ছয় বছর আগে কেন্দুয়ার সাধু রহমতের ছেলে দোয়াদ বিয়ে করেন একই এলাকার রেবেকাকে। কিন্তু তাদের বিয়ের রেজিস্ট্রি কাবিন নেই। বিয়ের পর সেলিম ও জাহিদ নামে তাদের দুই সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই স্বামী দোয়াদ রেবেকার ওপর বিভিন্ন নির্যাতন চালালেও বাবার বাড়ি থেকে টাকা-পয়সা বা কিছু আনতে এতদিন কোনও চাপ দেননি। হঠাৎ করে যেন অচেনা হয়ে যান দোয়াদ।ভিন্ন এক চরিত্রে অভির্ভুত হন তিনি। এবার বাবার বাড়ি থেকে মোটা অংকের টাকা এনে দেওয়ার জন্য তিনি স্ত্রীর ওপর চাপ প্রয়োগ করেন। রেবেকা অস্বীকৃতি জানালে স্বামী ও তার বোন রেবেকার ওপর শারিরীক নির্যাতন শুরু করেন। নির্যাতন চলছিল বেশ কিছুদিন ধরেই। পরে একদিন এতোটাই আহত করে ফেলেন যে, রেবেকাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করাতে হয়।
সাভারের শাহিনা (ছদ্মনাম) গত অক্টোবরে এসেছেন ঢামেক-এর ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে। তিন বছরের ছেলে সন্তানের মা শাহিনাকে পিটিয়ে স্বামী রমিজ সারা শারীরে কালসিটে দাগ ফেলে দিয়েছেন। শাহিনার মা একজন গৃহকর্মী। তিনি বলেন, ‘আমার মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার সময় সাধ্যমতো উপহার দিয়েছি। তিন বছর পর এখন সে আবারও যৌতুক চায়। একলাখ টাকা আমি কোথা থেকে পাবো! আর পেলেই বা কী, তাকে টাকা না দিলে আমার মেয়েকে এভাবে মেরে ছাল তুলে নেবে? আমি এর বিচার চাইব না।’
ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের কর্মকর্তারা জানান, যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার নারীরাই এখানে বেশি ভর্তি হন। কিন্তু সেসব কেস স্টাডি নিতে গিয়ে দেখা যায়, বিয়ের অনেক দিন হয়ে গেছে, সন্তানও জন্মেছে, অথচ এখন কিনা বিয়ের সময়কার যৌতুক চেয়ে নির্যাতন করা হচ্ছে। এছাড়া,সন্তানের জন্য কিছু করার কথা বলে মানসিক নির্যাতন ও পরে মারধর করার ঘটনা বেশি ঘটছে। এটা আরও শঙ্কার বিষয়। কারণ, বিয়ের আগের যৌতুক চাওয়ার সামাজিক প্রতিরোধ তৈরি হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ সাংসারিক জীবনের পর যৌতুক চাওয়া প্রতিরোধে নারীর অবস্থান কী হবে, তা নিয়ে সমাজে কোনও কাজ হয়নি।
