‘আমরা এতদিন উন্নয়ন বলতে রাস্তাঘাট, অবকাঠামো উন্নয়ন বুঝতাম। কিন্তু পিকেএসএফ এর মাধ্যমে আমরা বুঝতে পেরেছি সকলকে নিয়ে মানুষের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করাই উন্নয়ন। কাউকে বাদ দিয়ে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয় এটা আমরা বুঝতে পেরেছি।’
মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলায় বাংলাদেশ পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন-পিকেএসএফ এর এক অনুষ্ঠানে বলছিলেন একজন বক্তা। উপজেলার সবকটি ইউনিয়নে ‘সমৃদ্ধি কর্মসূচি’ নামে একটি বিশেষ উদ্যোগ চালু উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই কর্মসূচির এর মাধ্যমে উপজেলার আটটি উইনিয়নের মানুষের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সুপেয় পানি, জীবনযাত্রার মান উন্নয়নসহ মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছে পিকেএসএফ।
প্রকল্পের আওতায় সুবিধাভোগীদেরকে স্বাস্থ্যসেবা ও পুষ্টি সেবা, শিক্ষা কার্যক্রম, পরিবার উন্নয়ন পরিকল্পনা, অর্থিক সহায়তা, বিশেষ সঞ্চয় কার্যক্রম, সৌরবিদ্যুৎ বিষয়ে কার্যক্রম, বন্ধুচুলা বিতরণ, ঔষধি গাছ ‘বাসক’ চাষ, বসতবাড়িতে সবজি চাষ, কেঁচোসার উৎপাদন ও ব্যবহার, কৃমিনাশক ট্যাবলেট বিতরণ, ভিক্ষুক পুনর্বাসন, বসতবাড়ির জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে বাড়ি তৈরি, ক্রীড়া ও সংস্কৃতিক কার্যক্রম, বয়স্কদের জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচি এবং সামাজিক উন্নয়ন ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ বিষয়ে নানা কার্যক্রম চলবে।
১৯৯০ সালে বাংলাদেশ সরকার পিকেএসএফ প্রতিষ্ঠা করে। আর সমৃদ্ধি কার্যক্রম শুরু হয় ২০১০ সালে। প্রথম পর্বে তিন ধাপে ৪০ টি জেলার ৪৩ টি উপজেলার ৪৩ টি ইউনিয়নে এই কর্মসূচি চালু করা হয়। পরে ধাপে ধাপে ২০০ টি ইউনিয়ন অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সবশেষ কোমলগঞ্জ উপজেরার আদমপুর ইউনিয়ন এই প্রকল্পের আওতায় আসছে।
শনিবার দুপুরে মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের হলরুমে এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন পিকেএসএফের প্রধান অর্থনীতিবিদ কাজী খলীকুজ্জমান আহমেদ।
পিকেএসএফএ চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা উন্নয়ন ও অধিকারের মধ্যে সমন্বয় করছি। অনেকে বলে উন্নয়ন আগে নাকি অধিকার আগে। আমরা উন্নয়ন ও অধিকার একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠায় কাজ করছি।’
পিরোজপুরে সদর উপজেলা ও চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলাতেও সমৃদ্ধি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছে বলেও জানানো হয় অনুষ্ঠানে।
পিকেএসএফের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (প্রশাসন) জসীম উদ্দিন বলেন, ‘মানব মর্যাদা অর্জন সমৃদ্ধি কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য। আমরা আমাদের কর্মীদের সক্ষমতা বাড়াচ্ছি যাতে করে তারা ভালোভাবে সেবা দিতে পাবে।’
অনুষ্ঠানে জানানো হয় রাজনগর উপজেলায় আটটি ইউনিয়ন আছে। এখানে ২ লক্ষ ৫০ হাজার জনসংখ্যা। সমৃদ্ধি কার্যক্রমের মাধ্যমে এ জনসংখ্যাকে জনসম্পদে রূপান্তরিত করা হবে।
সভাপতির বক্তব্যে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শেখ আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘বয়ে চলার নাম যদি হয় নদী, এগিয়ে চলার নাম সমৃদ্ধি’।
উপজেলা চেয়ারম্যন আছকির খান, হীড বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক আনোয়ার হোসেন, টিএমএসএস এর উপ-নির্বাহী পরিচালক আব্দুল কাদের, রাজনগর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এ সময় বক্তব্য রাখেন।
