মান্না শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দেন । কল্যাণমুখী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন করার লক্ষ্য নিয়ে নাগরিক ঐক্যকে রাজনৈতিক দল হিসেবে ঘোষণা করেছেন সংগঠনটির আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।
তিনি বলেছেন, তার দল কোনো রাজনৈতিক দোকান হবে না। কাজের মাধ্যমেই সেটা প্রমাণ করবেন তারা। বলেছেন, দেশে যে দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি চলছে তা থেকে বেরিয়ে নতুন ধারার রাজনীতি করার জন্য নাগরিক ঐক্য আজ রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করল।
দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়ে মান্না বলেন, ‘একটা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনই পারে এই শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি থেকে বেড়িয়ে আসতে। আমরা বিশ্বাস করি শুধু একটা সুষ্ঠু নির্বাচনি হওয়া মানেই গণতন্ত্র নয়, কিন্তু এটাও সত্য সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ছাড়া গণতন্ত্রের কথা বলাও হাস্যকর। সুতরাং যত দ্রুত সম্ভব একটা সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জোর দাবি জানাচ্ছি।’
নাগরিক ঐক্যকে সামাজিক সংগঠন থেকে রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে ঘোষণা দিতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। শুরুর দিকে নাগরিক ঐক্য সামাজিক সংগঠন থাকলেও সংগঠনটির ৫ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে রাজনৈতিক দল হিসেবে ঘোষণা দিলেন সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা মাহমুদুর রহমান মান্না।
রাজনৈতিক দল হিসেবে নাগরিক ঐক্য ভিন্ন ধরনের হবে উল্লেখ করে মান্না বলেন, দেশে বড় দুটো দলের বাইরে কিছু একটা করতে চাই। এ কারণে নাগরিক ঐক্য আজ রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। এই দলের লক্ষ্য হলো কল্যাণমুখী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন করা।
দেশের বহু রাজনৈতিক দলের ভিড়ে তিনি আর একটি ‘দোকান’ খুললেন কি না প্রশ্ন তুলে মান্না বলেন, ‘দেশে অনেক দল আছে। সমালোচনা আছে, হবে। তবে আমরা কাজের মধ্য দিয়ে নিজেদের প্রমাণ করব। আমরা দোকান নই।’
দেশের অনেক নামসর্বস্ব রাজনৈতিক দল ও সংগঠনকে অনেকে রাজনৈতিক দোকান বলে উপহাস করে থাকেন। কারণ কোনো রাজনৈতিক নেতার পৃষ্ঠপোষকতায় সভা-সেমিনার করাই তাদের প্রধান কাজ।
নাগরিক ঐক্য শুরুর প্রেক্ষাপট তুলে ধরে মান্না বলেন, ‘আমি ঢাকা উত্তরের একজন মেয়র প্রার্থী হিসেবে নিজেকে ঘোষণা দিয়েছিলাম। বড় দুই দলের বাইরে মানুষের জন্য কাজ করতে চেয়েছিলাম। অনেক মানুষ আমার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল। সবাই মিলে নাগরিক ঐক্য গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।’
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক বলেন, ‘দেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ভিষণভাবে সংকুচিত হয়েছে। দেশের ব্যাংকগুলোতে অলস টাকার পাহাড় জমে আছে, ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগ করতে ভয় পাচ্ছে। যদিও ব্যাংক ঋণের সুদের হার অনেক কম। তিনি বলেন, দেশের গণতন্ত্রহীনতার আরেক ভয়ঙ্কর ফলাফল হচ্ছে জঙ্গিবাদের প্রসার। প্রায় প্রতিদিনই আমরা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর জঙ্গিবিরোধী অভিযানের খবর পাই। জঙ্গিদের কারণে জনগণ, এমনকি রাষ্ট্রেরও নিরাপত্তার মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। সব মিলিয়ে গোটা দেশ একটা ভয়ের চাদরে ঢাকা পড়ে আছে।’
