বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দেশের মানুষ বর্তমানে অবৈধ নির্দয় শাসকগোষ্ঠীর নির্মম শিকলে বন্দি হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন । ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আসাদ দিবস উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বাণীতে তিনি এ অভিযোগ করেন। খালেদা জিয়া বলেন, এদেশে একদলীয় শাসনের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে গায়ের জোরে। ফলে গণতন্ত্র ধ্বংসের পাশাপাশি সামাজিক, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিনষ্ট হয়েছে। আইন, বিচার, প্রশাসন, পুলিশ সবকিছু আইন অনুযায়ী নয় বরং ব্যক্তির ইচ্ছা-অনিচ্ছানুযায়ী নিয়ন্ত্রিত হয়। তিনি বলেন, আজকের এই দিনে আমি স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, মানুষের স্বাধীনতা নিশ্চিত ও গণতন্ত্রকে শক্তিশালীকরণই সবচেয়ে জরুরী কাজ বলে মনে করি।

আর এর জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে আমি দেশবাসীর প্রতি আহবান জানাই। বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, একটি স্বাধীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য নিজের জীবন দিয়ে গেছেন শহীদ আসাদুজ্জামান। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়ে আমরা যদি এদেশের মানুষের মৌলিক ও মানবিক অধিকারকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে পারি, তাহলেই শহীদ আসাদের প্রতি যথাযথ সম্মান দেখানো হবে। খালেদা জিয়া বলেন, আমাদের স্বাধিকার ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে শহীদ আসাদ এক অবিস্মরণীয় নাম। সামরিক স্বৈরশাসনের কবল থেকে গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে অকুতোভয় এ বীর সেনানী রাজপথে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তার শোণিতের ধারা বেয়ে স্বৈরশাসনের পতন ত্বরান্বিত হয়েছিলো। অর্জিত হয়েছিলো এদেশের মানুষের স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক অধিকার। গণতন্ত্রের জন্য শহীদ আসাদের আত্মদান পরবর্তীকালে বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে আমাদেরকে অনুপ্রাণিত করেছে। শহীদ আসাদ দিবস উপলক্ষে দেয়া পৃথক বাণীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ১৯৬৯ সালে আইউব বিরোধী গণআন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী অন্যতম ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামানের আত্মত্যাগ জীবন বাজী রেখে গণতন্ত্র রক্ষার সংগ্রামে আমাদের প্রেরণার উৎস। যে গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি জীবন দিয়ে গেছেন, সেটির পরিপূর্ণ বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার কাজে আত্মনিয়োগ করা আমাদের অবশ্য কর্তব্য। সে লক্ষ্যে বর্তমানে গণতন্ত্র বিরোধী অপশক্তিগুলোর চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে জনগণের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমাদেরকে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হতে হবে। বহুমত, পথ, চিন্তা ও বিশ্বাসের বহুদলীয় গণতন্ত্রের অবরুদ্ধ ধারাকে মুক্ত করতে কর্তৃত্ববাদী শাসনের অবসান ঘটাতে হবে। শহীদ আসাদ দিবসে এই হোক আমাদের দৃপ্ত শপথ। উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র আসাদ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন (মেনন গ্রুপ)-এর ঢাকা হল শাখার সভাপতি ছিলেন। ১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারি ছাত্র সংগ্রাম কমিটির ১১ দফা আদায়ের মিছিলে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন। তার মৃত্যু ঊনসত্তরের ছাত্র-গণআন্দোলনের গোটা অবয়বকেই পাল্টে দেয় এবং তা আইয়ুব খানের শাসন ও নিপীড়নমূলক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থানে পরিণত হয়।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031