির্দোষ দাবি করে অব্যাহতি চেয়েছেন।
রবিবার পুরান ঢাকার বকশিবাজারে মাহামুদুল কবীরের আদালতে তিনি এই দাবি করেন।
এদিকে মামলাটির প্রধান আসামি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পক্ষে আগামী ১১ মার্চ অব্যাহতির আবেদনের শুনানির দিন ধার্য করেছে একই আদালত। রবিবার তিনি না আসায় এই তারিখ ধার্য করে আদালত।
সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া সময়ের আবেদন করেন। আবেদনে তিনি বলেন, আজ (রবিবার) এসএসসি পরীক্ষা থাকায় পরীক্ষার্থীদের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে তিনি আদালতে আসেননি। তাই আরেকটি তারিখ দিলে তিনি ওইদিন আদালতে আসবেন। শুনানি শেষে আদালত সময় আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ১১ মার্চ পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করে।
অন্যদিকে অব্যাহতির আবেদনের আংশিক শুনানিতে মওদুদ আহমদ বলেন, মামলাটিতে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। শুধু হয়রানির জন্য তাকে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে। মামলাটিতে তাকে নাইকো রিসোর্সের লিগ্যাল অ্যাডভাইজার হিসেবে দেখানো হলেও তা সঠিক নয়। তার নাইকোর সঙ্গে কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না। তাই তিনি অব্যাহতি পাওয়ার হকদার।
নাইকো মামলাটিতে এর মধ্যে বিতর্কিত ব্যবসায়ী তারেক রহমানের বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া (সিলভার সেলিম), জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম এবং বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান ও সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন ও সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একে এম মোশাররফ হোসেনের পক্ষে অব্যাহতির আবেদনের শুনানি সম্পন্ন হয়েছে।
মামলার অপর তিন আসামি নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ, তখনকার প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক পলাতক রয়েছেন।
২০১৫ সালের ২৯ নভেম্বর একই আদালতে খালেদা জিয়া আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলাটির তদন্তের পর ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে দুদক।
চার্জশিটের বৈধতা চ্যলেঞ্জ করে খালেদা জিয়া হাইকোর্টে রিট আবেদন করলে ২০০৮ সালের ৯ জুলাই হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করা হয়। ২০১৫ সালের ১৮ জুন হাইকোর্ট রুল ডিচার্জ করে স্থাগিতাদেশ প্রত্যাহার করেন।
প্রসঙ্গত, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর হাতে ‘তুলে দেওয়ার’ অভিযোগে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতির অভিযোগে মামলাটি করা হয়। মামলাটিতে ২০০৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর প্রথম হাইকোর্ট থেকে জামিন পান খালেদা।
