তার নাম মাইকো।  রাজধানীর বিভিন্ন অলিগলিতে রিকশা চালানো সেই আমেরিকান যু্বকের পরিচয় মিলেছে।তিনি বাংলাদেশে এসেছেন ঘুরতে। তবে বেশ কয়েক মাস ধরে তিনি রাজধানীতেই থাকেন এবং বেসরকারি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে চাকরিও করেন।

এই তরুণ রিকশা চালিয়ে বেশ পরিচিতি পেয়েছেন। সম্প্রতি তিনি পাঁচ হাজার গেঞ্জি বিতরণ করেছেন রিকশাচালকদের মধ্যে। রিকশা চালকদের তিনি খুবই আপন করে ফেলেছেন এরই মধ্যে।

আজ মাইকো ও তার বড় বোন পলা রিকশাচালকদের জন্য তেহারি রান্না করে প্যাকেট করে বিতরণ করেছেন। রাজধানীর পান্থপথে প্রায় ছয়শ রিকশাচালক ও গরিব মানুষকে তিনি ও তার বোন নিজ হাতে খাবার বিতরণ করেন।

সদা হাস্যেজ্বল এই যুবকের নিজের নামে একটি এনজিও খুলেছেন। নাম দিয়েছেন মিককো ফাউন্ডেশন। ফাইন্ডেশনের এক কর্মী ইসরাত। তিনি  জানান, আমেরিকা থেকে ঘুরতে এসে সে বাংলাদেশকে ভালোবেসে ফেলেন মাইকো। পরে তিনি রিকশা নিজে চালাতেন। গরিব চালকদের কষ্ট বুঝে ফেলেন। পরে নিজের নামে মাইকো ফাউন্ডেশন নামে একটি এনজিও খোলেন।

‘মূলত তার ফেসবুকে তার সব কার্যক্রম তিনি শেয়ার করেন। তার ইচ্ছে তার নিজ দেশ থেকে সাহায্য এনে এদেশের গরিবদের সাহায্য করা। বর্তমানে যা সাহায্য করছেন সবই তার নিজের অর্থে।’

‘মাইকো শুধু রিকশাচালকদের বন্ধু না। রাস্তার অনেক খেটে খাওয়া মানুষও তাকে ভালোবাসে। ভাষাগত সমস্যা থাকলেও তাদের সাথে ইশারা ইঙ্গিতে গড়ে তুলেছেন নিবিঢ় সম্পর্ক। তিনি সব সময় এসব মানুষদের সাথে মনের ভাব গড়ে তোলার চেষ্টা করেন, বুকে টেনে নেন।’

ইসরাত বলেন, ‘রাজধানীতে ঘুরতে গিয়েই রিকশা চালানোর ইচ্ছে জাগে। তারপর মাঝে মাঝে রিকশা চালকদের বসিয়ে তিনি নিজেই রিকশা চালাতেন। পরে তাদের জন্য গেঞ্জি বানিয়ে তা রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বিতরণ করেন। পরে আজ তিনি কয়েকশ রিকশা, সিএনজি চালক ও খেটে খাওয়া মানুষের মাঝে তেহারি রান্না করে এনে বিতরণ করেন। তার সাথে তার বোন পলাও যোগ দিয়েছেন। পলা মাইকো এসব কর্মকাণ্ড দেখে তারও ইচ্ছে হয়েছে তার কাজ করার।’

খাবার নেবার সময় কথা হয় রিকশাচালক মাসুদের সঙ্গে। তিনি জানান, তেহারি কেনার সামর্থ তার প্রতিদিন থাকে না। আর বিদেশি যুবকে এরকম খাওয়ার ব্যবস্থা করায় তিনি বেশ খুশি।

মাইকোর কাছ থেকে খাবার নেওয়ার সময় তাকে বুকে জড়িয়ে ধরেছেন মাসুদ। আর মাইকো তাকে বলেছে, ‘আই লাভ ইউ’।

এই যুবকের কাছ থেকে একটি গেঞ্জি উপহার পেয়েছেন রহমত মিয়া। এবার তিনি পেলেন তেহারি।

খাবার বিতরণের সময় মাইকো সাথে বেশ কয়েকবার কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তিনি বলেন, ‘আমি এখন ওদের খাবার দিচ্ছি, আমি ব্যস্ত আছি। ওরা ক্ষুধার্থ। ওদের খাবার আগে দিতে হবে।’

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031