গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে এ যাবতকালের মধ্যে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৯১১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলছে। এ নিয়ে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৫২ হাজার ৪৪৫ জনে। এসময়ে করোনায় মারা গেছেন ৩৭ জন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৭০৯ জনে। এছাড়া, নতুন সুস্থ হয়েছেন ৫২৩ জন।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে যুক্ত হয়ে করোনাভাইরাস সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরেন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা।

তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫২টি ল্যাবে এ যাবতকালের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৪ হাজার ৯৫০ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় রেকর্ড ১২ হাজার ৪০৭ জনের। এতে ২ হাজার ৯১১ জনের করোনা শনাক্ত হয়, যা এ যাবতকালের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যা। এর আগে গতকাল (১ জুন) ২ হাজার ৩৮১ জনের করোনা শনাক্ত হয়। গত ৩১ মে একদিনে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৫৪৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়। গত ২৯ মে একদিনে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৫২৩ জন, ২৮ মে দুপুর পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ ২ হাজার ২৯ জন, ২৫ মে ১ হাজার ৯৭৫ জন, গত ২৩ মে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৮৭৩ জন, গত ২১ মে একদিনে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৭৭৩ জনের দেহে করোনা শনাক্তের কথা জানানো হয়েছিল। তার আগে ২০ মে শনাক্ত হয়েছিল ১ হাজার ৬১৭ জনের।

এ পর্যন্ত ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৭৩ জনের করোনা পরীক্ষা করে দেশে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৪২ হাজার ৪৪৫ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২২.৯১ শতাংশ।

এছাড়া এই সময়ে মৃত্যু বরণ করেছেন ৩৭ জন। এর আগে গত ৩১ মে একদিনে সর্বোচ্চ ৪০ জন মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছিল। তার গত ৩০ মে ২৮ জন মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছিল। ২২ মে একদিনে সর্বোচ্চ ২৪ জনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছিল। এর আগে গত ১৮, ১৯ ও ২৫ মে একদিনে সর্বোচ্চ ২১ জন ও ২২ মে ২২ জনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছিল। এ নিয়ে মোট মৃত্যু ৭০৯ জনের। নতুন মৃতদের মধ্যে পুরুষ ৩৩ জন ও নারী ৪ জন।

তিনি আরও বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন সুস্থ হয়েছেন ৫২৩ জন। এ নিয়ে মোট ১১ হাজার ১২০ জন সুস্থ হয়েছেন।

ব্রিফিংয়ের করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে অধ্যাপক নাসিমা বলেন, তরল খাবার, কুসুম গরম পানি ও আদা চা পান করবেন। সম্ভব হলে মৌসুমী ফল খাবেন ও ফুসফুসের ব্যায়াম করবেন। এ সময় ধূমপান ত্যাগ করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, এটি ফুসফুসের কার্যকারীতা নষ্ট করে দেয়।

চীনের উহান থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনা বাংলাদেশে প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। সেদিন তিনজনের শরীরে করোনা শনাক্তের কথা জানিয়েছিল আইইডিসিআর।

এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। দিন দিন করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ায় নড়েচড়ে বসে সরকার।

ভাইরাসটি যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় সব সরকারি-বেসরকারি অফিস। কয়েক দফা বাড়ানো হয় সেই ছুটি, যা এখনও অব্যাহত আছে। ৭ম দফায় বাড়ানো ছুটি চলে ৩০ মে পর্যন্ত। ৩১ মে থেকে সাধারণ ছুটি নেই। তাই অফিস আদালতে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় সরঞ্জামাদি রাখা ও সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার উপর গুরত্ব দেন ডাক্তার নাসিমা।

এদিকে, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের পরিসংখ্যান বলছে, সোমবার সকাল থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত একদিনে বিশ্বে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখেরও বেশি। গতকাল সারাবিশ্বে এক লাখ ২ হাজার ৪০২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৩৫৪৬ জন। একই সময়ে ৫৬ হাজার ৮৯১ জন সুস্থ হওয়ায় মোট সুস্থ হয়েছেন ২৯ লাখ ০৩ হাজার ৪১৮ জন।

করোনায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ও আক্রান্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৮ লাখ ৫৯ হাজারের বেশি মানুষ এবং মৃত্যু হয়েছে এক লাখ ৬ হাজার ৯২৫ জন। তবে গতকাল পর্যন্ত ব্রাজিলে করোনায় আক্রান্তের হার বাড়ছে। দেশটিতে ৫ লাখ ২৯ হাজার ৪০৫ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩০ হাজার ৪৬ জনের।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031