মুসা মাতৃগর্ভে থাকাবস্থায়ই বিক্রি হয়ে গেছে । ২ দিন বয়সের এ শিশুকে নিতে এসে  ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আটক হয়েছেন সোনিয়া নামের এক নারী। বুধবার  রাত ৮টার দিকে হাসপাতালের ১০৬ নং গাইনি ওয়ার্ড  থেকে ২৮ বছর বয়সের সোনিয়াকে আটক করা হয়। ওই ওয়ার্ডে ভর্তি জোসনা নামে এক মহিলার সদ্যোজাত সন্তান নিতে এসেছিলেন তিনি।  যে শিশুর নাম মুসা।  জোসনার স্বামীর নাম টুকু মিয়া। তারা গাজীপুর টঙ্গীর রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় ফুটপাতে থাকেন। জোসনা  বলেন, এক সময় আমি কমলাপুর রেলস্টেশন এলাকায় দোকানে দোকানে পানি দেয়ার কাজ করতাম। তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা থাকাবস্থায় সেখানে সোনিয়া নামের এক নারীর সঙ্গে আমার পরিচয় হয়।

আমরা গরিব মানুষ। সোনিয়া ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে আমার পেটের সন্তানকে কেনার প্রস্তাব দেয়। গরিব বিধায় টাকার বিনিময়ে সন্তান বিক্রি করতে রাজি হই। অগ্রিম হিসাবে সোনিয়া আমাকে তিন হাজার টাকাও দেয়। মঙ্গলবার সিজারের মাধ্যমে আমার ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। নাম রেখেছি মুসা। বুধবার রাতেই সোনিয়া হাসপাতালে আমার সন্তানকে নিতে আসে। এসময় তাকে সন্তান না দেয়ার কথা বলে অগ্রিম তিন হাজার টাকা ফেরত নিয়ে যাওয়ার কথা বলি। কিন্তু সোনিয়া তারপরও জোর করে আমার সন্তান নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে হাসপাতালের লোকজন তাকে আটক করে। সোনিয়া তার স্বামী ও দুই সন্তান নিয়ে পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজারের নাসির উদ্দিন সরদার লেনের একটি বাসায় থাকেন। তিনি জোসনার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এক সময় জোসনা আমার বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করতো। গরিব মানুষ বিধায় তাকে আমি নগদ টাকা দিয়ে সাহায্য করেছি। তার সন্তান জন্মের কথা শুনে তাকে হাসপাতালে দেখতে এসেছি মাত্র। এর বেশি কিছুই জানি না। হাসপাতালের ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বরত নার্স কামরুন নাহার ও টুম্পা হাওলাদার বলেন, হঠাৎ সোনিয়া নামের ওই নারী নবজাতকটিকে কোলে নিয়ে ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে গেটের দিকে যেতে থাকলে আমরা তাকে আটক করি। কারণ অনেক নিয়ম-কানুন মেনে নবজাতক নিয়ে হাসপাতাল ছাড়তে হয়। এসব কিছু না করেই সোনিয়া নবজাতককে নিয়ে দ্রুত হাসপাতালে ত্যাগের চেষ্টা করলে তাকে আটক করা হয়।
ঢামেক হাসপাতালের প্রশাসনিক ব্লকের ওয়ার্ড মাস্টার মোহাম্মদ রিয়াজ জানান, সোনিয়াকে আটক করার পরপরই শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেও অবগত করা হয়েছে। এ বিষয়ে শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ভোজন বিশ্বাস  বলেন, নবজাতকের        মা জোসনা বলেছেন, তাদের মধ্যে টাকা-পয়সা নিয়ে একটা লেনদেনের ব্যাপার ছিল।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031