মায়ের পরকীয়া, বাবার মাদকাসক্তিতে ৫ মাস বয়সী সুমাইয়ার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। মা লাপাত্তা দু’দিন ধরে, বাবা কয়েক মাস। অগত্যা হাসপাতালই ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুটির বর্তমান ঠিকানা।  এ অবস্থায় শিশুটিকে আগলে রাখছেন নানী আজব চান বিবি। ৬ বছর আগে বাহুবল শেওড়াতুলী গ্রামের মৃত জাহির মিয়ার পুত্র শ্যামল ওরফে সৈকতের সাথে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন পার্শ্ববর্তী হাসনাবাদ গ্রামের মৃত আকল মিয়ার কন্যা আছিয়া খাতুন। বিয়ের পর থেকে প্রথম ৫/৬ মাস তাদের দাম্পত্য জীবন ভালোই চলছিল। কিছুদিন যেতে না যেতেই সৈকত জানতে পারে তার স্ত্রী নিজ ভগ্নিপতির সাথে পরকীয়ায় আসক্ত। এ নিয়ে তাদের মাঝে প্রতিনিয়তই ঝগড়া-বিবাদ সৃষ্টি হতো। একপর্যায়ে আছিয়া খাতুন তার আপন ভগ্নিপতি স্বস্তিপুর গ্রামের আবদুল কাদিরের হাত ধরে পালিয়ে যায়। এ অবস্থায় স্ত্রীকে হারিয়ে সৈকত ঢুবে যায় নেশার রাজ্যে। এ ভাবে চলে ৩ বছর। আবারও আছিয়া পূর্বের স্বামী সৈকতের ঘরে ফিরে আসে। শুরু হয় দ্বিতীয় দফা দাম্পত্য জীবন। এরই মাঝে তাদের কোলজুড়ে আসে শিশু সুমাইয়া আক্তার। শিশুটি জন্ম নেয়ার পর থেকে তাদের সংসারে অভাব-অনটন দেখা দিলে ২ মাস আগে সৈকত নিরুদ্দেশ হয়।
আছিয়ার মা আজব চান জানান, তার মেয়ে আছিয়ার স্বামী নিরুদ্দেশ হওয়ার পর থেকে আবারও নতুন প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। তার প্রেমের আসক্তি বেড়ে যাওয়ায় সন্তানের প্রতি তার আগ্রহ কমে যায়। ফলে অযত্ন-অবহেলায় শিশু সুমাইয়ার শরীরে বাসা বাঁধতে থাকে রোগ-বালাই। অবশেষে গত বুধবার ভোরে শিশু সুমাইয়াকে ফেলে রেখে নিরুদ্দেশ হয় মা আছিয়াও। ধারণা করা হচ্ছে, এবারও আছিয়া প্রেমিকের সঙ্গেই পালিয়ে গেছে। এ অবস্থায় দুগ্ধপোষ্য শিশুটিকে নিয়ে মারাত্মক বেকায়দায় পড়েন আছিয়া খাতুনের মা আজব চান বিবি। বাধ্য হয়ে তিনি বুধবার দুপুরে শিশু সুমাইয়াকে কোলে নিয়ে হাজির হন বাহুবল মডেল থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামানের কার্যালয়ে। তাৎক্ষণিক ওসি অসুস্থ শিশু সুমাইয়ার পিতা মাদকাসক্ত সৈকতকে ফোন দিলে সে ঐ শিশু তার সন্তান নয় বলে জানায়। তখন ওসি অসুস্থ শিশুকে বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার এমএ কুদ্দুছ জানান, শিশুটি ক্রনিক ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পানিশূন্যতায় ভুগছিল। একদিনের চিকিৎসায় সে কিছুটা সুস্থ হয়েছে।
আজব চান জানান, শিশুটিকে নিয়ে তিনি মারাত্মক বিড়ম্বনায় পড়েছেন। দুগ্ধপোষ্য শিশুটির মা কাছে না থাকায় তার লালন-পালন কিভাবে করবে তা নিয়ে তার যত দুশ্চিন্তা। তিনি বলেন, আমি নিজে শ্রমজীবী পুত্র হাবিবুর রহমানের ওপর নির্ভরশীল। তার পুত্রেরও রয়েছে ৪টি সন্তান। সে তাদের মুখেই ঠিকমতো আহার দিতে পারে না।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031