একটি আইন রয়েছে জনস্বাস্থ্য-সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা মোকাবিলা ও স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি হ্রাসকরণের লক্ষ্যে দেশে । সংক্রামক ব্যাধিতে মানুষ যেন নিজে বাঁচার পাশাপাশি অন্যকে সংক্রমিত না করতে পারে সে লক্ষ্যে আইনটি করা হয়। এই আইন অমান্য করলে শাস্তির বিধানও পরিষ্কার।

তবে আইনটি সম্পর্কে জানে না অনেকেই। অধিকাংশ মানুষই এই আইন সম্পর্কে তেমন ওয়াকিবহাল না হওয়ায় মানার বিষয়েও তাদের কোনো গা নেই। এই আইনের ওপর সচেতনতা থাকলে স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি কমিয়ে আনা সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এই জন্য মানুষ যেন আইনটি সম্পর্কে জানতে পারে সে বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করা জরুরি বলেই তাদের অভিমত।

জনস্বাস্থ্য-সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা মোকাবিলা এবং স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি হ্রাসকরণের লক্ষ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি, সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলের উদ্দেশ্যে ২০১৮ সালে সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন প্রণয়ন করা হয়।

জানা গেছে, এ আইন লঙ্ঘন করলে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে। তারপরেও আইন অমান্য করে যাচ্ছেন বেশির ভাগ মানুষ। হাট-বাজার, চায়ের দোকান খোলা রয়েছে প্রায় জায়গাতেই। এখানে মানুষের ভিড় চোখে পড়ার মতো।

করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ ছোঁয়াচে রোগ। এ ভাইরাস খালি চোখে দেখা যায় না। আর গ্রাম অঞ্চলে সচরাচর পরীক্ষা করার সুযোগ নেই। এজন্য সহজে বোঝাও মুশকিল যে সংক্রমিত হয়ে কেউ রোগ ছড়াচ্ছেন কী-না।

সিরাজগঞ্জ সদরের অনেক গ্রাম বিশেষ করে খোকশাবাড়ি, শৈলাবাড়ি, গুনের গাতিসহ অনেক গ্রামে আইন না মানার দৃশ্য। টাঙ্গাইলের কালিহাতী সদর, কালিহাতী পৌরসভা ও কালিহাতী বাসস্ট্যান্ডে এরকম চিত্র দেখা গেছে।

জানতে চাইলে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শ্রমিক নেতা জিয়া ঢাকা টাইমসকে বলেন, জীবন মৃত্যু আল্লাহর হাতে। মরণ থাকলে মরবো। ভাইরাসের জন্য ঘরে বসে থাকলে সংসার চলবে না। টাঙ্গাইলের চায়ের দোকানদান রানা ঢাকা টাইমসকে বলেন, ব্যবসা না করলে চলবো কিভাবে। আমরা দিন রোজগার করি। দিন খাই আমাদের ঘরে বসে থাকার সুযোগ নাই।

শ্রমিক জামাল হোসেন বলেন, শহর বন্দের যাওয়া যায়না। আমারা কাজ না করলে খাব কি।

আইন অমান্যের ব্যাপারে জানতে চাইলে ব্যরিস্টার হুমায়ুন কবির পল্লব ঢাকা টাইমসকে বলেন, এ আইনটির নাম হলো সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮। ২০১৮ সনের ৬১ নং আইন। এই আইনের ২৪ ধারায় বলা হয়েছে, যদি আক্রান্ত কোনো ব্যক্তি সংক্রামকের তথ্য গোপন করে, যার ফলে অন্য কেউ আক্রান্ত হয় তাহলে সে দোষী সাব্যস্ত হবে। তাকে ছয় মাসে কারাদণ্ড অথবা ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে।

২৫ ধারায় বলা আছে, এই আইনের ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে দায়িত্ব পালনের সময় কেউ যদি বাধা প্রদান করে এবং দায়িত্ব পালনকারী ব্যাক্তির আদেশ অমান্য করে তাহলে সেই ব্যক্তিকে ৩ মাসের কারাদণ্ড অথবা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে। ২৬ ধারায় বলা আছে কেউ যদি এই সংক্রামক নিয়ে মিথ্যা বা ভুল তথ্য প্রদান করে তাহলে অনূর্ধ্ব দুই মাস কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে। আইনের এ ধারাগুলো আমল অযোগ্য। মীমাংসা যোগ্য ও জানিমযোগ্য।

আইন শৃংখলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইতিমধ্যে বিদেশফেরত ব্যক্তিদের বিশেষ করে যারা কোয়ারেন্টাইনে থাকছেন না বা কোয়ারেন্টাইন মানছেন না তাদের খুঁজে বের করা হবে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031