পুলিশে সোপর্দ করেছে জনতা কুড়িগ্রামের উলিপুরে এক যুবককে ব্রহ্মপুত্র নদের নির্জন চরে নিয়ে যাওয়ার সময় একদল দুর্বৃত্তকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে । এ সময় ওই যুবকজীবন বাঁচাতে মোটরসাইকেল থেকে লাফ দিয়ে চিৎকার শুরু করলে স্থানীয় জনতা দুর্বৃত্তদের আটক করে ৯৯৯ এ ফোন করে। গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের পালের ভিটায় এ ঘটনা ঘটে।

অভিযোগ উঠেছে দুর্বুত্তরা ওই যুবককে অপহরণ করে মুক্তিপণের দাবিতে ব্যর্থ হয়ে হত্যার উদ্দেশে নিয়ে যাচ্ছিল। এ ঘটনায় মামলার পর বুধবার দুপুরে আটকদের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ধরনীবাড়ি ইউনিয়নের মাদারটারী গ্রামের ইউসুফ আলীর মেয়ে সুলতানা ওরফে ইসমোতারা বেগমের সঙ্গে ঢাকায় পোশাক কারখানায় চাকরির সুবাদে রাকিবুল ইসলামের প্রেমের সম্পর্ক হয়। রাকিব সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার সরাই হাজিপুর গ্রামের আফছার আলীর ছেলে। এখন থেকে প্রায় তিন বছর আগে তারা বিয়ে করেন।

ইসমোতারা বাবার বাড়িতে থাকায় গত সোমবার রাকিবুল শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে আসেন। গত মঙ্গলবার দুপুরে স্থানীয় দুর্বৃত্তরা ইসমোতারার বাড়িতে এসে তাদের বিয়ের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করেন। এরই এক পর্যায়ে রাকিবুলকে নিরাপদে রাখার কথা বলে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। গত মঙ্গলবার সারাদিন বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করে রাকিবুলকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে ফাঁকা স্টাম্পে সই করাসহ মুক্তিপণের টাকা দাবি করে। পরে ব্যর্থ হয়ে ওই দিন গভীর রাতে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ব্রহ্মপুত্র নদে নিয়ে যায়। এ সময় তার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড় পালের ভিটায় দুর্বৃত্তদের আটক করে ৯৯৯ এ ফোন দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে চারজনকে আটক করে।

আটকরা হলেন, ধরনীবাড়ি ইউনিয়নের মধুপুর গ্রামের চাকরিচ্যুত সেনা সদস্য এরশাদুল হক (৪৪) একই ইউনিয়নের মাদারটারী গ্রামের মাহাবুর (৩২), রাশেদুল ইসলাম (৩০) ও আব্দুর মান্নার (৩৫)। এ সময় মাদারটারী গ্রামের পলাশ মিয়া (২৮) পালিয়ে যান।

রাকিবুলের স্ত্রী ইসমোতারা বলেন, এরশাদুল আমার বাড়িতে এসে আমাদের বিয়ের ব্যাপারে জানতে চায়। আমরা তিন বছর আগে বিয়ে করেছি বললেও তারা বিশ্বাস করতে চায় না। পরে তারা আমার স্বামীকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যার উদ্দেশ্যে ব্রহ্মপুত্র নদে নিয়ে যায়।

রাকিবুলের বাবা আফছার আলীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গত মঙ্গলবার দুপুর থেকে আমার ছেলের ফোন থেকে একজন আমাকে কল করে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। টাকা দিতে অপরাগতা জানালে পরবর্তীতে আমার ছেলেকে মারধর করে ফোনে ছেলের কান্নাকাটি শোনায়। পরে বিষয়টি রায়গঞ্জ থানায় জানিয়েছি।

উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘এ ব্যাপারে মামলা করা হয়েছে। আসামিদের জেল-হাজতে পাঠানো হয়েছে।’

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031