নগরবাসীকে রাজধানীর রাস্তায় নামলেই প্রায় যানজটে পড়তে হয়। মাঝে মধ্যে তা তীব্র আকার ধারণ করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মসূচির কারণে। আর এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় কর্মজীবী মানুষকে। গতকাল রাজধানীজুড়ে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করে। আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে নেতাকর্মীদের দীর্ঘ আনন্দ র্যালিতে স্থবির হয়ে পড়ে রাজধানীর বহু ব্যস্ততম সড়ক। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঠাঁই রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে হাজার হাজার গণপরিবহনকে। গতকাল যথাসময়ে অফিস ও কাজে যাওয়া বা ফেরা হয়নি কর্মজীবীদের। রাস্তায় একের পর এক কর্মঘণ্টা অপচয়ের দুঃসহ ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে যাত্রীদের।
ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল সংগঠনটির প্রধান কর্মসূচি ছিল আনন্দ র্যালি। এ উপলক্ষে সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কর্মসূচিতে যোগ দিতে শুরু করেন। পায়ে হেঁটে ও পিকআপ-ট্রাক-বাসসহ বিভিন্ন গাড়িতে চড়ে মিছিল ও স্লোগান নিয়ে তারা আসতে থাকেন। বহু গাড়িতে ছিল উচ্চস্বরে গান-বাজনা। পদযাত্রায় ছিল মিছিল-স্লোগান। ফলে সকাল থেকে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার ছোট ও মাঝারি সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে যানজটের সৃষ্টি হয়। সকালের দিকে প্রধান প্রধান সড়কগুলোতেও বাড়ে যানজট। তবে যানজট ভয়াবহ আকার ধারণ করে আনন্দ র্যালি বের হওয়ার পর।
গতকাল সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত রাজধানীর কয়েকটি সড়কে কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট চোখে পড়েছে। কাজী নজরুল ইসলাম সড়ক, এয়ারপোর্ট সড়ক, মিরপুর সড়ক একাধিক দফায় দীর্ঘ যানজটের কবলে পড়ে। সকালে কাওরান বাজার থেকে মিরপুর-১০ এ যেতে এই প্রতিবেদককে অন্তত এক ঘণ্টা যানজটে কাটাতে হয়। আবার দুপুরের দিকে ওই স্থান থেকে ফিরতেও প্রায় দু’ঘণ্টার মতো যানজটে পড়তে হয়। গুলিস্তান যাওয়ার ইচ্ছা ত্যাগ করে অবশেষে বিকাল ৪টার দিকে কাওরান বাজার পৌঁছে গাড়ি থেকে নেমে পড়তে বাধ্য হতে হয়। উভয় সময় গাড়িতে থাকা যাত্রীদের ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। এক যাত্রী বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন, ‘অন্যদের কষ্ট দিয়ে কিসের আনন্দ। আনন্দ হতে হবে সবাইকে খুশি করার মধ্য দিয়ে। কারও স্বাভাবিক জীবন বা খুশি কেড়ে নিয়ে নয়। মিছিল-স্লোগান, গান-বাজনা বা র্যালি নিয়ে কোনো কথা নেই। কিন্তু যানজট যাতে না হয় সেভাবেই তো কর্মসূচি পালন করা উচিত ছিল।’ তার এ কথায় সায় দেন অপর কয়েক যাত্রী। এক পর্যায়ে ক্ষুব্ধ হয়ে মধ্যবয়সী এক যাত্রী আর অফিসে না গিয়ে গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটে ফের বাসার পথ ধরেন।
এদিকে কাওরান বাজারের এক প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী মোহাম্মদ আলী প্রতিদিন সকালে সাইকেল নিয়ে গাবতলী থেকে অফিসে আসেন। সময় লাগে আধঘণ্টার মতো। কিন্তু গতকাল তিনি যানজটের কারণে রাস্তা ও ফুটপাট ধরে আসতে তার সময় লাগে একঘণ্টা। তিনি বলেন, ‘যানজট পরিহার করে চলার জন্য সাইকেল ব্যবহার করি। কিন্তু গতকাল তাও সম্ভব হয়নি। দ্বিগুণ সময় লেগেছে। আর আসার পথে আমি অন্তত ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট দেখে এলাম।’
মিরপুরের রূপনগর থেকে পল্টন আসা অপর এক যাত্রী বলেন, ‘সকাল ১০টা ২০ মিনিটে যাত্রা করে পল্টন পৌঁছি বিকাল ৩টা ৪৫ মিনিটে। এক-দেড় ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে লেগে গেল সোয়া ৫ ঘণ্টার মতো।’
| M | T | W | T | F | S | S |
|---|---|---|---|---|---|---|
| 1 | 2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 |
| 8 | 9 | 10 | 11 | 12 | 13 | 14 |
| 15 | 16 | 17 | 18 | 19 | 20 | 21 |
| 22 | 23 | 24 | 25 | 26 | 27 | 28 |
| 29 | 30 | 31 | ||||
